রাজু রহমান, যশোর জেলা প্রতিনিধি:
যশোরের বেনাপোল পোর্ট থানার রঘুনাথপুর গ্রামে ঘটে গেছে এক মর্মান্তিক ও রহস্যঘেরা ঘটনা। শুক্রবার (১৩ জুন) রাতে একই পরিবারের স্বামী-স্ত্রীর দুটি মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ—একজন গাছে ঝুলন্ত, অপরজন নিথর অবস্থায় পড়ে আছেন বাড়ির পাশের মাঠে।
নিহতরা হলেন মনিরুজ্জামান (৫২) এবং তার স্ত্রী রেহেনা খাতুন (৪৫)। পরিবার ও এলাকাবাসীর মধ্যেই তৈরি হয়েছে বিভ্রান্তি—এটা আত্মহত্যা, না কি পরিকল্পিত হত্যা?
কীভাবে পাওয়া যায় মরদেহ?
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রাতের কোনো এক সময় মনিরুজ্জামান বাড়ির উঠানে একটি আমড়াগাছে গলায় ফাঁস দেন। সকালে বিষয়টি নজরে আসলে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেন। পরে পুলিশ এসে গাছ থেকে তার লাশ নামায়। একইসাথে তার স্ত্রীর মরদেহ বাড়ির পাশের একটি মাঠে পড়ে থাকতে দেখে উদ্ধার করে।
কী বলছেন পরিবার ও প্রতিবেশীরা?
স্থানীয় লোকজনের অনেকে বলছেন, সংসারে অভাব-অনটনের কারণে তাদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে কলহ চলছিল। এই কলহ থেকেই হয়তো এমন ভয়ানক পরিণতি ঘটেছে। তাদের ধারণা—মনিরুজ্জামান প্রথমে স্ত্রীকে হত্যা করে পরে আত্মহত্যা করেন।
অন্যদিকে নিহত দম্পতির সন্তানরা এই ধারণা পুরোপুরি প্রত্যাখ্যান করে বলেন,
“আমাদের বাবা-মা আত্মহত্যা করেননি। তাদের পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।”
তাদের দাবি, ঘটনাটি গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ।
পুলিশের বক্তব্য
বেনাপোল পোর্ট থানার ডিউটি অফিসার এসআই রাশেদুল ইসলাম জানান,
“গাছের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় স্বামীর মরদেহ এবং মাঠ থেকে স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।”
থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রাসেল মিয়া বলেন,
“এটি আত্মহত্যা না হত্যা—তা এখনই নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পরই নিশ্চিত কিছু বলা যাবে। তবুও আমরা বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছি।”
তদন্তের অপেক্ষায় এলাকা
এ ঘটনায় পুরো রঘুনাথপুর এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় মানুষ, পরিবার ও প্রশাসন সবাই এখন তাকিয়ে আছে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট ও পুলিশের চূড়ান্ত তদন্তের দিকে।