সফিকুল ইসলাম শিল্পী, রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) থেকে:
ঈদুল আজহার কোরবানির অন্যতম অনুসঙ্গ পশুর চামড়ার বাজার এবার যেন রূপ নিয়েছে হতাশার চিত্রনাট্যে। ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল পৌর শহরের মডেল স্কুলসংলগ্ন পাকা সড়কে গড়ে ওঠা অস্থায়ী চামড়ার হাট শনিবার (৭ জুন) পরিণত হয় মৌসুমি ব্যবসায়ীদের নিরাশার কেন্দ্রস্থলে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বাজারে চাহিদার অভাবে অনেকে খাসির চামড়া বিক্রি না করে ফেরত নিয়ে গেছেন। কেউ কেউ হতাশ হয়ে বলেছেন—“গর্ত করে ফেলেই দেব!” কারণ, খাসির চামড়ার দাম দাঁড়িয়েছে মাত্র ১০ টাকা। গরুর চামড়া বিক্রি হয়েছে সর্বোচ্চ ৩০০ থেকে ৬০০ টাকায়, আর ছোট গরুর চামড়া মাত্র ১০০ টাকায়। ছাগলের চামড়া বিক্রি করতে হয়েছে ৩০ টাকায় পর্যন্ত।
সরকারি দামে যেখানে প্রতি বর্গফুট খাসির চামড়া ২২–২৭ টাকা, গরুর চামড়া ১১৫০ টাকা এবং বকরির চামড়া ২০–২২ টাকা নির্ধারিত, সেখানে রাণীশংকৈলের বাজারের বাস্তবতা ছিল সম্পূর্ণ বিপরীত।
প্রবীণ ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম বলেন, “আগে কোরবানির পর এই চামড়া দিয়েই দুই-তিন দিনের খরচ উঠতো, এখন কেউ নিতে চায় না।”
মৌসুমি ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে এক ধরনের মধ্যস্বত্বভোগী সিন্ডিকেট। স্থানীয়ভাবে চামড়া সংরক্ষণের কোনো ব্যবস্থা নেই, আর কেন্দ্রীয় বাজারে চাহিদার ঘাটতি পরিস্থিতিকে আরও ঘনীভূত করেছে। এই অবস্থায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন দরিদ্র ও অসচ্ছল পরিবারগুলো, যারা কোরবানির চামড়ার অল্পদামে কিছু আর্থিক সহায়তা পাওয়ার আশায় ছিলেন।
এক ব্যবসায়ী হতাশা প্রকাশ করে বলেন, “ঈদে হাসি আনবে বলে বসেছিলাম, এখন দেখি মুখেই হাসি নেই।”
মৌসুমি ব্যবসায়ীরা দ্রুত হস্তক্ষেপের জন্য স্থানীয় প্রশাসন ও প্রাণিসম্পদ দপ্তরের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।