তরুণদের মধ্যে উচ্চ রক্তচাপ ঝুঁকি কমাতে কার্যকর পদক্ষেপ জরুরি: ওয়েবিনারে বক্তারা
বিশেষ প্রতিনিধি | ঢাকা :
“খাদ্যাভ্যাস, জীবনাচরণসহ নানা কারণে বাংলাদেশে তরুণদের মধ্যে উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা ক্রমশ বাড়ছে। দেশের সকল উপজেলা হেলথ কমপ্লেক্স এবং কমিউনিটি ক্লিনিকে উচ্চ রক্তচাপ পরিমাপের ব্যবস্থা ও ওষুধের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করতে হবে।”
শনিবার (১২ আগস্ট ২০২৩) গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) আয়োজিত “উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ ঝুঁকি এবং বাংলাদেশের যুব সমাজ” শীর্ষক এক ওয়েবিনারে এসব তথ্য তুলে ধরেন বক্তারা। গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটর (জিএইচএআই) এর সহায়তায় এই অনুষ্ঠানের সহ-আয়োজক ছিল তরুণদের সংগঠন ইয়ুথ ক্লাব অফ বাংলাদেশ, কাশফুল ফাউন্ডেশন, ইটস হিউম্যানিটি ফাউন্ডেশন, গিভ বাংলাদেশ এবং সন্ধানী।
ওয়েবিনারে জানানো হয়, বাংলাদেশে প্রতি ৪ জনে ১ জন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত এবং তরুণদের মধ্যে এই প্রবণতা ক্রমবর্ধমান। বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার চার ভাগের এক ভাগ অর্থাৎ ৪ কোটি ৫৯ লাখই তরুণ। এই বিশাল তরুণ জনগোষ্ঠিকে উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগ ঝুঁকি থেকে সুরক্ষা প্রদানে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি।
ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইন্সটিটিউটের ইপিডেমিওলজি অ্যান্ড রিসার্চ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী বলেন, “উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগ কেবল প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই, তরুণদের মধ্যেও এই প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। খাদ্যাভ্যাস ও জীবনাচরণে পরিবর্তন এবং রক্তচাপ পরীক্ষার মাধ্যমে তরুণ জনগোষ্ঠির মধ্যে উচ্চ রক্তচাপের প্রকোপ কমানো সম্ভব।”
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কমিউনিটি বেইজড হেলথ কেয়ার (সিবিএইচসি) এর প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. মোঃ সাব্বির হায়দার জানান, “জীবনাচরণ পরিবর্তনের মাধ্যমে তরুণদের উচ্চ রক্তচাপ ঝুঁকি মোকাবেলায় সরকারের বিভিন্ন কর্মসূচি চলমান আছে। সরকার ইতোমধ্যে সকল কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে, এটি বাস্তবায়িত হলে দেশব্যাপী তরুণসহ সকলের মধ্যে উচ্চ রক্তচাপের প্রকোপ কমে আসবে।”
এছাড়াও ভার্চুয়ালী যুক্ত হয়ে বেশ কয়েকটি প্রশ্ন উত্থাপন করে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষক, ‘৯০-এর গণঅভ্যুত্থানের সংগঠক, বাংলাদেশ ছাত্রমৈত্রীর সাবেক কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, জাতীয় কৃষক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির মৌলভীবাজার জেলা সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য, সাপ্তাহিক নতুন কথা’র বিশেষ প্রতিনিধি, আরপি নিউজের সম্পাদক ও বিশিষ্ট কলামিস্ট কমরেড সৈয়দ আমিরুজ্জামান বলেন, “অধিকাংশ সময় উচ্চ রক্তচাপের নির্দিষ্ট কোনো লক্ষণ এবং উপসর্গ থাকে না। এটি নিয়ন্ত্রণে না থাকলে হার্ট, কিডনিসহ শরীরের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি অঙ্গে জটিলতা তৈরি হতে পারে। এ রোগের ঝুঁকি মোকাবিলায় গণসচেতনতা বৃদ্ধি ও চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতে দেশের সব হাসপাতাল-উপজেলা ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র, ফার্মেসি এবং কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে ওষুধের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। একইসঙ্গে এ খাতে সরকারের বাজেট বরাদ্দ বাড়াতে হবে।”
ওয়েবিনারে আলোচক হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন প্রজ্ঞার নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের। ওয়েবিনারটি সঞ্চালনা করেন প্রজ্ঞা’র কোঅর্ডিনেটর সাদিয়া গালিবা প্রভা। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে যুব সংগঠনসহ নানা শ্রেণি পেশার মানুষ এই ওয়েবিনারে অংশ নেন।