মুহ. মিজানুর রহমান বাদল,মানিকগঞ্জ:
মসলা জাতীয় ফসল ধনিয়া বাঙালির রসনা বিলাসে প্রাচীনকাল থেকে ব্যবহার হয়ে আসছে। পাতা ও ধনিয়া গুঁড়া রান্না করা তরকারির স্বাদ বৃদ্ধি করে। ওষুধের কাঁচামাল হিসেবেও ধনিয়া ব্যবহার হয়।
এঁটেল-দোআঁশ মাটি ধনিয়া চাষের জন্য বিশেষ উপযোগী।বিশেষ কোন যত্ন ছাড়াই এর সর্বোচ্চ ফলন হয়। বিঘা প্রতি মাত্র ৩/৪ হাজার টাকা খরচ করে ২৫/৩০ হাজার টাকার ফসল বিক্রি করা যায়। অল্প পুঁজিতে অধিক লাভ হওয়ায় মানিকগঞ্জের সিংগাইরে প্রতিবছরই ধনিয়া চাষের পরিধি বাড়ছে। এ উপজেলায় বিভিন্ন জাতে ধনিয়ার চাষ হয়ে থাকে। বারি ধনিয়া-১,এলবি-৬০ ও ৬৫ এবং সুগন্ধা জাতের উচ্চ ফলনশীল জাত প্রায় সারা বছর চাষ করা যায়।
পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ ধনিয়ায় রয়েছে খনিজ পদার্থ,আঁশ,খাদ্যশক্তি,আমিষ, ক্যালসিয়াম,আয়রন, ক্যাবি-১, ভিটামিন বি-২, ভিটামিন-সি ও শর্করা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার জামির্ত্তা ইউনিয়নের হাতনী চক, চান্দহর ইউনিয়নের চালিতাপাড়া, রিফাইতপুর, ওয়াইজনগর,সায়েস্তা ইউনিয়নের কালিন্দী, মুসলেমাবাদ, চারিগ্রাম ইউনিয়নের ঘাইসারটেক, ফুটিল, বড়াটিয়া, দাসেরহাটি,আত্রাইল বিলসহ বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে ধনিয়া চাষ হয়েছে।
শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সকালে হাতনী গ্রামের কৃষক বোরহান মিয়া ও ইউনুস আলী জানান, আগে আমরা সরিষা চাষ করতাম। এতে খরচ বেশি, লাভ কম। তাই গত দু’বছর ধরে ধনিয়া চাষ করছি। উৎপাদন খরচ বাদে বিঘা প্রতি ২০-২৫ হাজার টাকা লাভ হয়। যা অন্য ফসল আবাদ করে পাওয়া যায় না। পার্শ্বর্তী ওয়াইজনগর গ্রামের কৃষক মোন্তাজ মিয়া বলেন, ১বিঘা জমিতে ধনিয়া আবাদ করে পাতা বিক্রি করেছি ৩৫ হাজার টাকা। খরচ বাদে প্রায় ৩০ হাজার টাকা লাভ হয়েছে।
এ ব্যাপরে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো.হাবিবুল বাশার চৌধুরী জানান, চলতি বছর এ উপজেলায় ৪’শ হেক্টর বা ৩ হাজার বিঘা জমিতে ধনিয়া চাষ হয়েছে। বিঘা প্রতি পাতা উৎপাদন ১২-১৫ মণ আর পাকা ধনিয়া ৫ থেকে ৭ মণ। সামান্য পরিচর্যায় এ ফসলটি থেকে চাষিরা অধিক লাভ পেয়ে থাকেন বলেও তিনি জানান।