সাতক্ষীরায় নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা

সাতক্ষীরা :

সাতক্ষীরার কলারোয়া থানায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মজনু চৌধুরীর নেতৃত্ব পুলিশের ওপর  হামলায় ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় চার জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (৩০ মে)  রাত ৮ টার দিকে কলারোয়া থানা চত্বরে পুলিশের উপরে হামলার এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, উপজেলা পরিষদ নির্বাচন কেন্দ্রিক দু-গ্রুপের দ্বান্ডের কারনে নির্বাচন পরবর্তী একটি অভিযোগের ভিত্তিতে ডাকা সালিসে বসার আগেই মজনু চৌধুরীর নেতৃত্বে  পুলিশ সদস্যের উপরে এ হামলা চালায়। আহত পুলিশ সদস্যদের উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। আহত পুলিশ সদস্য হলেন, এএসআই আসলাম, কনস্টেবল  মিলন, ফয়সাল ও মিজান।

কলারোয়ার জুঁইখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম জানান, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিজয়ী প্রার্থী আমিনুল ইসলাম লাল্টুর পক্ষে জুঁইখালী ইউনিয়নে তারা একটি বিজয় মিছিল বের করেছিলেন।  এ সময় নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী এস.এম আলতাব হোসেন লাল্টু’র কর্মী সমর্থকওই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান অজিয়ার চেয়ারম্যান, মিজান সরদার ও বাবু হোসেন। এটা নিয়ে তাদের মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনা তৈরি হয়। একপর্যায়ে দু’পক্ষের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে ধাক্কা-ধাক্কিও হয়। পরবর্তীতে অজিয়ার রহমান থানায় তাদের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ করেন।

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিজয়ী প্রার্থী আমিনুল ইসলাম লাল্টুর ভাগ্নে ইমরান সরদার জানান, থানায় করা অভিযোগের ভিত্তিতে দু’পক্ষই থানা চত্বরে হাজির হন। বিজয়ী চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম লাল্টু ও পরাজিত প্রার্থী এসএম আলতাপ হোসেন লাল্টুসহ  দু’পক্ষের কর্মী-সমর্থকরা এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন। শালিস শুরু হওয়ার আগেই উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মজনু চৌধুরী কলারোয়া থানার  ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলামকে উদ্দেশ্য করে আস্ফালন করেন। ওসি তার প্রতিবাদ করলে মজনু চৌধুরী ও তার ছেলে আরিফ চৌধুরী তার দিকে তেড়ে যান। এ সময় পুলিশ সদস্যরা ওসির পক্ষ নিয়ে প্রতিবাদ করলে মজনু চৌধুরী ও তার ছেলে আরিফ চৌধুরীর নেতৃত্বে পুলিশ সদস্যদেরকে বেধড়ক কিল,চড় ও ঘুষি মেরে আহত করেন।

পুলিশের একটি সূত্র জানান ঘটনাস্থল থেকে, মজনু চৌধুরীকে আটক করা হয়েছে। এ বিষয়ে সাতক্ষীরা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মীর আসাদুজ্জামান বলেন, মজনু চৌধুরীকে আটকের বিষয়ে এখনই কিছু বলা যাচ্ছেনা। তবে চার পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এই কর্মকর্তা।

উল্লেখ : এর আগে ২৯ মে  উপজেলা নির্বাচন চলাকালীন সময়ে বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে চন্দনপুর ইউনিয়নের সুলতানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে আসার সময় ভোটারদেরকে বাঁধা প্রদান করে আনারস প্রতিকের চেয়ারম্যান প্রার্থী এস.এম আলতাব হোসেন লাল্টু’র কর্মী সমর্থকরা উপজেলা চেয়ারম্যান মো.আমিনুল ইসলাম লাল্টু’র ঘোড়া প্রতিকের কর্মী সমর্থকদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটায়।

এ ঘটনায় নজরুল ইসলামসহ ৩ জন আহত হয়। এ সময় ছবি তুলতে গেলে গণমাধ্যম কর্মীদের উপরেও চড়াও হয় আনারস প্রতীকের কর্মী সমর্থকরা। এক পর্যায়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আনারাস প্রতিকের কর্মী বয়ারডাঙ্গা গ্রামের সাঈদ হোসেন, সুলতানপুর গ্রামের আরিফুল ইসলাম,বাঁধন হোসেন ও আকাশ হোসেনসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে।

এর আগে বোয়ালিয়া কেন্দ্রে ঘোড়া প্রতীকের সমর্থকদের উপর লক্ষ করে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে আনারস প্রতীকের কর্মী সমর্থকরা। এ সময় একজন আহত হয়।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

বিষয়: * নির্বাচন
সর্বশেষ সংবাদ