কাকরাইল মসজিদে সকাল থেকে নিরাপত্তা জোরদার
রিপোর্টার :
তাবলিগ জামাতের মাওলানা সাদ ও জুবায়েরপন্থীদের মধ্যে আবারও উত্তেজনা বিরাজ করছে। আজ শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর কাকরাইলের মারকাজ মসজিদে প্রবেশ করে সেখানে অবস্থান নিয়েছেন সাদপন্থীরা। পূর্ব ঘোষণা দিয়েই তারা দখলে নিয়েছে মারকাজ মসজিদ। ফলে আজ ভোর থেকে সেখানে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়।
শুক্রবার সকাল ৮টার পরে মারকাজ মসজিদে প্রবেশ করেন সাদপন্থীরা। এসময় অসংখ্য লোকের জমায়েত হয়।
প্রসঙ্গত, তাবলিগ জামাতের বিবদমান দ্বন্দ্বের পর থেকে বিগত ৭ বছর যাবত প্রশাসনের সিদ্ধান্তে কাকরাইল মসজিদে অবস্থানের ক্ষেত্রে জুবায়েরপন্থীরা ৪ সপ্তাহ ও সাদপন্থীরা ২ সপ্তাহ করে পর্যায়ক্রমে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন। যদিও বিগত সরকারের এমন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করে আসছিল সাদপন্থীরা।
গত ৪ নভেম্বর সচিবালয়ে এক বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানান, ৫৮তম বিশ্ব ইজতেমা দুই দফায় আয়োজিত হবে। প্রথম দফার ইজতেমা শুরু হবে ৩১ জানুয়ারি এবং চলবে ১ ও ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। দ্বিতীয় দফার ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবে ৭, ৮ ও ৯ ফেব্রুয়ারি।
তবে ৫ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এক সমাবেশে জুবায়েরপন্থীদের সমর্থক ওলামা মাশায়েখ বাংলাদেশের সম্মেলন থেকে বলা হয়– দেশে ইজতেমা একবারই হবে, দুবার নয়। জুবায়েরপন্থীরা টঙ্গীতে ইজতেমার মাঠ ও কাকরাইল মসজিদে ১৫ নভেম্বর থেকে অবস্থান নেয়ার ঘোষণা দেয়ার পর থেকে বিষয়টি নিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।
মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে ওলামা মাশায়েখ বাংলাদেশ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে কাকরাইল মসজিদ ও টঙ্গীর ইজতেমা কেন্দ্রিক সাদপন্থীদের কোনোরকম সুযোগ-সুবিধা দেয়ার চেষ্টা করা হলে ২৪ ঘণ্টার নোটিশে রাজধানী ঢাকা অচল করে দেয়ার হুঁশিয়ারি দেয়া হয়।
বুধবার (১৩ নভেম্বর) পাল্টা সংবাদ সম্মেলনে সাদপন্থীরা জানান, কাকরাইল মসজিদের একটি অংশে এমনিতেই জুবায়েরপন্থীরা সারা বছর মাদরাসার নামে আলাদা অবস্থান নিয়ে থাকেন। সাদপন্থীরা আরও জানান, সরকারি সিদ্ধান্ত মেনে উভয় পক্ষের দ্বন্দ্ব নিরসন দরকার। আলেম-ওলামারা এ বিষয়ে বাড়াবাড়ি না করে পূর্বের মতো কাকরাইল মসজিদ, বিশ্ব ইজতেমা ও সারাদেশে আলাদা আলাদা কার্যক্রম পরিচালনা করলে সংঘাত হবে না।
এরপর বুধবার (১৩ নভেম্বর) রাতে ওলামা মাশায়েখ বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ‘কাকরাইল মসজিদ ও তাবলিগ বিষয়ে জরুরি বিবৃতি’তে জানানো হয়, মঙ্গলবার বর্তমান সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ওলামা মাশায়েখ বাংলাদেশের নেতাদের জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। দীর্ঘ আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, ধর্ম উপদেষ্টার পক্ষ থেকে যৌথভাবে ২০২৫ সালের এপ্রিল মাসে তাবলিগের সমস্যার স্থায়ী সমাধানের উদ্যোগ নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
ফলে দেশের বৃহত্তর স্বার্থে আগামী বছরের এপ্রিল পর্যন্ত কাকরাইল মসজিদে অবস্থানের বিষয়ে পূর্বের নিয়ম মেনে নিয়ে বর্তমান সরকারকে সহযোগিতা করার ব্যাপারে ওলামা মাশায়েখ বাংলাদেশ ও কাকরাইলের পক্ষ থেকে সবাই একমত পোষণ করেন।
রমনা জোনের ডিসি মো: মাসুূদ আলম (বিপিএম) জানান,জুবায়ের পন্থীরা চার সপ্তাহ অবস্থান করেছিলো। আজ তারা ছেড়ে দিল। এখন দুই সপ্তাহ অবস্থান করবে সাদ পন্থীরা। যাতে করে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি কোন অবনতি না ঘটে সেজন্য অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিলো। পূর্বের মতই তারা যেমনটি নিয়ম ছিল যে সাদপন্থীরা ২ সপ্তাহ এবং জুবায়ের পন্থীরা চার সপ্তাহ। আজকের শান্তিপূর্ণভাবে বের হয়ে গিয়েছে জুবায়ের পন্থীরা আস সুশৃঙ্খলভাবে প্রবেশ করেছে সাদপন্থীরা।