বাংলাদেশে এমন এক বিতর্কিত তারকা রয়েছেন, যিনি গানবাজনার থেকে বেশি চর্চায় থাকেন ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে। গায়ক মাইনুল আহসান নোবেল হলেন সেই তারকা।
নারী নির্যাতনের মামলায় বর্তমানে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি নোবেল ঈদুল আজহার দিন (৭ জুন) অংশ নেন এক বিশেষ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে। কারা কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে বিকাল সাড়ে ৩টায় বন্দিশালার মাঠে আয়োজিত এই আয়োজনে মঞ্চে উঠে গেয়ে ওঠেন তিনি। পরিবেশন করেন নগর বাউল জেমসের কালজয়ী গান ‘জেল থেকে বলছি’। সেই সঙ্গে ‘অভিনয়’, ‘ভিগি ভিগি’, ‘সেই তুমি কেন এত অচেনা হলে’সহ নিজের জনপ্রিয় গানগুলোও গেয়ে শোনান উপস্থিত বন্দিদের।
গান শুনে আবেগে আপ্লুত হন অন্যান্য বন্দিরা। গানে গানে সৃষ্টি হয় এক ব্যতিক্রমী ঈদ উৎসব—যেখানে ছিল না বাহারি পোশাক কিংবা উপচে পড়া ভোজ, কিন্তু ছিল সংগীতের ছোঁয়া ও একবিন্দু ‘আশা’।
এই পরিস্থিতি মনে করিয়ে দেয় ১৯৯৪ সালের সিনেমা ‘দ্য শশাঙ্ক রিডেম্পশন’-এর একটি বিখ্যাত দৃশ্য, যেখানে বন্দি অ্যান্ডি তার বন্ধুদের জন্য জেলের ছাদে ঠাণ্ডা বিয়ার এনে দেন, শুধু একফোঁটা আনন্দের জন্য। বাস্তবে যেমন জেলে বিয়ার খাওয়া সম্ভব নয়, তেমনি ঈদের দিন কারাগারে সংগীতানুষ্ঠানও অস্বাভাবিক এক চিত্র। কিন্তু এমন ব্যতিক্রম মুহূর্তগুলোই হয়তো বন্দিদের মনোবল ধরে রাখে—বাঁচিয়ে রাখে আশা।
নোবেলের এই গানগুলো যেন ঈদের দিনে অন্য বন্দিদের জন্য ছিল এক ধরনের মানসিক মুক্তির সুযোগ, যেন বলা যায়—‘জেল থেকেও মানুষ আশাবাদী হতে পারে।’ তবে, নোবেল নিজে এই বন্দিত্বকে কীভাবে নেবেন, তা সময়ই বলে দেবে। তার ভক্তরা চান, তিনি নিজেকে সংশোধন করে ফিরে আসুন তার মূল পরিচয়ে—সংগীতশিল্পী হিসেবে।
এদিকে, নোবেলকে গ্রেফতারের বিষয়ে থানার সূত্র জানায়, সামাজিক মাধ্যমে একটি মারধরের ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর ভুক্তভোগীর পরিবার ৯৯৯-এ কল করে। এরপর ১৯ মে রাত সাড়ে ৯টায় ডেমরা থানা পুলিশ ভিকটিমকে উদ্ধার করে এবং তদন্তে নোবেলের সংশ্লিষ্টতা নিশ্চিত হওয়ার পর তাকে গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনায় থানায় নারী নির্যাতন আইনে মামলা হয় এবং চলছে তদন্ত।