ইসরায়েলের বিরুদ্ধে চালানো হামলা প্রতিহত করতে কেউ সাহায্য করলে তাদের সামরিক ঘাঁটি, যুদ্ধজাহাজ ও নৌবহর ইরানের সরাসরি হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হবে—এমনই ভয়াবহ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে তেহরান। ইরানের আধাসরকারি সংবাদমাধ্যম ‘মেহর নিউজ’-এর বরাত দিয়ে জানানো হয়েছে, সরকারিভাবে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “যে কোনো দেশ যদি ইসরায়েলবিরোধী ইরানি হামলা প্রতিহত করতে সহায়তা করে, তবে পারস্য উপসাগর ও লাল সাগরে থাকা তাদের সব সামরিক ঘাঁটি, যুদ্ধজাহাজ ও নৌবহর আমাদের আক্রমণের আওতায় আসবে।” বিশ্লেষকদের মতে, এটি কোনো কূটনৈতিক ভাষা নয়, বরং একটি সরাসরি ও সুপরিকল্পিত সামরিক হুমকি, যা যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের মতো দেশগুলোকেই উদ্দেশ্য করে দেওয়া হয়েছে। কারণ এই তিন দেশেরই পারস্য উপসাগর ও লাল সাগরজুড়ে শক্তিশালী সামরিক উপস্থিতি রয়েছে।
এই হুমকি এমন এক সময়ে এলো যখন মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি যুদ্ধাবস্থার চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। ইরান সম্প্রতি ইসরায়েলের বিভিন্ন সামরিক ঘাঁটি ও পারমাণবিক অবকাঠামোর ওপর ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। জবাবে ইসরায়েলও ইরানের ভেতরে উচ্চপর্যায়ের সামরিক স্থাপনাগুলোতে পাল্টা হামলা চালিয়েছে। এতে দুই দেশের মধ্যে সরাসরি সংঘর্ষের আশঙ্কা আরও প্রবল হয়েছে। আঞ্চলিক আকাশসীমা কার্যত যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। চারপাশে সামরিক প্রস্তুতি চলছে পুরোদমে।
বিশ্লেষকেরা সতর্ক করে বলছেন, ইরানের এই হুঁশিয়ারি শুধু কথার ঝাঁঝ নয়, বাস্তবে রূপ নিলে এটি একটি বিস্তৃত আঞ্চলিক যুদ্ধে রূপ নিতে পারে, যার পরিণতি হবে ভয়াবহ। এতে কেবল মধ্যপ্রাচ্য নয়, বিশ্ব রাজনীতি ও অর্থনীতিতেও বড় ধরনের ধাক্কা লাগবে। আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম, নিরাপত্তা ব্যয় ও রাজনৈতিক মেরুকরণ—সবকিছুর ওপরই এর দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।