আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
যুক্তরাষ্ট্র যদি ইরানের সঙ্গে কূটনৈতিক আলোচনা আবারও শুরু করতে চায়, তবে তাদের ইরানের ওপর নতুন করে হামলার চিন্তা বাদ দিতে হবে— এমন সতর্ক বার্তা দিয়েছেন ইরানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাজিদ তাখত-রাভানছি।
সোমবার (৩০ জুন) বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তাখত-রাভানছি জানান, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে আলোচনায় ফেরার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
তবে আলোচনার সময়ে নতুন করে হামলার বিষয়ে এখনো যুক্তরাষ্ট্র তাদের অবস্থান পরিষ্কার করেনি বলে অভিযোগ করেন তিনি।
তিনি বলেন, “যদি কেউ বলে যে, সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি থাকবে না, শূন্য মাত্রায় থাকবে, আর তাতে একমত না হলে তোমার ওপর বোমা ফেলব— তবে সেটা জঙ্গলের আইন ছাড়া আর কিছু নয়।”
গত ১৩ জুন ইসরায়েলের ইরানে সামরিক অভিযান শুরু হয়। এর দুই দিন পর ওমানের মাস্কটে ইরান-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ষষ্ঠ দফা আলোচনা হওয়ার কথা থাকলেও, যুক্তরাষ্ট্র পরে ইরানের পরমাণু স্থাপনায় হামলা চালায়।
ওই হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের বি-২ বোমারু বিমান ফোর্দো, নাতাঞ্জ ও ইসফাহান পারমাণবিক কেন্দ্রে বোমা ফেলে।
তবে এসব হামলায় ইরানের পরমাণু কর্মসূচি কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তা নিয়ে দ্বিধা রয়েছে। ট্রাম্প দাবি করেছেন, ইরানের পরমাণু স্থাপনা ধ্বংস হয়েছে, কিন্তু আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রসি জানিয়েছেন, ক্ষতি বড় হলেও সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়নি এবং ইরান কয়েক মাসের মধ্যেই আবারও ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ শুরু করতে পারবে।
তাখত-রাভানছি বলেন, “আমাদের পরমাণু কর্মসূচির উদ্দেশ্য শান্তিপূর্ণ। কোনো বোমা বানানোর চেষ্টা আমরা করছি না। যারা সমালোচনা করছে, বরং তাদের উচিত যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের আগ্রাসন নিয়ে কথা বলা।”
তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতাকারীরা জানিয়েছে, দেশটি ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনিকে সরিয়ে দিতে চায় না, বরং কূটনৈতিক সমাধান খুঁজছে। তবে তিনি সতর্ক করেন, আলোচনা চলাকালে হামলা হলে তার কঠোর জবাব দেয়া হবে।
তাখত-রাভানছি বলেন, “আমরা যুদ্ধ চাই না। আমরা চাই আলোচনা ও কূটনীতির মাধ্যমে সমাধান। তবে আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে এবং আগের মতো বিস্মিত হওয়া যাবে না।”