বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ভাগনি, যুক্তরাজ্যের সাবেক মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিককে দেশে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) হাফিজ আহসান ফরিদ। মঙ্গলবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এই তথ্য জানান।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের মুখে দেশত্যাগ করেন শেখ হাসিনা। এর পর অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্রক্ষমতা গ্রহণ করে। ক্ষমতা হারানোর পরপরই শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে হত্যা, গুম, দুর্নীতি, জালিয়াতি এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের মতো গুরুতর অভিযোগে একাধিক মামলা হয়।
এর মধ্যে রাজউকের এক আবাসন প্রকল্পে ক্ষমতার অপব্যবহার ও জালিয়াতির মাধ্যমে ১০ কাঠা করে ৬০ কাঠার প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যসহ মোট ২৩ জনের বিরুদ্ধে ছয়টি মামলা দায়ের করেছে দুদক।
টিউলিপ সিদ্দিককে দেশে ফেরত আনার বিষয়ে জানতে চাইলে দুদক কমিশনার বলেন, “আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নথি পাঠিয়েছি, যেটি ‘মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স রিকোয়েস্ট (এমএলএআর)’ নামে পরিচিত। এটি এখন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বিদেশি দূতাবাসে পাঠানো হবে, সেখান থেকে যাবে বাংলাদেশের দূতাবাসে। এই প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে।”
শেখ হাসিনাকে ফেরত আনার লক্ষ্যে ‘রেড অ্যালার্ট’ জারি হয়েছে কি না জানতে চাইলে হাফিজ আহসান ফরিদ জানান, “রেড অ্যালার্ট সংক্রান্ত বিষয়ে এখনো কমিশনে আনুষ্ঠানিক আলোচনা হয়নি। তবে পরবর্তী কমিশন সভায় এ বিষয়ে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে, যা এ সপ্তাহেই হতে পারে অথবা আগামী সপ্তাহে।”
আরও জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, “সরকারের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই জানানো হয়েছে যে শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরত আনার উদ্যোগ নেওয়া হবে। এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক দুর্নীতি দমন সংস্থাগুলোর সঙ্গে আলোচনা চুক্তির পর্যায়ে রয়েছে। চুক্তি সম্পন্ন হলে দুদক তাদের সহযোগিতা পাবে।”
এই উদ্যোগকে কেন্দ্র করে দেশের রাজনীতি এবং আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে নতুন মাত্রা যুক্ত হয়েছে বলে ধারণা করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।