মোঃ হামিদুর রহমান লিমন,ক্রাইম রিপোর্টারঃ
ঠাকুরগাঁও পৌরসভার রাস্তাগুলো এখন নাগরিকদের জন্য সবচেয়ে বড় দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় শহরের প্রধান প্রধান সড়ক থেকে শুরু করে অলিগলির বেশির ভাগ রাস্তাই খানাখন্দে ভরে গেছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই কোথাও জলাবদ্ধতা, কোথাও আবার কাদা-পানিতে রাস্তা চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন অফিসগামী মানুষ, শিক্ষার্থী, রিকশাচালক ও সাধারণ পথচারীরা।
সরেজমিন দেখা গেছে, পৌরসভায় রাস্তা রয়েছে ১৩৫ কিলোমিটার। এর মধ্যে ৮৫ কিলোমিটার পাকা রাস্তা। তবে এর ৮০ শতাংশই এখন বেহাল। ঠাকুরগাঁও জেলা সদরের সত্যপীর ব্রিজ থেকে চৌরাস্তা, বরুনাগাঁও, গোয়ালপাড়া, হাজিপাড়া, স্বর্ণকারপট্টি থেকে ফাড়াবাড়ি বাসস্ট্যান্ড সহ শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে একটু হাঁটলেই চোখে পড়ে ভাঙা রাস্তা আর গর্ত। রাস্তার কোথাও পিচ উঠে গেছে, কোথাও আবার ইটের খোয়া বের হয়ে এসেছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই এসব গর্তে পানি জমে চলাচলের অবস্থা আরও শোচনীয় হয়ে পড়ে। পৌর বাসিন্দা মোস্তাক আহমেদ বলেন, ‘শহরের রাস্তা দিয়ে চলাফেরা করা কষ্টকর হয়ে গেছে। একটু অসাবধান হলেই পড়ে গিয়ে ব্যথা পাওয়া স্বাভাবিক ব্যাপার হয়ে গেছে।’
কলেজ-শিক্ষার্থী মাহমুদা খাতুন বলেন, ‘আমরা প্রতিদিন এই রাস্তায় চলাচল করি। বর্ষায় কাদা আর শুকনো মৌসুমে ধুলো- দুই সময়েই কষ্ট পেতে হয়। রাস্তাগুলো দ্রুত সংস্কার করা দরকার।’
রিকশাচালক ইসলাম বলেন, ‘এ রাস্তা দিয়ে রিকশা চালাতে অনেক কষ্ট হয়। মানে রোজ গাড়ি নষ্ট হওয়া। প্রতিদিনই যাত্রীদের ঝুঁকি নিয়ে রিকশা চালাতে হয়।’অফিসগামী কর্মচারী সাদেক হোসেন বলেন, ‘রাস্তার অবস্থা এত খারাপ যে গাড়ি চালানোই মুশকিল। রিকশায় যাতায়াত তো দূরের কথা, মোটরসাইকেল নিয়েও এই রাস্তা দিয়ে যাওয়া যায় না।’
পৌরসভার এক কর্মকর্তার দাবি, অর্থসংকটের কারণে এতদিন রাস্তা সংস্কার করা সম্ভব হয়নি। তবে এবার বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে ৩৬০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে ৩৭ কোটি টাকার কাজ চলতি মাসেই শুরু হবে। ঠাকুরগাঁও পৌরসভার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রশাসক ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সরদার মোস্তফা শাহিন বলেন, ‘আমরা দ্রুত গুরুত্বপূর্ণ কিছু রাস্তার কাজ শুরু করব। ইতোমধ্যে প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। আশা করি, কাজ শেষ হলে মানুষের দুর্ভোগ অনেকটাই কমবে।’প্রতিশ্রুতি অনেকবারই দেওয়া হয়েছে, কিন্তু বাস্তবে তার কতটুকু বাস্তবায়ন হবে, সেটাই এখন দেখার বিষয়। পৌরবাসীর একটাই দাবি, যত দ্রুত সম্ভব রাস্তাগুলো সংস্কার করা হোক। উন্নয়ন যেন শুধু কাগজে-কলমে সীমাবদ্ধ না থেকে বাস্তবেও দৃশ্যমান হয়।