নির্বাচন হওয়া না হওয়া নিয়ে আ.লীগ-বিএনপি মুখোমুখি
সদরুল আইনঃ
দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ক্রমশ উত্তেজনা বাড়ছে।
প্রধান দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির মধ্যে রাজনৈতিক লড়াই এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে রাজনীতিতে এখন বড় প্রশ্ন হচ্ছে নির্বাচন হবে কি হবে না।
এই লড়াইকে আরও উস্কে দিয়েছে সাম্প্রতিক সময়ে ঘোষিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি। উভয় দলই মার্কিন ভিসা নীতিকে নিজেদের বিজয় হিসেবে দেখছে, নিজেকে এই ভিসা নীতির সুবিধাভোগী হিসেবে মনে করছে।
কিন্তু যাই হোক না কেন এই ভিসা নীতি যে রাজনীতিতে উত্তেজনা বাড়িয়েছে তা বলাই বাহুল্য।
আওয়ামী লীগ মনে করছে যে কৌশলগতভাবে যে কোনো মূল্যে একটি অবাধ-সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে। বিএনপি যদি শেষ পর্যন্ত এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ নাও করে তাহলে আওয়ামী লীগ অন্যান্য রাজনৈতিক দল যেমন জাতীয় পাটি, ১৪ দলের শরিক দল, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সহ ছোট ছোট দলগুলোকে নিয়ে গাজীপুরের মতো একটি অবাধ-সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ নির্বাচন করবে এবং এটি প্রতিষ্ঠিত করবে যে দলীয় সরকারের অধীনেও নির্বাচন অবাধ এবং সুষ্ঠু হয়।
অন্যদিকে বিএনপি চাইছে যে কোনো মূল্যে এই সরকারের অধীনে নির্বাচন ঠেকাতে। বিএনপির কোনো কোনো নেতা প্রকাশ্যে স্বীকার করছেন যে, সরকার যদি একবার নির্বাচন করে ফেলতে পারে তাহলে আর তাদের অস্তিত্ব থাকবে না।
যদিও বিএনপি বলছে যে, তারা নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচনে যাবে না কিন্তু তাদের আসল উদ্দেশ্য ভিন্ন। তাদের আসল উদ্দেশ্য হল এমন একটি অবস্থা তৈরি করা যেখানে এক-এগারোর মতো একটি অনির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় আসবে এবং আওয়ামী লীগ ক্ষমতা ছাড়া হবে।
এই অনির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় আসলে বিএনপির কতটা লাভ বা ক্ষতি হবে সেটার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল আওয়ামী লীগ ক্ষমতা ছাড়া হবে। আর এটিই হলো বিএনপির আসল উদ্দেশ্য। আর আওয়ামী লীগ ক্ষমতা ছাড়া হবে এটিই বিএনপির সবচেয়ে বড় লাভ।
এদিকে পশ্চিমা দেশগুলোও বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে তাদের তৎপরতা আরও বাড়াচ্ছে এবং নির্বাচনকে কেন্দ্র করেই এক ধরনের বিন্যাস শুরু করেছে।
নির্বাচনে ঘিরে তারা এমন সব নীতিমালা গ্রহণ করছে যেন নির্বাচন করাটাই কঠিন হয়ে পড়ে। এ রকম পরিস্থিতে যদি এমন হয় যে শেষ পর্যন্ত নির্বাচন না হয় তাহলে দেশে একটা সাংবিধানিক সংকট তৈরি হবে। যা একটি গণতান্ত্রিক দেশে মোটেও কাম্য নয়।
গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে নির্বাচন করা সাংবিধানিক বাধ্যবাধ্যকতা রয়েছে। গণতন্ত্র ধারায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে যেমন দেশের গণতন্ত্র রক্ষা পাবে তেমনি আওয়ামী লীগও সংকট থেকে উত্তরণ পাবে।
এখন দেখার বিষয় শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ একটি অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে সক্ষম হয় নাকি বিএনপি নির্বাচন প্রতিহত করে।