শাহাদাৎ বাবু, নোয়াখালী সংবাদদাতা
নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় একটি বসতবাড়ির পুকুরে বিশাল আকৃতির কুমিরের দেখা মিলেছে। এ ঘটনায় এলাকায় চরম আতঙ্ক এবং চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, গত চার দিন ধরে পুকুরপাড়ে রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন তারা।
বুধবার (২৫ জুন) বিকেলে হাতিয়া পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো. মাসুদুল ইসলাম শরীফের বাড়ির পুকুরে কুমিরটি প্রথম দেখা যায়। এরপর থেকেই এলাকার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শত শত মানুষ ভিড় জমাতে থাকেন। অনেকেই ছবি ও ভিডিও ধারণ করেন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন উপকূলীয় বন বিভাগের নোয়াখালী বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আবু ইউসুফ। তিনি জানান, “ঘটনাস্থলে একটি দল পাঠানো হয়েছে। তারা কুমিরটি সনাক্ত করার চেষ্টা করছে। সনাক্ত করতে পারলে দ্রুত উদ্ধার অভিযান শুরু করা হবে।”
ঘটনার বিবরণ
পুকুরের মালিক মাসুদুল ইসলাম শরীফ বলেন,
“প্রথম কুমিরটি দেখা যায় চারদিন আগে, গ্রামের ফেরি ওয়ালার বাড়িতে। তখন পরিবারের সদস্যরা সেটিকে মারার চেষ্টা করলে কুমিরটি পালিয়ে যায়। বুধবার বিকেলে আমার স্ত্রী পুকুরে আবার কুমিরটিকে ভেসে থাকতে দেখেন। এরপর এলাকায় হইচই পড়ে যায়।”
তিনি আরও জানান, বন বিভাগ ও ফায়ার সার্ভিস কুমিরটি দেখে গেলেও তারা জানিয়েছেন, কুমির উদ্ধার তাদের কাজ নয়। ফলে সেটি এখনো পুকুরেই অবস্থান করছে।
আতঙ্কে এলাকাবাসী
স্থানীয় বাসিন্দা কামাল উদ্দিন বলেন,
“প্রথমে অনেকে গুজব ভেবেছিল। কিন্তু বিকেলে নিজের চোখে দেখে বুঝলাম, এটা সত্যি। ওটা বিশাল একটা কুমির। এখন আতঙ্কে আছি, বিশেষ করে শিশুদের নিয়ে।”
আরেক বাসিন্দা বলেন, “রাতভর আমরা পাহারা দিয়েছি। বাচ্চা-বুড়ো কাউকেই পুকুরের ধারে যেতে দিচ্ছি না।”
পুকুরের আশপাশের পরিবেশ এখন আতঙ্কিত। শিশুরা বাইরে খেলতে পারছে না, নারী-পুরুষরাও বাড়ির পেছনের অংশে যেতে ভয় পাচ্ছেন।
বন বিভাগের উদ্যোগ
বন কর্মকর্তা আবু ইউসুফ জানিয়েছেন, “আমাদের টিম কাজ করছে। কুমিরটি যদি পুকুরে নিশ্চিতভাবে সনাক্ত করা যায়, তবে সুনির্দিষ্ট উদ্ধার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে। উদ্ধার হলে সাধারণ মানুষের আতঙ্ক দূর হবে।”