জুলাই মাসে ৫১১ টি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৫৭৩ জন ও আহত ১২৫৬

সৈয়দ আমিরুজ্জামান, বিশেষ প্রতিনিধি:
ঢাকা, ০৭ আগস্ট ২০২৩: গত জুলাই মাসে দেশে ৫১১ টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫৭৩ জন নিহত ও ১২৫৬ জন আহত হয়েছেন বলে এক গবেষণা প্রতিবেদনে প্রকাশ। এ গবেষণায় বলা হয়, নিহতের মধ্যে নারী ৯৪, শিশু ৭৬। ১৮৮ টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত ১৮৩ জন, যা মোট নিহতের ৩১.৯৩ শতাংশ। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার ৩৬.৭৯ শতাংশ। দুর্ঘটনায় ১৪৬ জন পথচারী নিহত হয়েছে, যা মোট নিহতের ২৫.৪৭ শতাংশ। যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ৭৮ জন, অর্থাৎ ১৩.৬১ শতাংশ।
এই সময়ে ১৪টি নৌ-দুর্ঘটনায় ১৬ জন নিহত, ২৩ জন আহত এবং ১১ জন নিখোঁজ রয়েছেন। ৩৩টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ৩২ জন নিহত এবং ১২ জন আহত হয়েছে। একই সাথে ১০ টি ছাগলের মৃত্যু হয়েছে। রোড সেফটি ফাউন্ডেশন ৯টি জাতীয় দৈনিক, ৭টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যমের তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে।
দুর্ঘটনায় যানবাহনভিত্তিক নিহতের চিত্র:
দুর্ঘটনায় যানবাহনভিত্তিক নিহতের পরিসংখ্যানে দেখা যায়- মোটরসাইকেল চালক ও আরোহী ১৮৩ জন (৩১.৯৩%), বাস যাত্রী ৪৯ জন (৮.৫৫%), ট্রাক-কাভার্ডভ্যান-পিকআপ-ট্রাক্টর-ট্রলি আরোহী ৩৬ জন (৬.২৮%), প্রাইভেটকার-মাইক্রোবাস-অ্যাম্বুলেন্স-জীপ আরোহী ২৩ জন (৪%), থ্রি-হুইলার যাত্রী (ইজিবাইক-সিএনজি-অটোরিকশা-অটোভ্যান-ম্যাক্সি-লেগুনা) ১০৩ জন (১৭.৯৭%), স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহনের যাত্রী (নসিমন-ভটভটি-টমটম-মাহিন্দ্র-লাটাহাম্বা) ২২ জন (৩.৮৩%) এবং বাইসাইকেল-প্যাডেল রিকশা-রিকশাভ্যান আরোহী ১১ জন (১.৯১%) নিহত হয়েছে।
দুর্ঘটনা সংঘটিত সড়কের ধরন:
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ বলছে, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ২০৮টি (৪০.৭০%) জাতীয় মহাসড়কে, ১৯৬টি (৩৮.৩৫%) আঞ্চলিক সড়কে, ৬১টি (১১.৯৩%) গ্রামীণ সড়কে, ৪২টি (৮.২১%) শহরের সড়কে এবং অন্যান্য স্থানে ৪টি (০.৭৮%) সংঘটিত হয়েছে।
দুর্ঘটনার ধরন:
দুর্ঘটনাসমূহের ৯৮টি (১৯.১৭%) মুখোমুখি সংঘর্ষ, ২১৭টি (৪২.৪৬%) নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে, ১৪৪টি (২৮.১৮%) পথচারীকে চাপা/ধাক্কা দেয়া, ৩৩টি (৬.৪৫%) যানবাহনের পেছনে আঘাত করা এবং ১৯টি (৩.৭১%) অন্যান্য কারণে ঘটেছে।
দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানবাহনসমূহ:
দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানবাহনের মধ্যে- ট্রাক-কাভার্ডভ্যান-পিকআপ-ট্রাক্টর-ট্রলি-লরি-ড্রামট্রাক-ফায়ার ব্রিগেড গাড়ি-লং ভেহিক্যাল-রোলার মেশিন গাড়ি ২৭.১৭%, মাইক্রোবাস-প্রাইভেটকার-অ্যাম্বুলেন্স-পাজেরো-জীপ ৪.৭৩%, যাত্রীবাহী বাস ১৯.৬১%, মোটরসাইকেল ২২.২০%, থ্রি-হুইলার (ইজিবাইক-সিএনজি-অটোরিকশা-অটোভ্যান-লেগুনা-টেম্পু-ম্যাক্সি-মিশুক) ১৮.১৫%, স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহন (নসিমন-ভটভটি-টমটম-মাহিন্দ্র-লাটাহাম্বা) ৩.৭২%, বাইসাইকেল-প্যাডেল রিকশা-রিকশাভ্যান ২.৩৬% এবং অজ্ঞাত গাড়ি ২.০২%।
দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানবাহনের সংখ্যা:
দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানবাহনের সংখ্যা ৮৮৭ টি। (বাস ১৭৪, ট্রাক ১৩৬, কাভার্ডভ্যান ৩১, পিকআপ ৩৮,  ট্রাক্টর ১৪, ট্রলি ৯, লরি ৩, ড্রাম ট্রাক ৩, তেলবাহী ভাউচার ১, লং ভেহিক্যাল ১, রোলার মেশিন গাড়ি ১, ফায়ার ব্রিগেডের গাড়ি ২, নির্মাণ সামগ্রীর ট্রাক ১, সিটি করপোরেশনের ময়লাবাহী ট্রাক ১, মাইক্রোবাস ১৯, প্রাইভেটকার ১৬, অ্যাম্বুলেন্স ২, জীপ ৩, পাজেরো ২, মোটরসাইকেল ১৯৭, থ্রি-হুইলার ১৬১ (ইজিবাইক-সিএনজি-অটোরিকশা-অটোভ্যান-লেগুনা-টেম্পু-ম্যাক্সি-মিশুক), স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহন ৩৩ (নসিমন-ভটভটি-টমটম-মাহিন্দ্র-লাটাহাম্বা), বাইসাইকেল-প্যাডেল রিকশা-রিকশাভ্যান ২১ এবং অজ্ঞাত গাড়ি ১৮ টি।
দুর্ঘটনার সময় বিশ্লেষণ:
সময় বিশ্লেষণে দেখা যায়, দুর্ঘটনাসমূহ ঘটেছে ভোরে ৩.৭১%, সকালে ২৪.২৬%, দুপুরে ২৬.০২%, বিকালে ১৯.৩৭%, সন্ধ্যায় ৬.৬৫% এবং রাতে ১৯.৯৬%।
দুর্ঘটনার বিভাগওয়ারী পরিসংখ্যান:
দুর্ঘটনার বিভাগওয়ারী পরিসংখ্যান বলছে, ঢাকা বিভাগে দুর্ঘটনা ৩৪.০৫%, প্রাণহানি ২৯.৬৬%, রাজশাহী বিভাগে দুর্ঘটনা ১৪.৪৮%, প্রাণহানি ১৩.৭৮%, চট্টগ্রাম বিভাগে দুর্ঘটনা ১৫.২৬%, প্রাণহানি ১৪.৬৫%, খুলনা বিভাগে দুর্ঘটনা ৮.৮০%, প্রাণহানি ৯.৯৪%, বরিশাল বিভাগে দুর্ঘটনা ৪.৮৯%, প্রাণহানি ৭.৫০%, সিলেট বিভাগে দুর্ঘটনা ৩.৯১%, প্রাণহানি ৫.৪১%, রংপুর বিভাগে দুর্ঘটনা ১২.১৩%, প্রাণহানি ১২.৫৬% এবং ময়মনসিংহ বিভাগে দুর্ঘটনা ৬.৪৫%, প্রাণহানি ৬.৪৫% ঘটেছে।
ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে। ১৭৪টি দুর্ঘটনায় ১৭০ জন নিহত। সিলেট বিভাগে সবচেয়ে কম ২০টি দুর্ঘটনায় ৩১ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। একক জেলা হিসেবে ঢাকা জেলা’য় সবচেয়ে বেশি ৪২টি দুর্ঘটনায় ৪০ জন নিহত হয়েছে। সবচেয়ে কম দুর্ঘটনা ঘটেছে শরীয়তপুর ও বান্দরবান জেলায়। এই ২টি জেলায় সামান্য মাত্রার ৫ টি দুর্ঘটনা ঘটলেও কোনো প্রাণহানি ঘটেনি। রাজধানী ঢাকায় ৩২টি দুর্ঘটনায় ২৯ জন নিহত এবং ৩৭ জন আহত হয়েছে।
নিহতদের পেশাগত পরিচয়:
গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, নিহতদের মধ্যে পুলিশ সদস্য ২ জন, নৌ-বাহিনীর সদস্য ১ জন, ফায়ার সার্ভিস সদস্য ৩ জন, বিভিন্ন স্কুল-কলেজ-মাদরাসার শিক্ষক ১১ জন, চিকিৎসক ২ জন, সাংবাদিক ৪ জন, আইনজীবী ২ জন, বিভিন্ন ব্যাংক-বীমা কর্মকর্তা ও কর্মচারী ৬ জন, খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা ২ জন, সাবরেজিস্ট্রি ক্লার্ক ১ জন, এনজিও কর্মকর্তা-কর্মচারী ৯ জন, ঔষধ ও বিভিন্ন পণ্যসামগ্রী বিক্রয় প্রতিনিধি ২৩ জন, স্থানীয় পর্যায়ের গরু ব্যবসায়ী, আম ব্যবসায়ী, ইট ব্যবসায়ী, চামড়া ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ী ৩২ জন, ইইপি চেয়ারম্যানসহ  স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা ১৪ জন, ইমাম ২ জন, ইলেক্ট্রিশিয়ান ১ জন, পোশাক শ্রমিক ৬ জন, রঙ মিস্ত্রি ২ জন, কাঠমিস্ত্রি ১ জন, মানসিক প্রতিবন্ধী ৩ জন এবং দেশের বিভিন্ন স্কুল-মাদরাসা-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬৮ জন শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে।
সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণসমূহ:
১. ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন; ২. বেপরোয়া গতি; ৩. চালকদের বেপরোয়া মানসিকতা, অদক্ষতা ও শারীরিক-মানসিক অসুস্থতা; ৪. বেতন-কর্মঘন্টা নির্দিষ্ট না থাকা; ৫. মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল; ৬. তরুণ-যুবদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো; ৭. জনসাধারণের মধ্যে ট্রাফিক আইন না জানা ও না মানার প্রবণতা; ৮. দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা; ৯. বিআরটিএ’র সক্ষমতার ঘাটতি; ১০. গণপরিবহন খাতে চাঁদাবাজি।
