যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিভিন্ন সময় ভুল বানানে বাংলা বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ ও পরিপত্র বিতরণের প্রতিবাদ এবং তা সংশোধনের দাবি জানিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
শনিবার নিউ ইয়র্কে এক মতবিনিময় সভায় সিটি অফিস, স্কুল ও হাসপাতালসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ‘শুদ্ধ বাংলা’ প্রচলনে প্রবাসীদের ঐক্যের আহ্বান জানায় ‘গাইবান্ধা সোসাইটি অব আমেরিকা’।
আয়োজকরা জানান, তিন বছর আগে থেকে তারা এই চেষ্টা চালাচ্ছেন। গণস্বাক্ষর সংগ্রহের পর সংশ্লিষ্ট দপ্তরে স্মারকলিপিও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু শুদ্ধ বানানের প্রচলন এখনো হয়নি।
দীলিপ কুমারের সঞ্চালনায় সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি সঞ্জীবন সরকার। প্রধান অতিথি ছিলেন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ডিস্ট্রিক্ট লিডার দীলিপ নাথ।
মেয়র অফিসের ভাষা পরিষেবা কমিটির সদস্য দীলিপ নাথ বলেন, “দুই দশকেরও বেশি সময় দেন-দরবারের পর আরো ১৭টি ভাষার সঙ্গে বাংলাকে সিটি অফিস, বোর্ড অব ইলেকশনের অফিস, স্কুল-হাসপাতালসহ গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরে অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব হয়েছে। শুরুতে বানান ও বাক্য ভুলের সীমা ছিল না। প্রথমদিকে তহবিল ছিল না ভুল বানান ধরিয়ে দিতে কিংবা তা শুদ্ধভাবে পরিবেশনের কর্মচারী নিয়োগের জন্য। তবে সময়ের পরিক্রমায় শিক্ষা বিভাগ থেকে যেসব বিজ্ঞপ্তি এখন বিতরণ করা হচ্ছে সেগুলোতে ভুলের মাত্রা অনেকটাই কমেছে।”
দিলীপ নাথ উল্লেখ করেন, ভাষা শুদ্ধভাবে সর্বত্র ব্যবহারের জন্য পূর্ণকালীন অনুবাদক দরকার। এজন্য প্রয়োজন তহবিল। সেটি মঞ্জুর করতে হয় স্টেট পার্লামেন্ট থেকে। স্টেট সিনেটর ও অ্যাসেম্বলিম্যানদের সঙ্গে দেন-দরবার জোরদার করার মধ্য দিয়ে তহবিল সমস্যার সমাধান সম্ভব।

শিক্ষা বিভাগে বাংলা অনুবাদক হিসেবে কর্মরত মিনহাজ আহমেদ সাম্মু বলেন, “শুরুতে লোকবল ছিল না বললেই চলে। সে সময় শিক্ষা বিভাগে ৯টি ভাষার অনুবাদক ছিলেন, তার মধ্যে বাংলার জন্য ছিলাম একমাত্র আমি। এরপর চারজন নিয়োগ করা হলেও প্রয়োজনের তুলনায় তা একেবারেই কম।”
বীর মুক্তিযোদ্ধা লাবলু আনসার বলেন, “ভুল বানানে অতিষ্ঠ কমিউনিটির প্রতিক্রিয়া কয়েক বছর আগে সিটি কম্পট্রোলার ব্র্যাড লেন্ডারের দৃষ্টিতে এনেছিলাম। তারও আগে এডুকেশন ডিপার্টমেন্টে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিলাম শুদ্ধ বানানে বিজ্ঞপ্তি বিতরণের দাবিতে। কতটা অগ্রগতি হয়েছে তা আজকের আলোচনাতেই অনুমান করা যাচ্ছে।”
গাইবান্ধা সোসাইটির এ দাবি আদায়ে নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশ কনস্যুলেটও সহায়তা দেবে বলে উল্লেখ করেন কনস্যুলেটের হেড অব চ্যান্সেরি ইশরাত জাহান।
গাইবান্ধা সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক রেজা রহমান বলেন, “ভুল বানান দূর করার আহ্বানে আমরা আবারো স্মারকলিপি দেব। আশা করি কমিউনিটির অন্যসব সংগঠন ও বাংলাদেশ সোসাইটি বিষয়টিকে গুরুত্ব দেবে।”