২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের আকস্মিক হামলার পর ইসরায়েল গাজায় যুদ্ধ শুরু করে। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, হামাসের এই হামলায় ১,২০০ জন নিহত হয়, যাদের বেশিরভাগই সাধারণ নাগরিক, এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়।
হামাস এই নতুন অভিযানের নিন্দা জানিয়ে এটিকে “যুদ্ধবিরতি চুক্তির গুরুতর লঙ্ঘন” বলে অভিহিত করেছে। দলটি জানায়, তারা জানুয়ারিতে ইসরায়েলের সঙ্গে স্বাক্ষরিত যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে অটল। তবে বৃহস্পতিবার হামাস যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে প্রথমবারের মতো ইসরায়েলে রকেট হামলা চালায়।
গাজার মানুষ আশঙ্কা করছে, আসন্ন দিনগুলোতে সংঘাত আরও ভয়াবহ হবে। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইসরায়েল কাটজজানান, গাজায় ইসরায়েলের স্থায়ী নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখা হবে, যদি হামাস জিম্মিদের মুক্তি না দেয়।
তিনি বলেন, “আমি ইসরায়েলি সেনাবাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছি গাজায় আরও এলাকা দখল করতে, সেখানকার জনগণকে সরিয়ে নিতে এবং ইসরায়েলি জনগণ ও সেনাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গাজার চারপাশে নিরাপত্তা অঞ্চল বাড়াতে।”
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু নতুন সামরিক অভিযান শুরু হওয়ার পর বলেছেন, “আমি আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই: এটি কেবল শুরু মাত্র।”
গাজায় ২০ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। চিকিৎসা ব্যবস্থা ধ্বংসের মুখে, হাসপাতালগুলো যুদ্ধের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।
ইসরায়েল চলতি মাসের শুরুতে গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশ বন্ধ করে দেয়, যার ফলে খাদ্য সংকট ও দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। সামরিক অভিযানের কারণে ত্রাণ বিতরণও ব্যাহত হচ্ছে।
যুদ্ধবিরতি আলোচনা ভেস্তে গেছে
যুদ্ধবিরতির আলোচনাও প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। জানুয়ারিতে স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুযায়ী, মার্চের ১ তারিখে ইসরায়েল গাজা থেকে সম্পূর্ণভাবে সরে যাওয়ার কথা ছিল এবং যুদ্ধ স্থায়ীভাবে বন্ধ করার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার কথা ছিল। এর বিনিময়ে, হামাস সকল জীবিত জিম্মিকে মুক্তি দিত।
কিন্তু এই দ্বিতীয় ধাপ বাস্তবায়িত হয়নি, বরং ইসরায়েল যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলের দাবি, হামাস মার্কিন মধ্যস্থতাকারীদের দেওয়া দুটি প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে এবং আইডিএফ সৈন্য ও ইসরায়েলি জনগণের ওপর হামলার হুমকি দিয়েছে।
নিহতের সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক

ইসরায়েল স্বীকার করেছে যে গাজায় অনেক বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে, তবে তারা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সংখ্যা অতিরঞ্জিত বলে দাবি করছে।
জাতিসংঘ ও মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া সংখ্যাগুলোকেই বিশ্বাসযোগ্য বলে মনে করে। এছাড়া, স্বাধীন গবেষণায়ও ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে যে প্রকৃত নিহতের সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে।
তবে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম স্বাধীনভাবে গাজায় প্রবেশের অনুমতি না পাওয়ায় এই তথ্য যাচাই করা সম্ভব হয়নি।
গাজায় ইসরায়েলের হামলা চলমান, নিহত ৫০,০০০ ছাড়িয়েছে
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলের হামলায় নিহতের সংখ্যা ৫০,০০০ ছাড়িয়েছে। রোববার প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৪১ জন নিহত হয়েছে, যার ফলে মোট প্রাণহানি দাঁড়িয়েছে ৫০,০২১ জনে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, নিহতদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। তবে ধারণা করা হচ্ছে, আসল সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে, কারণ এখনও বহু মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে রয়েছে।
যুদ্ধবিরতির পর সংঘাত আরও ভয়াবহ
গত দুই মাসের যুদ্ধবিরতি ভেঙে যাওয়ার পর ইসরায়েল গাজার ওপর পুনরায় ব্যাপক হামলা শুরু করেছে। মঙ্গলবারের বিমান হামলা ছিল যুদ্ধ শুরুর পর থেকে সবচেয়ে প্রাণঘাতী, যেখানে মাত্র একদিনেই ৬০০-এর বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
