কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি:
পবিত্র মাহে রমজানের ইফতারিতে রোজাদারদের পছন্দের তালিকায় প্রথমেই রয়েছে ভাজাপোড়া জাতীয় খাবার। আর এরজন্য প্রয়োজন সয়াবিন তেল। তবে রমজানের প্রায় মাস খানেক আগে থেকেই বাজারে তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে বোতলজাত সয়াবিন তেলের। এখনো সংকট কাটেনি মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের খুচরা ও পাইকারি বাজারে সয়াবিন তেলের। উপজেলার কয়েকটি বাজার ঘুরেও বোতলজাত সয়াবিন তেল কিনতে পারছেন না ক্রেতারা। আর কবে নাগাদ তেল বাজারে সরবরাহ ঠিক হবে, সেই তথ্যও দিতে পারছেন না বিক্রেতারা। তবে খোলা সয়াবিন তেল পাওয়া যাচ্ছে অতিরিক্ত দামে। সরেজমিনে কমলগঞ্জ উপজেলার পতনঊষার, শমশেরনগর, আদমপুর, মুন্সীবাজার ইউনিয়নের বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায় বোতলজাত সয়াবিন তেলের তীব্র সংকট। ক্রেতারা রোজার খরচ একসাথে ক্রয় করলেও তেল না পেয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন। অনেকেই এক বাজার থেকে অন্য বাজারে তেলের জন্য ছোটাছুটি করছেন তবুও তেল সংগ্রহ করতে পারেননি। কেউ সয়াবিন তেল না পেয়ে বাধ্য হয়ে অস্বাস্থ্যকর তেল কিনে নিচ্ছেন। আর দুই এক দোকানে বোতলজাত তেল পাওয়া গেলেও নির্ধারীত মূল্যের চেয়ে লিটার প্রতি ২৫ -৩০ টাকা বেশি দিয়ে ক্রয় করছেন।
ক্রেতারা জানান, প্রতি বছর রমজান মাস আসলেই সবকিছুর মূল্য বৃদ্ধি পায়। শুধু মূল্য নয় অনেক পন্য সামগ্রিই আছে যা টাকা দিয়েও পাওয়া যায়না। বোতলজাত সয়াবিন তেল টাকা দিয়েও পাওয়া যাচ্ছেনা। তেলের এতো সংকট এর আগে কখনো দেখা যায়নি। এছাড়া পাম তেলের দাম লিটার প্রতি ১০-১৫ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। কমলগঞ্জ উপজেলার সাইফ আহমেদ নামে এক ক্রেতা জানান, বাজার বোতলজাত সয়াবিন পাওয়া যায়নি। ৫ টা দোকান ঘুরে একটি দোকানে ১ লিটার তেল পেয়েছি। তাও আবার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে ২০ টাকা বেশি দিয়ে। খোলা সয়াবিন তেল লিটার প্রতি ২০-৩০ টাকা দামে বিক্রি করছেন বিক্রেতারা। এ যেনো রোজা মাস আসলে আমাদের দেশে ব্যবসায়ীরা রাক্ষস হয়ে যান অতিরিক্ত মুনাফার জন্য। উপজেলার খুচার বিক্রেতারা জানান, গত ৩ মাস থেকেই বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেলের সংকট চলছে। প্রায় ১ মাস আগে তেলার দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। পাইকারি বাজার তেল কিনতে গেলে তারা সরাসরি নাই বলে জানিয়ে দেন। ফেব্রুয়ারি মাসে তেলের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। কোন ভাবেই ক্রেতাদের তেল দেওয়া যাচ্ছে না।শহীদনগর বাজারের মুদি দোকানের মালিক মাশরাফি বলেন, সয়াবিন তেল বাজারে না থাকায় বিক্রি করতে পারছিনা। তেল না থাকায় অনেক ক্রেতা দোকান থেকে চেলে যাচ্ছেন। এমন অভিযোগ আরও অনেক ব্যবসায়ী করেছেন।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মৌলভীবাজার জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো আল আমিন বলেন, বাজারে সয়াবিন তেলের কিছুটা সংকট রয়েছে। আশা করছি কয়েকদিনের মধ্যে এই সমস্যার সমাধান হবে। একই সাথে আমরা প্রতিদিন বাজার তদারকি অভিযান পরিচালনা করছি। যারা সয়াবিন তেল দোকানে রেখে ক্রেতাদেরকে নাই বলছেন তাদেরকেও জরিমানা করছি। আবার যারা অতিরিক্ত দামে বিক্রি করছেন এমন অভিযোগ পেলেও জরিমানা করছি।