সুপারিশসমূহ:
১. দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ বৃদ্ধি করতে হবে; ২. চালকদের বেতন-কর্মঘন্টা নির্দিষ্ট করতে হবে; ৩. বিআরটিএ’র সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে; ৪. পরিবহন মালিক-শ্রমিক, যাত্রী ও পথচারীদের প্রতি ট্রাফিক আইনের বাধাহীন প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে; ৫. মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন বন্ধ করে এগুলোর জন্য আলাদা সার্ভিস রোড তৈরি করতে হবে; ৬. পর্যায়ক্রমে সকল মহাসড়কে রোড ডিভাইডার নির্মাণ করতে হবে; ৭. গণপরিবহনে চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে; ৮. রেল ও নৌ-পথ সংস্কার করে সড়ক পথের উপর চাপ কমাতে হবে; ৯. টেকসই পরিবহন কৌশল প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে; ১০. “সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮” বাধাহীনভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।
দুর্ঘটনা পর্যালোচনা ও মন্তব্য:
গত জুন মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় গড়ে প্রতিদিন নিহত হয়েছিল ১৭.২ জন। জুলাই মাসে গড়ে প্রতিদিন নিহত হয়েছে ১৮.৪৮ জন। এই হিসাবে জুলাই মাসে প্রাণহানি বেড়েছে ৭.৪৪ শতাংশ।
বর্তমানে অধিকাংশ দুর্ঘটনা ঘটছে যানবাহন নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে। অর্থাৎ অতিরিক্ত গতির কারণে দুর্ঘটনা ঘটছে। এই গতি নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে দুর্ঘটনা কমানো যাবে না। গতি নিয়ন্ত্রণের জন্য মোটিভেশনাল প্রশিক্ষণ যেমন দরকার, তেমনি দরকার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রযুক্তিগত সক্ষমতা অর্জন। যানবাহনে আধুনিক প্রযুক্তি সংযুক্ত করতে হবে, যার মাধ্যমে গতিসীমা নজরদারি ও রেকর্ড করা যায়। যানবাহনের চাকা ফেটে দুর্ঘটনার মাত্রা ক্রমেই বাড়ছে। জুলাই মাসে চাকা ফেটে যানবাহন নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ৯টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া রাজধানীর ফ্লাইওভারেও দুর্ঘটনা বেড়েছে। জুলাই মাসে হানিফ ফ্লাইওভারে ৪টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। পথচারী নিহতের ঘটনা ভয়াবহ মাত্রায় বাড়ছে। যানবাহনের বেপরোয়া গতি এবং পথচারীদের সড়ক ব্যবহারে অসচেতনতার কারণে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি বাড়ছে।
উল্লেখ্য, ট্রাক-কাভার্ডভ্যান-পিকআপসহ পণ্যবাহী ভারী যানবাহন ও মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা বাড়ছে। ভারী যানবাহনের অধিকাংশ চালক শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থ। তাদের চিকিৎসা ও প্রশিক্ষণ দরকার। মোটরসাইকেল চালকদের বিরাট অংশ কিশোর-যুবক। এরা বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালিয়ে নিজেরা দুর্ঘটনায় পতিত হচ্ছে এবং অন্যদের আক্রান্ত করছে। মোটরসাইকেল বেপরোয়া চালানোর সাথে রাজনৈতিক সংস্কৃতির সম্পর্ক রয়েছে। এটা বন্ধ করতে হবে। নিয়ন্ত্রিত গতিতে যানবাহন চালানোর জন্য গণমাধ্যমে উৎসাহমূলক জীবনমুখি প্রচারণা চালাতে হবে। একইসাথে গণপরিবহন সহজ, সাশ্রয়ী ও উন্নত করে, যানজট কমিয়ে মোটরসাইকেল নিরুৎসাহিত করতে হবে।
সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে “সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮” বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আন্তরিক হতে হবে। সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে মূলত সড়ক পরিবহন খাতের নৈরাজ্য ও অব্যবস্থাপনার কারণে। এই অবস্থার উন্নয়নে টেকসই পরিবহন কৌশল প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের বিকল্প নেই। এজন্য প্রয়োজন সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছা।
প্রতিবেদকের প্রতিক্রিয়া ও সুপারিশ:
এ বিষয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষক, ‘৯০-এর গণঅভ্যুত্থানের সংগঠক, বাংলাদেশ ছাত্রমৈত্রীর সাবেক কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, জাতীয় কৃষক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, বাংলাদেশের  ওয়ার্কার্স পার্টির মৌলভীবাজার জেলা সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য, সাপ্তাহিক নতুন কথা’র বিশেষ প্রতিনিধি, আরপি নিউজের সম্পাদক ও বিশিষ্ট কলামিস্ট কমরেড সৈয়দ আমিরুজ্জামান বলেন, “দুর্ঘটনার এই চিত্র বাংলাদেশের সড়কে নিরাপত্তাহীনতা ও সীমাহীন অব্যবস্থার চিত্রই প্রকাশ পেয়েছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গাড়ি চালনার প্রাথমিক শিক্ষা কোর্স (ব্যবহারিক সহ) চালু করাসহ দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ বৃদ্ধি করা, চালকের বেতন ও কর্মঘন্টা নির্দিষ্ট করা, বিআরটিএ’র সক্ষমতা বৃদ্ধি করা,পরিবহনের মালিক-শ্রমিক, যাত্রী ও পথচারীদের প্রতি ট্রাফিক আইনের বাধাহীন প্রয়োগ নিশ্চিত করা, মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল বন্ধ করে এগুলোর জন্য আলাদা পার্শ্ব রাস্তা (সার্ভিস রোড) তৈরি করা, সকল সড়ক-মহাসড়কে রোড ডিভাইডার নির্মাণ করা, যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণে প্রযুক্তির ব্যবহার করা, গণপরিবহনে চাঁদাবাজি বন্ধ করা, রেল ও নৌ-পথ সংস্কার ও সম্প্রসারণ করে সড়ক পথের উপর চাপ কমানো, গণপরিবহন উন্নত, সহজলভ্য ও সাশ্রয়ী করে মোটরসাইকেল ব্যবহার নিরুৎসাহিত করা, সড়ক, নৌ ও রেলপথে কঠোর মনিটরিং ব্যবস্থা নিশ্চিত করা, টেকসই পরিবহন কৌশল প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করাসহ সড়ক পরিবহন আইন ও বিধিমালা যথাযথ বাস্তবায়নে নতুন নতুন কৌশল ও ডিজিটালাইজড উদ্ভাবনকে কাজে লাগাতে হবে। সর্বোপরি ট্রাফিক ব্যবস্থাপনাকে আধুনিক ও ডিজিটাইজড করতে হবে।
এ বিষয়ে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স থেকে প্রায় দুই বছর আগে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে উন্নয়ন প্রজেক্ট পাঠানো হয়েছে, তা বাস্তবায়ন জরুরি। যাত্রী ও পথচারীদের ব্যক্তি নিরাপত্তা ও বিধি-বিধান প্রতিপালনে সচেতন হতে হবে। নাগরিকদের মধ্যে আইন ও শৃঙ্খলা মানার সংস্কৃতি সৃষ্টি করতে হবে। সাংবাদিক, সরকারি কর্মকর্তা, শ্রমিক নেতা, রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের যথাযথ আইন প্রয়োগে সহায়তা প্রদান করতে হবে।
প্রশাসন, পুলিশ, বিআরটিএ, সিটি করপোরেশন, সড়ক ও জনপথ, মালিক, চালক ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের যৌথ উদ্যোগে দুর্ঘটনা কমানো সম্ভব। সংশ্লিষ্ট সংস্থার প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে জাতীয়ভাবে সেল তৈরি করে এবং প্রতি বিভাগ ও জেলায় একইভাবে সেল গঠন করে নিয়মিত মনিটরিং ও পরামর্শ প্রদানের ব্যবস্থা থাকতে হবে এবং এ সেলকে সর্বদাই সক্রিয়ভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। এভাবেই সড়ক দুর্ঘটনা হ্রাস করা সম্ভব।”
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

বিষয়: * গবেষণা * দুর্ঘটনা * নিহত * যানবাহন