মহেশ চন্দ্র দাস
ঘরে গীতা পাঠ, ফল কেন ফলছে না?
দেশলাইয়ের কাঠির দোষে একটি কাঠি জ্বলছে না।।গীতার শ্লোক ইক্ষু খণ্ড গিলিলে আস্বাদ নাই,
গুরুর পাশে বসে বসে সরসে চিবানো চাই।
রংপুরে বিগত কয়েক বছর ধরে স্বাত্তিক (শুদ্ধতার সহিত) পূজা করার স্বার্থে প্রচার-প্রচারণা, ব্যানার-ফেস্টুন টাঙানো ও পোস্টার লাগানোর কাজ করে আসছি। পূজায় পোশাকে শালীনতা, সৌহার্দ্য, ধর্মীয় আচরণে বাধ্যবাধকতা এবং ধর্মীয় রীতিনীতি সাধারণ মানুষকে উদ্বুদ্ধ ও আকৃষ্ট করবে—এই চিন্তাধারায় আমাদের সচেতন থাকতে হবে। আসলে আমরা পূজার মূল থিম থেকে দূরে সরে এসেছি।
পূজার পাশাপাশি চণ্ডীপাঠ, গীতা পাঠ, ধর্মীয় আলোচনা, ধুনুচি নৃত্য এবং ধর্মীয় কুইজ প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে পূজাকে আরও সাবলীল ও যথাযথ মর্যাদায় পালন করা অতীব জরুরি হয়ে পড়েছে। বর্তমানে বিভিন্ন ধর্মীয় মণ্ডপ পরিদর্শনের কালে ডিজে গানের সাথে দেশি-বিদেশি সিনেমার ভোজপুরি গানের তালে নাচ চোখে পড়ে, যা ধর্মীয় পূজা/উৎসবের সাথে বেমানান। তাই পূজা কমিটির প্রতি অনুরোধ, ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যে যেন কোনোভাবে প্রশ্ন উত্থাপিত না হয়।
বর্তমানে আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক কোনো ধর্মীয় শিক্ষার ব্যবস্থা না থাকায় ‘স্বস্তিকা’ রংপুরে গীতা স্কুল চালু করেছে। আপনার সন্তানকে স্বস্তিকার গীতা স্কুলে পাঠান—ধর্মীয় ও গীতা শিক্ষার দায়িত্ব স্বস্তিকার।
আসুন আমরা কুসংস্কার দূর করি,
শুদ্ধতার সাথে সাত্ত্বিক পূজা করি।
জয় গীতা।
খানিকটা সময়ের জন্য আমি শৈশবে ফিরে গিয়েছিলাম। চিরচেনা সেই ঢাকের শব্দ, তার সাথে এত সুন্দর ধুনুচি আরতি—যা খুবই মনোমুগ্ধকর। ছোটবেলায় গভীর রাতে ঢাকের শব্দ শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে যেতাম, আবার পরদিন ভোরে এই একই ঢাকের শব্দে ঘুম ভাঙত।
অথচ বর্তমানে শুধু দুর্গাপূজাতেই নয়, প্রায় সব পূজাতেই অতিরঞ্জিত গান আর উদ্ভট নাচ ক্রমশ বেড়েই চলেছে। যা সত্যিই দুঃখজনক। আজকে এক মন্দিরে দেখলাম, ডিজে গানের সাথে নাচ হচ্ছে, অথচ মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে মাইকে ঘোষণা দেওয়া হচ্ছে—“আমরা এতক্ষণ অমুকের সুন্দর একটি আরতি (ভোজপুরি ডিজে গানের সাথে নাচ) দেখলাম।” এরপর আবার শোনা গেল, “এবার আরতি (মানে ডিজে গানের সাথে ঝাকানাকা ডান্স) নিয়ে আসছে…”
কি অদ্ভুত অবস্থা! আমরা পার্থক্য করাই ভুলে গেছি। ডিজে গানের সাথে উদ্ভট নাচকেও কত সুন্দর করে ‘আরতি’ বলে চালিয়ে দেওয়া হচ্ছে! ভাবা যায়, কতটা ভয়াবহ অবস্থা! আমাদের যুব সমাজ কোন দিকে যাচ্ছে, তা ভেবে এখনই সংশোধন করা উচিত।
ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক
স্বস্তিকা, রংপুর।