খাবার, পানি ও বিদ্যুৎ সংকট আরও তীব্র হয়েছে।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (IDF) জানিয়েছে, তারা গাজার বেশ কয়েকটি স্থানে প্রায় ২০০টির বেশি বিমান হামলা চালিয়েছে।প্রধানত হামাসের স্থাপনা ও সামরিক ঘাঁটিগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে বলে ইসরায়েল দাবি করেছে।নিহতদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক নারী ও শিশু রয়েছে।ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো বহু মানুষ আটকা পড়ে আছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
মানবিক সংকট চরমে:
হাসপাতালগুলোতে আহতদের জন্য যথেষ্ট চিকিৎসা সরঞ্জাম নেই।ইসরায়েল বুধবার থেকে স্থল অভিযানও শুরু করেছে, যা পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তুলেছে।হামাস নতুন ইসরায়েলি হামলাকে “যুদ্ধবিরতির চুক্তির ভয়ংকর লঙ্ঘন” বলে আখ্যায়িত করেছে।
দলটি জানিয়েছে, তারা এখনো জানুয়ারিতে স্বাক্ষরিত চুক্তি মানতে প্রস্তুত, তবে বৃহস্পতিবার তারা ইসরায়েলের দিকে রকেট হামলা চালিয়েছে, যা যুদ্ধবিরতির পর প্রথমবারের মতো হামাসের প্রত্যক্ষ সামরিক প্রতিক্রিয়া।ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে যদি হামাস জিম্মিদের মুক্তি না দেয়, তাহলে ইসরায়েল গাজার আরও অংশ দখল করবে এবং সেখানে স্থায়ীভাবে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করবে।তিনি বলেন, “আমি সেনাবাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছি নতুন এলাকা দখল করতে, সেখানকার জনগণকে সরিয়ে দিতে এবং গাজার চারপাশে নিরাপত্তা অঞ্চল সম্প্রসারিত করতে।”
এদিকে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, “আমি আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই: এটি কেবল শুরু মাত্র।”গাজার ২০ লাখেরও বেশি মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছে। হাসপাতাল ও চিকিৎসা ব্যবস্থা প্রায় সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে, যার ফলে আহতদের চিকিৎসা দেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে।ইসরায়েল গাজার দিকে মানবিক সহায়তা প্রবেশ বন্ধ করে দিয়েছে, যার ফলে খাদ্য সংকট ও দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। সর্বশেষ হামলার কারণে ত্রাণ বিতরণও বন্ধ হয়ে গেছে।
যুদ্ধবিরতি আলোচনা ভেস্তে গেছে
যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা স্থবির হয়ে গেছে। জানুয়ারির চুক্তি অনুযায়ী, মার্চের ১ তারিখে ইসরায়েলকে গাজা থেকে সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করতে হতো এবং যুদ্ধের স্থায়ী সমাপ্তি ঘটাতে হতো। এর বিনিময়ে হামাস জীবিত সকল জিম্মিকে মুক্তি দিত।
কিন্তু এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়নি। ইসরায়েলের দাবি, হামাস মার্কিন মধ্যস্থতাকারীদের দেওয়া দুটি প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেএবং ইসরায়েলি সৈন্য ও জনগণের ওপর আক্রমণের হুমকি দিয়েছে।
আপনি কি চান যে আমি আরও বিস্তারিতভাবে এই সংবাদটি উপস্থাপন করি? আপনি কি বিশেষ কোনো দিক নিয়ে আরও তথ্য চান—যেমন রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া, মানবিক সংকট, আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া, সামরিক কৌশল, বা ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা?
আমি চাইলে বিশ্ব নেতাদের প্রতিক্রিয়া, জাতিসংঘের ভূমিকা, আন্তর্জাতিক আইনের দৃষ্টিভঙ্গি, এবং যুদ্ধের দীর্ঘমেয়াদী প্রভাবনিয়েও আলোচনা করতে পারি। আপনি কি চান আমি ইতিহাস ও ভূরাজনৈতিক দিক নিয়েও বলি, যাতে এই সংঘাতের প্রেক্ষাপট আরও স্পষ্ট হয়?
আপনার পছন্দ অনুযায়ী আমি গভীর বিশ্লেষণ যোগ করতে পারি!
- গাজার দক্ষিণে ব্যাপক হামলা: ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (IDF) জানিয়েছে যে তারা গাজার দক্ষিণাঞ্চলে বিশেষ অভিযান চালাচ্ছে, যেখানে হামাসের শীর্ষ নেতা সালাহ আল-বারদাউইলকে হত্যা করা হয়েছে।
- সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ: ইসরায়েল গাজা-মিশর সীমান্ত নিয়ন্ত্রণে নিতে চায়, যা বর্তমানে মিশরের সাথে চুক্তি অনুযায়ী পরিচালিত হয়।
- নতুন সামরিক পরিকল্পনা: ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ বলেছেন, গাজার নতুন অঞ্চল দখল করা হবে এবং সেখানে দীর্ঘমেয়াদে ইসরায়েলি বাহিনী থাকবে।