সিংগাবড়ুনা ইউনিয়নের পরিষদে চেয়ারম্যান ফখরুজ্জান কালুর বিরুদ্ধে নানা দূর্নীতির অভিযোগ।
শেরপুর প্রতিনিধি:
সরেজমিনে জানা যায় সিংগাবড়ুনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো: ফখরুজ্জামান কালু তার আওয়ামিলীগ পদমর্যাদা ব্যবহার করে ইউনিয়ন পরিষদের বিভিন্ন সদস্যের সাথে দূরব্যবহার, অকথ্য ভাষায় গালাগালি, ও হুমকি ধামকি দিয়ে তহবিল বণ্টন ও উন্নয়ন প্রকল্পে একক অধিপত্য বিস্তার করে নানা রকম সুবিধা ভোগ করে আসছিলো । এ ধরনের আচরণ ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও সমতার পরিপন্থী হয়ে উঠেছে এবং পরিষদের অভ্যন্তরে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করছে।
ইউপি সদস্যদের অভিযোগের ভিত্তিতে জানা যায়, চেয়ারম্যান ফখরুজ্জামান কালু আওয়ামীলীগ এর প্রভাব ঘাটিয়ে নানা দূর্নীতি জড়িয়ে পড়ছিলেন, ইউনিয়নবাসী কোন কাজের জন্য পরিষদে গেলে আগে টাকা পরে কাজ করে দিতেন, যারা আওয়ামীলীগ এর বিরোধী ছিলেন তারা পরিষদে গেলে তাদের কে প্রকাশ্যে অপমান করা হতো। যে সব জায়গায় জনগণের ভোগান্তি ও প্রয়োজনীয়তা বেশি, সেসব প্রকল্পগুলো দীর্ঘদিন ধরে অগ্রাহ্য করে রাখা হয়। এই বৈষম্যপূর্ণ আচরণের ফলে উন্নয়ন কাজগুলোতে সমানভাবে নিশ্চিত করা সম্ভব হয়ে উঠেনি এবং জনসাধারণের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিচ্ছে।
ইউপি সদস্য সুমন মিয়া বলেন, আমরা বিগত ৩ বছর ইউনিয়ন পরিষদে ঢুকতে পারি নাই, আমাদের কে প্রকাশ্যে নিষেধ করে তাড়িয়ে দেয়া হয়েছে, ফখরুজ্জামান চেয়ারম্যান তিনি তার মনগড়া ভাবে ইউনিয়ন পরিষদ চালিয়েছেন, বর্তমানে ছাত্র হত্যা মামলায় তিনি জেলে থাকার কারনে আমরা প্যানেল চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান মিঠুল এর আওতায় পরিষদে বসে জনকল্যাণ কাজ করে, জনগন এর উন্নয়ন করার সুযোগ পেয়েছি, জনগন এখন আওয়ামী ফাস্যিবাদ দোসর দের জনপ্রতিনিধি পদে দেখতে চাই না। আমাদের প্যানেল চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান মিঠুল, জনকল্যান কাজ করে খুব প্রশংশিত হচ্ছেন, তিনি স্বচ্ছ, জবাদিহিতা ও নিষ্ঠার সাথে জনগণের সেবা করে যাচ্ছেন, কিন্তু তাকে মৌখিক ভাবে দায়িত্ব দেয়ার কারনে তিনি এলাকার উন্নয়নের বাধাগ্রস্ত হচ্ছেন। আমাদের ইউনিয়নের জনগন ও ইউপি সদস্যদের একটায় দাবী, দূর্নীতিগ্রস্ত চেয়ারম্যান কে অপসারন করে, মোস্তাফিজুর রহমান মিঠুল কে পূর্নদায়ীত্ব দেয়া হোক।
