মধ্যরাতে শেষ হচ্ছে নিষেধাজ্ঞা, ইলিশ শিকারে নামবে ভোলার ২ লক্ষাধিক জেলে
ভোলা প্রতিনিধি:
ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে ‘মা ইলিশ’ রক্ষায় দীর্ঘ ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হবে আজ মধ্যরাতে। নিষেধাজ্ঞা শেষে ভোলার মেঘনা-তেঁতুলিয়া নদীতে মাছ শিকারে নামার জন্য প্রস্তুত জেলার ২ লক্ষাধিক জেলে। ইতোমধ্যে তারা নৌকা-জালসহ অন্যান্য সামগ্রী প্রস্তুত করে রেখেছেন। অন্যদিকে, নিষেধাজ্ঞার শেষ দিনেও জেলার দুটি নদীতে প্রশাসনকে টহল দিতে দেখা গেছে।
রোববার (৩ নভেম্বর) সকাল থেকে ভোলার মৎস্য ঘাটগুলো ঘুরে দেখা যায়, জেলেদের মধ্যে বেশ আনন্দ উদ্দীপনা বিরাজ করছে। তারা জাল ট্রলার মেরামতের পাশাপাশি সময়ের অপেক্ষা রয়েছেন। জেলে পল্লীগুলোও সরগরম হয়ে উঠেছে।
জেলেদের সাথে কথা বলে জানা যায়, সরকারের দেওয়া ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা তারা যথাযথভাবে পালন করেছেন। তবে এ সময় তাদের জীবিকা নির্বাহ করতে হিমশিম খেতে হয়েছে। নিষেধাজ্ঞার সময়ে জেলেদের পূর্নবাসনের চাউল নিয়েও ব্যাপক অনিয়মের কথা শোনা গেছে। প্রকৃত জেলেরা এ চাউল থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।
ভোলার খাল এলাকার জেলে সালাউদ্দিন মাঝি জানান, নিষেধাজ্ঞার সময়ে আমরা নদীতে যেতে পারিনি।পরিবার পরিজন নিয়ে খুব কষ্টে দিন পার করেছি। এনজিওর কিস্তি ও মহাজনের দাদনের বোঝা মাথায় নিয়ে আজ মধ্যরাত থেকে নদীতে যাবো। ইতিমধ্যে জাল নৌকা ও ইঞ্জিন মেরামতসহ সকল কিছু প্রস্তুত করে রেখেছি।
একই এলাকার জসিম মাঝি জানান, প্রকৃত জেলে হয়েও আমরা সরকারের সহযোগিতার চাউল পাইনি। ধার দেনা করে এই ২২ দিন সংসার চালিয়েছি।আজ রাতে নদীতে যাবো।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেব জানান, এবারের নিষেধাজ্ঞা সফল হয়েছে। নিষেধাজ্ঞার ২১ দিনে জেলায় ৬৪২টি অভিযান পরিচালনা করা হয়। এরমধ্যে ১৩৫টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়। ১৭৫টি মামলায় ৯২ জেলেকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়।
তিনি আরো জানান, যেহেতু এবারের অভিযান সফল হয়েছে, সেহেতু আমরা আশা করছি ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি হবে। নিষেধাজ্ঞা কালীন সময়ে নদীতে পানির পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছিল এবং প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়েছে। যা ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি করে।
২০২৪-২৫ অর্থবছরে জেলায় ইলিশ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লক্ষ ৮৫ হাজার টন। যা বিগত, ৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। তবে এবছর ইলিশ উৎপাদন আরো বৃদ্ধি পাবে। নিষেধাজ্ঞা শেষে জেলেদের জালে ঝাঁকে ঝাঁকে রুপালী ইলিশ ধরা পড়বে বলেও তিনি আশা করছেন।