রেলওয়ে কারখানাকে আধুনিকায়ন করে দ্রুত জনবল নিয়োগ দেয়া হবে: উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান 

সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি:
অন্তবর্তীকালীন সরকারের রেলপথ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান বলেছেন, সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা ও পার্বতীপুর লোকোমোটিভ কারখানাকে আধুনিকায়ন করে দ্রুত জনবল নিয়োগ দিয়ে একটি সচল প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা হবে। যাতে রেলওয়ের জন্য অতি প্রয়োজনীয় ইঞ্জিন ও কোচ নির্মাণ সহজতর ও কার্যকর হয়। তাহলে আর বিদেশ নির্ভর হতে হবেনা এবং বিশাল অংকের অর্থ সাশ্রয় করা সম্ভব হবে।
তিনি শুক্রবার (২২ নভেম্বর) একদিনের সরকারি সফরে সৈয়দপুরে এসে ফেরার সময়  সন্ধা ৫ টায় সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এসব কথা বলেন।এসময় উপস্থিত ছিলেন, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ফাহিমুল ইসলাম, বাংলাদেশ রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের সিএমই সাদেকুর রহমান, জিএম মামুনুল ইসলাম, পাকশী বিভাগের ডিআরএম শাহ সুফী।
এর আগে তিনি সকাল ৯ টায় সৈয়দপুর বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান। সেখান থেকে সড়ক পথে প্রথমে দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলায় অবস্থিত রেলওয়ের কেন্দ্রীয় লোকোমোটিভ কারখানা (কেলোকা) পরিদর্শন করেন। সেখান থেকে নীলফামারীর পল্লী বিদ্যুৎ কার্যালয়ে রংপুর দিনাজপুর অঞ্চলের পল্লী বিদ্যুৎ সরবরাহ কেন্দ্রের কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় করেন।
এরপর বেলা ৩ টা সৈয়দপুর শহরের হাতিখানা কবরস্থানে ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানে নিহত শহীদ সাজ্জাদ হোসেনের কবর জিয়ারত করেন। এসময় তাঁর সাথে ছিলেন নীলফামারীর জেলা প্রশাসক নায়িরুজ্জামান, সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুর ই আলম সিদ্দিকী, শহীদ সাজ্জাদ হোসেনের বাবা আলমগীর হোসেন, সৈয়দপুর শহর জামায়াতের আমীর শরফুদ্দীন খান, বাংলাদেশ রেলওয়ে এমপ্লয়িজ লীগ সৈয়দপুর কারখানা শাখার সভাপতি হাফিজুর রহমান, সেক্রেটারি খায়রুল বাশার, সহ সেক্রেটারি হাসানসহ স্থানীয় ছাত্র সমন্বয়করা।
সেখান থেকে সকলে মিলে  সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় আসেন। ডিএস কার্যালয়ের সামনে উপদেষ্টা কে ফুলেল অভ্যর্থনা জানান, সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার ডিএস মোস্তফা জাকির হাসান, পার্বতীপুর লোকোমোটিভ কারখানার সিএক্সই মো. সাইফুল ইসলাম, রেলওয়ে কারখানার বিভিন্ন ট্রেড ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দসহ রেলওয়ের বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
পরে উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান কারখানার কয়েকটি সপ (উপ কারখানা) পরিদর্শন করেন। তারপর রেলওয়ে কর্মকর্তা ও ছাত্র সমন্বয়কদের সাথে মিটিং করেন। শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন। এসময় উপদেষ্টা আরও বলেন, রেলওয়ে একটি অলাভজনক খাত। একারণেই মূলতঃ রেলওয়ের উন্নয়নে বাধা। তাছাড়া ইতোপূর্বে বিভিন্ন সরকার এখাতটিকে অবমূল্যায়ন করেছে এবং উন্নয়ণের নামে লুটেপুটে সাবার করেছে। সেজন্য রেলওয়ের প্রকৃত উন্নয়ন হয়নি। অথচ বাংলাদেশের যোগাযোগ ক্ষেত্রে রেলওয়ের ভুমিকা অপরিসীম। তাই আমরা রেলওয়েকে প্রকত অর্থে একটি সচল খাতরুপে পরিণত করতে চাই। এজন্য রেলওয়ে লোকেমোটিভ তথা ইঞ্জিন ও কোচ নির্মাণ খুবই জরুরী। তাই এব্যাপারে সম্ভাব্যতা যাচাই করতেই এই সফরে আসা।
সৈয়দপুর ও পার্বতীপুরে যে রেলওয়ের অবকাঠামো ও মেশিনপত্র আছে তাতে আধুনিকায়ন করা হলে এখানেই ব্যাপকভাবে ইঞ্জিন ও কোচ নির্মাণ করা যাবে। এজন্য নতুন কোন কারখানা তৈরীর প্রয়োজন নেই। বরং পর্যাপ্ত কার্যক্রম চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় বাজেট ও জনবল দিয়ে এই কারখানাতেই বাৎসরিক চাহিদা পূরণের চেষ্টা করা হবে। এজন্য অতিদ্রুত জনবল নিয়োগ দেয়াসহ অন্যান্য বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হবে।সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, আমরা কোন মিথ্যে আশ্বাস দিতে চাইনা।পুর্বের মন্ত্রীদের মত রাজনৈতিক স্ট্যান্ডবাজীও করতে চাইনা। ধৈর্য্য ধরুন এবং দেখুন আমরা কতটুকু কি করছি। রেলওয়ে হাসপাতালকে মেডিকেল কলেজ করার বিষয়ে তিনি বলেন, আগের প্রধানমন্ত্রী কি বলেছেন তা আমার জানা নেই। তবে মেডিকেল কলেজ করার বিষয়টি মূলতঃ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের। ঢাকায় গিয়ে আমি এব্যাপারে সংশ্লিষ্ট উপদেষ্টার সাথে কথা বলবো। একইভাবে রেলওয়ে স্কুলের বিষয়টিও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধিনে। এক্ষেত্রেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করা হবে।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন