শিরোনাম
শেরপুরে ঝিনাইগাতিতে অপহরণের পর এখনও উদ্ধার হয়নি অপহৃত মাদ্রাসা ছাত্রী   » «    মেঘালয়ে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি চোরাকারবারি নিহত   » «    কুষ্টিয়ায় কৃষি যন্ত্র বিতরণে দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছে দুদক   » «    চট্টগ্রাম আদালত থেকে গায়েব হওয়া নথি বিক্রি হয়েছিল কেজি দরে   » «    ছাত্র আন্দোলন দমাতে ১০ কোটি টাকা অনুদান ও অস্ত্র যোগান দেয় ফজলে করিম   » «   

সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ নিয়ে ফের অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ

সিলেট:

সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ নিয়ে ফের অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। নিয়োগ বানিজ্যকে ঘিরে বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন  ডাঃ নাজমুল ইসলাম।  ডিন হিসেবে নবনিযুক্ত ডাঃ নাজমুল ইসলাম যোগদানের পর স্থানীয় মহলে এই নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে শুরু হয়েছে গুঞ্জন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, স্বৈরাচার ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকারের আমলে ঘুষ বাণিজ্যের বিনিময়ে নিয়োগপ্রাপ্ত কথিত কিছু অসাধু কর্মকর্তাদের পুনরায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরিয়ে আনার জোর লোবিং চলছে। জুলাই আগস্ট ছাত্র-জনতা গণঅভ্যুত্থানের পরেও থামছেনা ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী দোসরদের দৌরাত্ব। এই সিন্ডিকেট প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে সহযোগিতা করছেন ডাঃ নাজমুল ইসলাম। সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র এর সত্যতা নিশ্চিত করেছে। তিনি ইতিমধ্যে কৌশলে খুনি হাসিনার নিয়োগপ্রাপ্ত উপাচার্য এএইচএম এনায়েত হোসেনের আশীর্বাদপুষ্ট হয়ে ডিন হিসেবে ক্ষমতার আসন দখলে নিয়েছেন।

জুলাই-আগষ্ট বিপ্লবের পর নেতৃত্বাধীন খুনি ফ্যাসিস্ট সরকার বিদায় নিলেও সেই সময়ের আওয়ামী প্রেতাত্বারা এখনো ঘোরাফেরা করছে। অভিযোগ ওঠেছে ডাঃ নাজমুল ইসলাম আর্থিক সুবিধা ও রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে গোপনে সমঝোতার মাধ্যমে তাদের নিয়োগে সক্রিয় ভূমিকা পালন করার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এতে বিগত শাসনামলের ক্ষমতাসীনদের ঘনিষ্ঠ, আওয়ামী সমর্থিত গোষ্ঠিরা আবারও নতুন পরিচয়ে প্রতিষ্ঠানে প্রবেশে সুযোগ পেয়ে যাচ্ছে ।

জানা যায়,  যাদের নতুন করে নিয়োগ দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা রয়েছে।  মামলায় সাবেক উপাচার্য মোর্শেদ আহমেদ চৌধুরী, সাবেক ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো. নঈমুল হক চৌধুরী, উপপরিচালক (পরিবহন ও উন্নয়ন) ফাহিমা খানম চৌধুরী, সহকারী রেজিস্ট্রার অঞ্জন দেবনাথ, সহকারী কলেজ পরিদর্শক মাইদুল ইসলাম চৌধুরী, সহকারী পরিচালক (পরিবহন ও উন্নয়ন) মো. গোলাম সরোয়ার, সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বিলাল আহমদ চৌধুরী, সহকারী পরিচালক (বাজেট) শমসের রাসেল, জনসংযোগ কর্মকর্তা গাজী মো. ফারাজসহ ৫৮ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার সংক্ষিপ্ত এজাহার সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত ব্যক্তিরা পারস্পরিক যোগসাজশে ব্যক্তিগতভাবে বা অন্যদের লাভবান করার উদ্দেশ্যে ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিদ্যমান বিধিবিধান ও আইনকানুন যথাযথভাবে অনুসরণ না করে অবৈধভাবে নিয়োগ দিয়ে বেতন-ভাতা বাবদ সরকারের ৫ কোটি ৫৪ লাখ ৫৬ হাজার ৪৯ টাকা আত্মসাৎ করে দন্ডবিধির ৪০৯/৪২০/১০৯ ধারাসহ ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।

