বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর জানিয়েছেন, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের আন্তর্জাতিক পেমেন্ট সিস্টেমের সঙ্গে যুক্ত করার জন্য সরকার উদ্যোগ নেবে। তিনি বলেন, “আন্তর্জাতিক পেমেন্ট সিস্টেমের সাথে উদ্যোক্তাদের যুক্ত করার জন্য পে-প্যালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। পশ্চিমা দেশগুলো অনলাইনে ক্রয় করছে, সেই সুযোগ বাংলাদেশও নিতে চায়। এজন্য বাজার তৈরি ও পরামর্শ প্রয়োজন।”
এ কথা তিনি বলেন বুধবার (৩ ডিসেম্বর) রাজধানীতে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশন (বিসিক) আয়োজিত দুই দিনব্যাপী সম্মেলন ও কর্মশালায়।
গভর্নর বলেন, শুধু উদ্যোক্তা সংখ্যা বাড়ানোই যথেষ্ট নয়; চাহিদা সৃষ্টি ও বাজার তৈরি করাও জরুরি। তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ ব্যাংক বিসিকের উদ্যোক্তাদের জন্য ২ হাজার কোটি টাকা ঋণ দিতে সক্ষম, তবে সেটি আদায় করা কতটা সম্ভব তা নিশ্চিত করতে হবে। ঋণ কার্যক্রমের বরাদ্দ বাড়াতে হবে, এবং যদি ঋণ আদায় না হয়, তবে অর্থনৈতিক কার্যক্রম ব্যর্থ হবে।
তিনি আরও বলেন, ক্রেতাদের কাছে সরাসরি পণ্য পৌঁছে দিতে একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম তৈরি করতে হবে এবং সেটি নিয়মিত আপডেট রাখতে হবে। দক্ষ আইটি কর্মীর মাধ্যমে প্ল্যাটফর্ম পরিচালনাও অপরিহার্য।
গভর্নর পে-প্যালের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, এটি একটি বিশ্বব্যাপী ডিজিটাল পেমেন্ট সেবা, যা ব্যবহারকারীরা অনলাইনে টাকা পাঠানো ও গ্রহণ, বিল পরিশোধ এবং আন্তর্জাতিক কেনাকাটার জন্য ব্যবহার করতে পারে।
ড. মনসুর বলেন, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের টেকসই উন্নয়নে পরিবেশবান্ধব শিল্পায়নের গুরুত্ব অপরিসীম। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, সোলার ব্যবহার ও সঠিক পানির ব্যবস্থাপনা ছাড়া গ্রিন সার্টিফিকেশন অর্জন সম্ভব নয়। এর অভাবে রফতানি খাতের ক্ষেত্রে বড় বাধা আসতে পারে।
তিনি জোর দেন, “অনলাইন প্ল্যাটফর্মে প্রতিটি উদ্যোক্তার আলাদা প্রোফাইল, শপিং কার্ট এবং রিয়েল-টাইম তথ্য থাকা জরুরি। আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশের জন্য অনলাইন ও পে-প্যালের মতো প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার সময়ের দাবি। চীনের পণ্য আমেরিকা থেকে কেনা যায়, তাহলে বাংলাদেশের জামদানি কেন বিদেশে কেনা যাবে না? সঠিক নীতি প্রয়োগে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র শিল্পে শক্ত অবস্থান তৈরি করতে পারবে।”

