৭ দিন পর ডোবা থেকে মুনতাহার লাশ উদ্ধার : আটক ২
নিজস্ব প্রতিবেদক:
নিখোজের ৭ দিন পর মুনতাহা আক্তার জেরিনের (৬) লাশ পাশের বাড়ির ডোবা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় ২ জনকে আটক করা হয়েছে। আটক দুজন হলেন একই গ্রামের মারজিয়া ও তার মা আলিফজান। এরা মুনতাহার বাসার সাথেই একটি খাস জমিতে বসবাস করত এবং মুনতাহার বাসায় তাদের যাতায়াত ছিল।
মুনতাহা নিখোজ হওয়ার পর পুলিশের সন্দেহ হলে আলিফজানের মেয়ে মার্জিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যাওয়া হয়, জিজ্ঞাসাবাদে মার্জিয়ার কথাবার্তায় অসঙ্গতি পাওয়া যায়। তার কথায় সন্দেহ হলে পুলিশ এলাকাবাসীর সহায়তায় আলিফজানের উপর নজর রাখেন।
শনিবার রাতে আলিফজান মুনতাহার লাশ ডোবা থেকে তুলে অন্যত্র সরানের সময় আগে থেকে পাহারারত এলাকাবাসীর হাতে লাশসহ আটক হয়। আটক আলিফজানের বক্তব্যে জানা যায়, মুনতাহাকে শুক্রবার রাত তিনটার সময় হত্যা করে ডোবায় লুকিয়ে রাখা হয়।
পরে আটক আলিফজান এলাকাবাসীর কাছে বক্তব্য দেয়, আলিফজানের বক্তব্যের ভিডিও দেখে ধারনা করা হয়, যারা মুনতাহাকে হত্যা করেছে সেই হত্যাকারিরা আরো দুটি শিশুকে দেয়ার জন্য আলিফজানকে বলে। এসময় আলিফজান তাদের না করলে মুনতাহাকে নিয়ে গিয়ে হত্যাকারিরা কির্তন করে মুনতাহাকে হত্যা করে রাত তিনটার দিকে মুনতাহার লাশ আলিফজানের ঘরের পাশে একটি ডোবায় পুতে রাখে।
শনিবার মুনতাহার লাশ হত্যাকারিরার পরামর্শে ডোবা থেকে তুলে অন্যত্র সরিয়ে ফেলার সময় মুনতাহার লাশসহ আলিফজানকে এলাকাবাসী আটক করে, পরে কানাইঘাট থানা পুলিশ ঘটনাস্হলে গিয়ে আলিফজানকে থানায় নিয়ে আসে।
প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছে, মুনতাহাকে নিখোজের পর হত্যা করে ডোবায় পুতে রাখা হয়েছে। মুনতাহার লাশ দেখে এমন ধারনা করছেন এলাকাবাসী।, লাশের খবর লোকজন পেয়ে যাবে এমন সন্দেহে লাশ অন্যত্র সরিয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয় আলিফজান।
এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে কানাইঘাট থানার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: আব্দুল আওয়ালের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে ও তদন্তে বেরিয়ে আসবে আসল ঘটনা। মুনতাহার হত্যাকারি কি আসলেই অন্য কেউ, নাকি এই আলিফজান ও তার মেয়ে! এই সাতদিন কোথায় ছিল মুনতাহা। সব প্রশ্নের জবাব জানা যাবে তদন্তের পর। এদিকে মুনতাহার লাশ ময়না তদন্তের জন্য আজ ভোরে সিলেট এমএএজি ওসমানী হাসপাতালে প্রেরন করা হয়েছে। ময়না তদন্ত শেষে জানা যাবে মুনতাহাকে কখন কিভাবে হত্যা করা হয়েছে।
উল্ল্যেখ্য, সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার সদর ইউনিয়নের বীরদল গ্রামের বাসিন্দা শামীম আহমদের মেয়ে মুনতাহা গত ৩ নভেম্বর সকালে প্রতিবেশী শিশুদের সঙ্গে খেলতে বেরিয়ে নিখোজ হয়। নিখোঁজের ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুরু হয় তোলপাড়। ছোট্ট শিশু মুনতাহার সন্ধান দাতাদের জন্য দেশ-বিদেশ থেকে পুরস্কার ঘোষণাও করা হয়। “মুনতাহাকে হারিয়ে পরিবারের লোকজন হয়ে উঠেন পাগলপ্রায়। এরিমধ্যে সাত দিন পর শনিবার রাতে পাশের বাড়ির ডোবা থেকে মুনতাহার লাশ উদ্ধার করা হয় এ ঘটনায় একই গ্রামের দুজনকে আটক করা হয়েছে।