ইউপি সদস্য সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ফখরুজ্জামান চেয়ারম্যানের এমন আচরণ আমাদের ইউনিয়ন পরিষদের কাজের পরিবেশকে নষ্ট করে রেখে গেছে, জনগণ তার কাছে কোন সুবিধা পাই নাই, তিনি ইউপি সদস্যদের কোন মূল্যায়ন করেনি, ইউপি সদস্যদের হুমকি ধামকি দিয়ে বিভিন্ন প্রকল্পে সাইন করিয়ে নিয়ে তার কার্য হাসিল করেতেন, তিনি হত্যা মামলায় জেলে থাকার কারণে এলাকাতে স্বস্তি বিরাজ করছে৷ ইউপি সদস্য আব্দুল খালেক বলেন, আওয়ামী দোসর ফখরুজ্জামান চেয়ারম্যান কে জনগন আর দেখতে চাই না, তার একক অধিপত্যে জনগন বিমুখ ছিলেন। এখন তিনি জেলে থাকার কারণে জনগণ পরিষদ মুখি হয়েছেন, আমাদের প্যানেল চেয়ারম্যান খুব সুন্দর ও সুষ্ঠ ভাবে পরিষদ পরিচালিত করছে।
ইউপি সদস্য আফিজল হক বলেন, আমরা ইউপি সদস্য নির্বাবাচিত হবার পরেও পরিষদে আমাদের বসতে দেয়া হয়নি, আমাদের উপর বেষম্য করা হয়েছে,জনগণ আর দূর্নীতি পরায়ণ চেয়্যারমান কে পরিষদে দেখতে চাই না।
মহিলা সংরক্ষিত ইউপি সদস্য জুনিয়া বেগম বলেন, তৃণমূল পর্যায়ে উন্নয়ন কার্যক্রমে ন্যায্যতা ও স্বচ্ছতা প্রতিষ্ঠিত করতে আমাদের প্যানেল চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান এর জুড়ি নেই, তার অক্লান্ত প্ররিশ্রমে এই ইউনিয়নের জনগণ নানা রকম সুবিধা পেয়ে যাচ্ছেন, কিন্তু আওয়ামী দোসর হত্যা মামলার আসামী ফখরুজ্জামান কালু তার একক অধিপত্য বিস্তার করে ইউনিয়ন পরিষক কে অশান্ত করে রেখে গেছিলো। আমরা তাকে অবাঞ্চিত করে প্যানেল চেয়ারমান এর হাত ধরে জনকল্যান কাজ করে যেতে চাই।
স্থানীয় জনগন ও ইউপি সদস্যরা দাবী করে বলেন, ফখরুজ্জামান চেয়ারম্যান ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর ও দূর্নীতি পরায়ন থাকার কারণে বর্তমানে তিনি হত্যা মামলায় কারাগারে রয়েছেন। তার অবর্তমানে প্যানেল চেয়ারম্যান মোস্তাফিজ কে মৌখিক ভাবে দায়িত্ব হয়েছে৷ কিন্তু প্যানেল চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমানকে পূর্ণাঙ্গ ক্ষমতা না দেওয়ার কারণে এলাকার উন্নয়ন প্রকল্পগুলোতে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে। চেয়ারম্যানের দায়িত্বে প্রয়োজনীয় ক্ষমতা না থাকলে উন্নয়ন পরিকল্পনাগুলো কার্যকরভাবে পরিচালনা করা সম্ভব হয় না, যা এলাকার সামগ্রিক উন্নয়নকে ব্যাহত করছে। স্থানীয় জনগণও এর ফলে সঠিক সেবা এবং অবকাঠামোগত উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এই সমস্যার সমাধানে, কর্তৃপক্ষকে প্যানেল চেয়ারম্যানকে প্রয়োজনীয় ক্ষমতা প্রদানের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করতে হবে। এর ফলে স্থানীয় প্রশাসন আরও কার্যকরভাবে উন্নয়ন প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করতে পারবে এবং জনগণ এর সুবিধা পাবে।