মৌলভীবাজারের বড়লেখায় দুটি হিন্দু মন্দিরে চুরির ঘটনায় জড়িত ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে পিতলের ঘট, কাসার থালা-বাটি, প্রদীপ, পুষ্প থালি, ঘন্টাসহ মন্দিরের নানা মূল্যবান পূজার সামগ্রী। সেই সঙ্গে চুরির কাজে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতিও উদ্ধার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো: দোহালিয়ার রুহেল আহমদ (৩০), মুছেলগুলের আবু তায়েব আহমদ সাজু (২৮), বর্ণি নোয়াগাঁওয়ের নুর হোসেন (৪০), কুমারশাইলের জাকির হোসেন (৩১), মাধবগুলের শাহ আলী (৪২) এবং মিরপুর দক্ষিণ মৌলভীবাজারের আলাল মিয়া (৩৮)।
প্রথম চুরির ঘটনা ঘটে ১২ জুন রাতে, বড়লেখা পৌরসভার পাখিয়ালা এলাকার শ্রী শ্রী উদ্ভব ঠাকুর আখড়ায়। রাতে মন্দিরের তালা ভেঙে প্রবেশ করে চোরেরা পূজার সামগ্রী নিয়ে যায়। পরদিন থানায় মামলা করেন মন্দির কমিটির সভাপতি।
পরবর্তী চুরি ঘটে ২৬ জুন রাতে, দক্ষিণভাগের সার্বজনীন দেবস্থলী মন্দিরে। একই ধরনের পদ্ধতিতে চুরির অভিযোগে ২৭ জুন দায়ের হয় আরেকটি মামলা।
বড়লেখা থানার তদন্ত কর্মকর্তা হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে এসআই সুব্রত চন্দ্র দাস, এসআই নিউটন দত্ত ও এএসআই মফিজুল ইসলামের সমন্বয়ে একটি বিশেষ টিম গঠন করে অভিযান চালানো হয়। সিসিটিভি ফুটেজ ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ২৫ জুন রাতে দক্ষিণভাগ রেললাইন এলাকা থেকে প্রথমে গ্রেপ্তার করা হয় রুহেল আহমদকে। তার স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে পরে বাকিদেরও গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী মাধবগুল এলাকার এক ভাঙারির দোকান থেকে উদ্ধার করা হয় চুরি যাওয়া ১১টি পিতলের ঘট, ৫টি কাসার বাটি, ৬টি কাসার থালা, ২টি ঘন্টা, ২টি পুষ্প থালি, প্রদীপ, কলসি, কোষা ও অন্যান্য সামগ্রী। পাশাপাশি নুর হোসেনের বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয় চুরিতে ব্যবহৃত কাটার, ব্লেড, হাতুড়ি, রেঞ্জ, রডের টুকরা ও একটি লাল জগ।
বড়লেখা থানার ওসি মাহবুবুর রহমান মোল্লা বলেন, “আটককৃতরা চুরির ঘটনায় সরাসরি জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। উদ্ধার করা হয়েছে চুরি যাওয়া সামগ্রী ও ব্যবহৃত সরঞ্জাম। তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।”
সম্প্রতি ধর্মীয় স্থানে চুরির ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক বাড়ছিল। বড়লেখা পুলিশের এই দ্রুত পদক্ষেপে আবারও সাধারণ মানুষের মধ্যে আস্থা ফিরে এসেছে।