জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (এনইসি) আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) অনুমোদন করেছে। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা ও এনইসি চেয়ারপার্সন অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ জানান, এডিপির মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ১ লাখ ৪৪ হাজার কোটি টাকা এবং প্রকল্প ঋণ ও অনুদান হিসেবে ৮৬ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হবে। এছাড়া সংস্থাগুলোর নিজস্ব তহবিলসহ মোট এডিপির পরিমাণ দাঁড়াবে ২ লাখ ৩৮ হাজার ৫৯৯ কোটি ৭১ লাখ টাকা।
বৈঠকে জানানো হয়, এবারের এডিপির মূল লক্ষ্য হলো অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, বাজেট শৃঙ্খলা নিশ্চিত করা এবং বাজেটকে টেকসই রাখা। এক্ষেত্রে অপ্রয়োজনীয় ব্যয় না বাড়িয়ে দীর্ঘমেয়াদি চাপ এড়ানোর কৌশল নেওয়া হয়েছে।
নতুন এডিপিতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ রাখা হয়েছে পরিবহন ও যোগাযোগ খাতে—৫৮ হাজার ৯৭৩ কোটি টাকা। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত: ৩২,৩৯২ কোটি টাকা, শিক্ষা খাত: ২৮,৫৫৭ কোটি টাকা, গৃহায়ন ও নগর সুবিধা: ২২,৭৭৬ কোটি টাকা, স্বাস্থ্য খাত: ১৮,১৪৮ কোটি টাকা। এই পাঁচটি খাতেই বরাদ্দের প্রায় ৭০ শতাংশ ব্যয় করা হবে।
সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ পেয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগ – ৩৬,০৯৯ কোটি টাকা। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ – ৩২,৩৩০ কোটি, বিদ্যুৎ বিভাগ – ২০,২৮৪ কোটি, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ – ১৩,৬২৫ কোটি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় – ১২,১৫৫ কোটি, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ – ১১,৬১৭ কোটি, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় – ১১,৩৯৮ কোটি, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় – ৯,৩৮৮ কোটি, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়৮,৪৯০ কোটি, রেলপথ মন্ত্রণালয় – ৭,৭১৫ কোটি।
নতুন এডিপিতে মোট ১,১৭১টি প্রকল্প রাখা হয়েছে। ৯৯৩টি বিনিয়োগ প্রকল্প ১৯টি সম্ভাব্যতা যাচাই প্রকল্প ৯৯টি কারিগরি সহায়তা প্রকল্প ৬০টি সংস্থার নিজস্ব অর্থায়নে প্রকল্প
এছাড়াও, ৭৯টি প্রকল্প পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (PPP) পদ্ধতিতে ২২৮টি জলবায়ু ট্রাস্ট ফান্ডের আওতায় ২৫৮টি প্রকল্প বাধ্যতামূলকভাবে সমাপ্তির লক্ষ্যে অন্তর্ভুক্ত।
এ বছর মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর প্রকল্প ছাড়া নতুন করে কোনো মেগা প্রকল্প নেওয়া হয়নি। এর আগে নেওয়া পায়রা বন্দর, কর্ণফুলী টানেল ও বিআরটি প্রকল্পের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা।
ড. মাহমুদ আরও জানান, ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তী সরকার বিভিন্ন প্রকল্প যাচাই করে তহবিলের অপচয় রোধে ব্যবস্থা নেওয়ায় এ বছর বাস্তবায়নের হার কিছুটা কম হতে পারে।