সউদ আব্দুল্লাহ, কালাই (জয়পুরহাট) :
জয়পুরহাট জেলার কালাই উপজেলার চরবাখরা গ্রামে সংঘটিত ভয়াবহ ডাকাতির ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে মামলার অন্যতম আসামি মো. মেহেদী হাসান ওরফে চিকন আলীকে। রবিবার (১৫ জুন) দুপুরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জয়পুরহাট জেলা পুলিশ সুপার মুহম্মদ আবদুল ওয়াহাব জানান, গ্রেফতারের পর সে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
গ্রেফতারকৃত মেহেদী হাসান জয়পুরহাট জেলার ক্ষেতলাল উপজেলার দক্ষিণ বস্তা আলমপুর গ্রামের বাসিন্দা রাশেদুল ইসলামের ছেলে।
প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের ২৫ অক্টোবর রাত ১২টা ৪৫ মিনিটের দিকে চরবাখরা গ্রামের কছিমদ্দিন ফকিরের বাড়িতে সংঘবদ্ধ ডাকাত দল টয়লেটের ছাদ ভেঙে প্রবেশ করে। ডাকাতরা প্রথমেই বাড়ির লোকজনকে বেঁধে ফেলে শুরু করে নির্মম নির্যাতন। আহত হন বৃদ্ধা রোকেয়া বেগম (৬৫), বড় ছেলে গোলাম মোস্তফা (৪২), নাতনি মিম্মা (১৫) ও পুত্রবধূ মালা বেগম (২৫)। তাদের মধ্যে তিনজনকে কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং মালা বেগমকে জয়পুরহাট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ডাকাতরা বাড়ি থেকে লুট করে নেয় প্রায় ১১ লাখ ৩৬ হাজার টাকার মালামাল, যার মধ্যে রয়েছে ৪টি বিদেশি জাতের গরু, ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা নগদ অর্থ ও স্বর্ণালঙ্কারসহ মূল্যবান সামগ্রী। প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে চলে তাণ্ডব।
ডাকাতির সময় বাড়ির ছোট ছেলে এরশাদ হোসেন বাইরে গভীর নলকূপ পাহারায় ছিলেন। তিনি জানান, “ডাকাতরা আমার স্ত্রীকেও নির্যাতন করেছে এবং পরিবারের সবাইকে নির্মমভাবে পিটিয়েছে।”
এলাকাবাসী এমন নৃশংস ডাকাতির ঘটনায় চরম আতঙ্কে রয়েছেন। প্রবীণ বাসিন্দা খলিলুর রহমান বলেন, “এত বড় সাহসিক ডাকাতি এর আগে এই গ্রামে কেউ দেখেনি। এটা কল্পনাতেও আসেনি।”
ডাকাতির ঘটনার পরপরই কালাই থানায় মামলা দায়ের করেন কছিমদ্দিন ফকির। প্রযুক্তিগত সহায়তা ও গোয়েন্দা তৎপরতার মাধ্যমে জয়পুরহাট জেলা ডিবি পুলিশ গত ১৩ জুন আক্কেলপুর থেকে মেহেদী হাসানকে গ্রেফতার করে।
পুলিশ সুপার বলেন, “মেহেদীর স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে মামলার অন্য আসামিদের গ্রেফতার এবং লুণ্ঠিত মালামাল উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।”