মনির হোসেন, বেনাপোল প্রতিনিধি:
বাংলাদেশ থেকে প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য ও গার্মেন্টসসহ সাত ধরনের পণ্য স্থলবন্দর দিয়ে আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ভারত সরকার। এতে বেনাপোল বন্দরে আটকে গেছে গার্মেন্টস পণ্যবাহী অন্তত ৩৬টি বাংলাদেশি ট্রাক।
ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বৈদেশিক বাণিজ্য অধিদপ্তর (ডিজিএফটি) গত শনিবার (১৭ মে) এক নির্দেশনায় জানায়, বাংলাদেশ থেকে এসব পণ্য এখন থেকে শুধু কলকাতা সমুদ্রবন্দর দিয়ে আমদানি করা যাবে। স্থলপথ ব্যবহার করে এসব পণ্য প্রবেশ করতে পারবে না। এই নির্দেশনা তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হয়েছে বলেও জানানো হয়।
বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা বলছেন, রপ্তানির জন্য সবচেয়ে সুবিধাজনক ও কম খরচের মাধ্যম ছিল স্থলপথ। এতে যেমন সময় বাঁচত, তেমনি পরিবহন ব্যয়ও ছিল তুলনামূলক কম। নতুন নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হওয়ায় পোশাক খাতসহ অন্যান্য পণ্যের রপ্তানি বড় ধরনের ধাক্কা খাবে বলে আশঙ্কা তাদের।
বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্টস এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক লতা বলেন, “ভারতে বছরে ১০-১৮ হাজার কোটি টাকার পণ্য রপ্তানি হয় বেনাপোল দিয়ে। এর মধ্যে গার্মেন্টস, প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য, পাটজাত পণ্য, কেমিকেল, মাছসহ নানা সামগ্রী রয়েছে।”
পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এজেন্ট সংস্থার সাধারণ সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্ত্তী জানান, যেসব পণ্যের ইতোমধ্যে এলসি বা টিটি সম্পন্ন হয়েছে, সেগুলো যাতে আটকে না যায় সেজন্য ভারতীয় কাস্টমসে আলোচনা চলছে।
বেনাপোল বন্দরের উপপরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবির তরফদার জানান, এ বিষয়ে কোনো সরকারি চিঠি এখনও তারা পাননি। তবে বিভিন্ন উৎস থেকে জানতে পেরেছেন, ৩০ থেকে ৩৬টি ট্রাক পণ্য বেনাপোলে আটকে আছে এবং রোববার সকাল থেকে পোশাক বা খাদ্যপণ্য রপ্তানি বন্ধ রয়েছে।
এদিকে ভারতীয় সুতা আমদানিতে বাংলাদেশের এক মাস আগের নিষেধাজ্ঞার পরই ভারতের এই পাল্টা পদক্ষেপ এল বলে ধারণা করা হচ্ছে। বাংলাদেশ গত অর্থবছরে ভারতে ১৫৭ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছিল, যার ৯৩ শতাংশ গার্মেন্টস পণ্য স্থলপথেই পাঠানো হয়।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, স্থলপথে নিষেধাজ্ঞার ফলে নৌ ও বিমানপথে রপ্তানির ব্যয় বহুল হয়ে দাঁড়াবে, যা প্রতিযোগিতার বাজারে টিকতে সমস্যা তৈরি করবে।