এদিকে ডা. নাজমুল ইসলাম আওয়ামী লীগ আমলে নিয়োগ পাওয়া বর্তমান উপাচার্য এ এইচ এম এনায়েত হোসেনের সাথে সমঝোতা করে ডিন পদটি নিজের অনুকূলে নিয়েছেন বলে স্থানীয় মহলে গুঞ্জন সৃষ্টি হয়েছে। আন্দোলন-পরবর্তী সময়ে ক্ষমতা হারানো আওয়ামী লীগ-সমর্থিত সিন্ডিকেট গোষ্টিদের পুনর্বাসনের পরিকল্পনার নীল নকশা এগিয়ে নিচ্ছেন। রহস্যজনক হলেও সত্য যে, অদৃশ্য কারনে ড্যাব সিলেটের দায়িত্বে থাকা সাধারন সম্পাদক ডাঃ শাকিলও এ নিয়ে বেশ নিরব ভুমিকা পালন করছেন।
অপরদিকে ডা. নাজমুল ইসলাম কর্তৃক স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থলে শেখ হাসিনার পরিবারের নামে নামকরন করা বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় নাম ব্যবহার করা নিয়েও জনমনে ক্ষোভ বিরাজ করছে। সমালোচকদের মতে, এটি জুলাই বিপ্লবের শহীদদের স্মৃতির প্রতি চরম অবমাননা। সাধারণদের দাবি অনতিবিলম্বে ফ্যাসিস্ট আমলে ঘুষের মাধ্যমে নিয়োগ পাওয়া সকল কর্মকর্তা কর্মচারীদের নিয়োগ না দিয়ে নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে মেধাবীদের নিয়োগ দেয়া বাঞ্ছনীয়।

এবিষয়ে ডাঃ নাজমুলের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রথমেই ক্ষুব্ধ হয়ে প্রতিবেদককে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে বলেন, কি বলতেছেন এগুলো আপনি, কে আপনে, কিসের তদবির বাণিজ্য, আসেন তো আপনে আমার সামনা সামনে এসে কথা বলেন, কিসের তদবির, আপনে আমাকে চিনেন, আমার সর্ম্পকে জানেন, আমি একটা পেপারের সম্পাদক ছিলাম, আমার পেপারটা বন্ধ, আমার পত্রিকা ছিল সিলেট সুরমা, আপনে চিনেন, খুব বেশিদিন আগে বন্ধ হয়নি। আপনে যদি কিছু জানার থাকে সামনা সামনি এসে কথা বলুন, আমি তো ঘুষ-বাণিজ্যের কোন চিন্তাই করতে পারিনা। আমি আমার মতো করে কাজ করার জন্য সরকারি জব করিনি। এসময় তিনি বলেন বাংলাদেশের মানুষের প্রেক্ষাপটে ঘুষ-বাণিজ্য হলও কমন ওয়ার্ড। এগুলো কিছুই না। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আগের যারা দুর্নীতি দমন কমিশনের আওতায় ছিলেন বর্তমানে জিনিসটা এইরকম হবেনা। আবেদন চাওয়া হয়েছে, জমাও হয়েছে, স্ক্রুটিনি হচ্ছে,  স্ক্রুটিনি শেষ হবে তারপরে ভাইভা হবে, পরে মার্কস যোগ করে সবকিছু মিলে সাতজন কমিটির মেম্বার ভাইভা নিবেন নেওয়ার পরে আমরা একটা সুপারিশ করবো। এখানে স্বৈারাচারকে কোন কনসিডার করা যাবেনা। কিন্তু আপনে তো ন্যায় বিচার করতে হবে। আমি আপনাকে কথা দিতে পারি পদ্ধতির বাহিরে কিছু হবেনা।
অপরদিকে উপরোক্ত বিষয়ে জানতে উপাচার্য এএইচএম এনায়েত হোসেনের মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তার মুঠোফোন রিসিভ না হওয়ায় কোন বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। একই ভাবে ড্যাব সিলেটের দায়িত্বরত সাধারন সম্পাদক ডাঃ শাকিলের মুঠোফোনে আলাপের চেষ্টা করেও কোন বক্তব্য নেয়া যায়নি।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন
বিষয়: * সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর (ভিসি) অবরুদ্ধ সেনাবাহিনীর হস্থক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে
সাম্প্রতিক সংবাদ