ফরিদপুরে ভাঙ্গা উপজেলায় ভুয়া কাগজপত্র জমা দিয়ে প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতি
ফরিদপুরের ভাঙ্গায় ভুয়া কাগজপত্র জমা দিয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক পদে পদন্নোতির অভিযোগ উঠেছে। ভাঙ্গার পাতরাইল মধ্যপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও সাদীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দুই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠে। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মুন্সি রুহুল আসলাম স্বাক্ষরিত পৃথক দুটি নোটিশে তাদের কৈফিয়ত চেয়েছেন। নোটিশপ্রাপ্ত দুই শিক্ষক হলেন- ভাঙ্গার ১০৮ নম্বর পাতরাইল মধ্যপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের হোসেনারা আক্তার এবং ২৭ নম্বর সাদীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাজমা বেগম।
জানা যায়, ২০১২ সালের ২৫ অক্টোবর বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী একই বছরের ১৭ ডিসেম্বর নতুনসৃষ্ট প্রধান শিক্ষক পদে পদন্নোতি গ্রহণ করেন হোসেনারা আক্তার। কিন্তু প্রধান শিক্ষক পদে পদন্নোতির জন্য এইচএসসি ও সিইনএড পাস থাকলেও হোসেনারা আক্তারের উপযুক্ত যোগ্যতা সে সময় ছিল না। তিনি ভুয়া কাগজপত্রের মাধ্যমে তথ্য গোপন করে প্রধান শিক্ষক পদে পদন্নোতি নেন।
এ বিষয়ে হোসেনারা আক্তারকে গত ২০২০ সালের ২৯ ডিসেম্বর উপজেলা শিক্ষা অফিস একটি নোটিশ দেয়। নোটিশে পদোন্নতি সংক্রান্ত কাগজপত্র (ম্যানেজিং কমিটির রেজুলেশন, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কমিটির রেজুলেশন, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার প্রতিবেদন এবং জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের অনুমোদনের কপিসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র) তিন কার্য দিবসের মধ্যে জমা দিতে বলা হয়।
কয়েকজন স্থানীয় অভিযোগ করেন, কোনো নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করেই উপজেলা শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও বিদ্যালয়টির ম্যানেজিং কমিটির অসাধু কতিপয় ব্যক্তির যোগসাজশে টাকার বিনিময়ে নাজমা বেগম ও হোসেনারা আক্তারকে প্রধান শিক্ষক পদে পদন্নোতি দিয়েছেন। হোসেনারা প্রধান শিক্ষক পদে পদন্নোতি পেয়েছেন ২০১২ সালের ১৭ ডিসেম্বর। অথচ তার এইচএসসি পাসের সনদটি প্রকাশিত হয় ১২ ডিসেম্বর ২০১৩ সালে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষিকা হোসেনারা আক্তার সমকালকে জানান, তিনি নোটিশ পেয়েছিলেন এবং কর্তৃপক্ষকে তিনি যথাযথ জবাবও দিয়েছেন। সাদীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাজমা বেগম জানান, তিনি ১৯৯৫ সালে তৎকলীন ম্যানেজিং কমিটির মাধ্যমে প্রধান শিক্ষক পদে পদন্নোতি পেয়েছেন।
ভাঙ্গা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মুন্সী রুহুল আসলাম জানান, পাতরাইল মধ্যপাড়া প্রাথমিক স্কুলটি ওই সময় রেজিস্ট্রি স্কুল ছিল। আর রেজিস্ট্রি স্কুল ম্যানেজিং কমিটি হোসেনারাকে প্রমোশন দিয়েছিল। আর ওইভাবেই জাতীয়করণ হয়েছে। তাদেরকে কৈফিয়ত তলবের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, পরবর্তীতে হোসেনারা ও নাজমা বেগমকে নোটিশ দেওয়া হয়। সকল প্রকার কাগজপত্র কর্তৃপক্ষের নিকট জমা দিয়েছেন তারা।
ফরিদপুর জেলা শিক্ষা অফিসার তৌহিদুল ইসলাম জানান, তিনি বিষয়টি জানেন না। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আজিম উদ্দিন জানান, বিষয়টি তিনি খতিয়ে দেখবেন ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনা করবেন।