আজ ২১শে ফেব্রুয়ারি, মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। এ দিনটি বাঙালি জাতির জন্য এক গৌরবময় ও শোকাবহ দিন, যেদিন মাতৃভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছিলেন সালাম, রফিক, বরকত, জব্বারসহ নাম না জানা অনেক ভাষাসৈনিক।
একুশে ফেব্রুয়ারি মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস আজ । মাতৃভাষা আন্দোলনের ৭২ বছর পূর্ণ হবে এদিন।
ভোরের প্রথম আলো ফোটার আগেই রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী জাতীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর সর্বস্তরের মানুষ, রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন, শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনগণ কালো ব্যাজ ধারণ করে শহীদ মিনারের দিকে ছুটে যান, হাতে ফুল নিয়ে শ্রদ্ধা জানান ভাষা শহীদদের।
সারাদেশে আজ পালিত হচ্ছে দিনটি যথাযোগ্য মর্যাদায়। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সরকারি ও বেসরকারি দপ্তর, সাংস্কৃতিক সংগঠন ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান দিনব্যাপী আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে।
বাঙালি জাতির জন্য এই দিবসটি হচ্ছে চরম শোক ও বেদনার। অন্যদিকে মায়ের ভাষা বাংলার অধিকার আদায়ের জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত। যে কোন জাতির জন্য সবচেয়ে মহৎ ও দুর্লভ উত্তরাধিকার হচ্ছে মৃত্যুর উত্তরাধিকার-মরতে জানা ও মরতে পারার উত্তরাধিকার। ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি শহিদরা জাতিকে সে মহৎ ও দুর্লভ উত্তরাধিকার দিয়ে গেছেন।
বাংলা ভাষার জন্য আত্মত্যাগের এই দিন শুধু বাংলাদেশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং সারা বিশ্বে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে। ইউনেস্কোর স্বীকৃতিতে ২০০০ সাল থেকে দিনটি বিশ্বজুড়ে ভাষা বৈচিত্র্য ও মাতৃভাষার গুরুত্বের প্রতীক হিসেবে উদযাপিত হয়ে আসছে।
শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি সেই অকুতোভয় শহীদদের, যাঁদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি মাতৃভাষায় কথা বলার অধিকার। তাঁদের স্মৃতির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা।