মধ্যপ্রাচ্যে ইরান ও ইসরায়েলের চলমান সংঘাত ক্রমশ তীব্র ও জটিল হয়ে উঠছে। এই সংকটের মাঝে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান নিয়েও রয়েছে অনেক প্রশ্ন। বিশেষ করে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভূমিকা নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে বিভ্রান্তি।
এক সময় ট্রাম্প ইসরায়েলের পক্ষ শক্তিশালীভাবে নিয়েছিলেন, বলেছিলেন—ইরানকে কখনো পারমাণবিক অস্ত্রের অধিকারী হতে দেওয়া যাবে না। তবে অন্য দিকে তিনি বারবার বলেছেন, তিনি চান যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে একটি কূটনৈতিক সমঝোতা বা চুক্তি গড়ে উঠুক।
গতকালের ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, ইরানের বিরুদ্ধে আরও শক্তিশালী আঘাত আসতে পারে, যার পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পৃক্ততা থাকবে। একই সঙ্গে তিনি কূটনৈতিক উদ্যোগ ও হুমকির মিশ্রণ প্রয়োগ করে দ্বৈত বার্তা পাঠাচ্ছেন, যা ‘ম্যাড ম্যান থিওরি’ বা ‘পাগল তত্ত্ব’ নামে পরিচিত।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্পের সামনে এখন তিনটি প্রধান পথ রয়েছে—
প্রথমত, ইসরায়েলের পক্ষ নিয়ে সংঘাত আরও বাড়ানো। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সুর মিলিয়ে ট্রাম্প স্পষ্ট করে দিয়েছেন, ইরানকে পারমাণবিক ক্ষমতা থেকে রুখতে হবে। কিছু কংগ্রেস সদস্য সামরিক বিকল্পের পক্ষে এবং যুক্তরাষ্ট্রের ‘বাংকার-ব্লাস্টার’ বোমা ব্যবহার করে ইরানের গোপন স্থাপনা ধ্বংসের সম্ভাবনাও উত্থাপন করছেন।
দ্বিতীয়ত, সীমিত সহযোগিতা ও মধ্যপন্থা বজায় রাখা। ট্রাম্প বারবার বলেছেন, ইসরায়েলের হামলায় যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি জড়িত নয়। কিন্তু বাস্তবে মার্কিন সামরিক সহযোগিতা ইরানের প্রতিহত করার জন্য চলমান রয়েছে। হোয়াইট হাউসের কিছু উপদেষ্টা সতর্ক করেছেন, অতিরিক্ত উসকানি যুক্তরাষ্ট্রকে বড় যুদ্ধে টেনে নিতে পারে।
তৃতীয়ত, দেশের ভেতরে রাজনৈতিক চাপের কারণে ধীরে ধীরে পিছু হটানো। রিপাবলিকান পার্টির কিছু অংশ ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতির নামে মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রকে না টানার পক্ষে। এই চাপ ট্রাম্পকে সামরিক কৌশল থেকে সরে এসে সীমিত সম্পৃক্ততার পথ বেছে নিতে বাধ্য করছে।
সর্বশেষ, আগামী দিনগুলোতে ট্রাম্প যে কোনো একটি পথ বেছে নেবেন—সংঘাত বাড়ানো, মধ্যপন্থা বজায় রাখা, অথবা ধীরে ধীরে সরে আসা। এই সিদ্ধান্ত শুধু মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিই নয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভবিষ্যতও প্রভাবিত করবে।
আপনারা দেখছেন [আপনার চ্যানেলের নাম], আরও খবর ও বিশ্লেষণের জন্য সাবস্ক্রাইব করতে ভুলবেন না।