বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি নায়ক, প্রযোজক ও পরিচালক মাসুদ পারভেজ সোহেল রানা। বয়সের কারণে এখন আর নিয়মিত ক্যামেরার সামনে দেখা যায় না তাঁকে। বেশিরভাগ সময় কাটছে বাসাতেই। তবে চলচ্চিত্র আর সহকর্মীদের প্রতি ভালোবাসা এবং দেশবাসীর প্রতি দায়িত্ববোধ আজও হৃদয়ে গভীরভাবে অনুভব করেন তিনি।
রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) বিএফডিসিতে প্রয়াত চলচ্চিত্রশিল্পীদের স্মরণে আয়োজিত এক দোয়া মাহফিলে উপস্থিত হয়ে আবেগঘন বক্তব্য দেন সোহেল রানা। সেখানে তিনি বলেন,
“যদি কোনো ভুল বা অন্যায় করে থাকি, আজ সবার কাছে ক্ষমা চাইছি। মৃত্যুর পর যেন মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে নীতি ও আদর্শ নিয়ে দাঁড়াতে পারি।”
তিনি আরও বলেন,
“আমি ভুল করেছি, অনেক ভুল করেছি। তাই সহকর্মী, শিল্পী–কলাকুশলী, এমনকি সাধারণ দর্শক—সবার কাছেই ক্ষমা চাইছি। কারণ কেউ জানি না, কবে চলে যাব।”
সোহেল রানার আসল নাম মাসুদ পারভেজ। ১৯৭২ সালে প্রযোজক হিসেবে তিনি যাত্রা শুরু করেন। মুক্তিযুদ্ধের পরপরই প্রযোজনা করেন ঐতিহাসিক চলচ্চিত্র ‘ওরা ১১ জন’, যেখানে মুক্তিযোদ্ধাদের বাস্তব অভিজ্ঞতাই উঠে আসে।
এরপর গড়ে তোলেন প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ‘পারভেজ ফিল্মস’। প্রায় ৩০টিরও বেশি চলচ্চিত্র প্রযোজনা করেন। তবে সর্বাধিক জনপ্রিয়তা পান নায়ক হিসেবে। ১৯৭৪ সালে ‘মাসুদ রানা’ ছবির মাধ্যমে তিনি নায়ক ও পরিচালক—দু’টি ভূমিকাতেই আত্মপ্রকাশ করেন।
দীর্ঘ ক্যারিয়ারে তিন শতাধিক সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি। ‘লালু ভুলু’, ‘অজান্তে’ ও ‘সাহসী মানুষ চাই’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। ২০১৯ সালে পান জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের আজীবন সম্মাননা।
নায়ক, প্রযোজক ও পরিচালক ছাড়াও সোহেল রানা একজন মুক্তিযোদ্ধা। বাংলাদেশের চলচ্চিত্র ইতিহাসে তাঁর অবদান প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম স্মরণ করবে।