বরিশালে বিশ্বাসঘাতকদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে যাবে আওয়ামী লীগ
সদরুল আইনঃ
বরিশালে সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আগামী ১২ জুন। এ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী খোকন সেরনিয়াবাত চাপের মধ্যে রয়েছেন।
প্রকাশ্যে যারা তাকে সমর্থন করছেন, প্রকাশ্যে যে সমস্ত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তার জন্য মিছিল-সমাবেশ করছেন এবং গোপনে তারাই আবার হাতপাখাকে জিতিয়ে দেওয়ার জন্য ছক কাটছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে এবং এ ধরনের অভিযোগের বেশকিছু সাক্ষ্যপ্রমাণও সংগ্রহ করা হয়েছে।
আর এটি আওয়ামী লীগের হাইকমান্ডের কাছে দেওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি সহ দলের নীতিনির্ধারকরা এই বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত হয়েছেন এবং এরকম ঘটনা ঘটলে যারা এই ঘটনার পেছনে দায়ী তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য যে, গত ২৫ মে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই নির্বাচনেও এই বিশ্বাসঘাতক প্রবণতা লক্ষ্য করা গিয়েছিল। যেখানে দেখা গেছে যে প্রকাশ্যে তারা আওয়ামী লীগের সমর্থন করছেন, আওয়ামী লীগের ব্যাচ পরে ভোটকেন্দ্রে গেছেন কিন্তু ভোট দিয়েছেন ঘড়ি মার্কায় জায়েদা খাতুনকে।
এবার বরিশালেও সেই একই ষড়যন্ত্রের নাটক মঞ্চস্থ হতে পারে বলে বিভিন্ন সূত্র গুলো বলছে। বরিশালে সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের মনোনয়ন বাছাই প্রক্রিয়া থেকেই আওয়ামী লীগের মধ্যে বিভক্তি প্রকাশ্য রূপ লাভ করে।
বর্তমান মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহকে এবার মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। তার বদলে তার চাচা খোকন সেরনিয়াবাতকে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। কিন্তু এই মনোনয়ন পছন্দ করেননি আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ এবং তার ছেলে সাদিক আব্দুল্লাহ।
এ কারণেই তারা এই মনোনয়নের বিরোধিতা করা শুরু করেন এবং বরিশাল আওয়ামী লীগ বিভক্ত হয়ে পড়ে।
বিশ্বাসঘাতকতা না করে। তাহলে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর সহজ জয় অনিবার্য। কিন্তু এই সহজ জয় কঠিন হয়ে পড়তে পারে দলের কর্মীদের একটি অংশের বিশ্বাসঘাতকতা এবং বিরুদ্ধচারণের জন্য। আর এ কারণেই আওয়ামী লীগ এবার বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে যত না নির্বাচনী প্রচারের দিকে মনোযোগ দিচ্ছে তার চেয়ে বেশি মনোযোগ দিচ্ছে বিশ্বাসঘাতকদের দিকে।
তবে আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন যে কেউ যদি বিশ্বাস ভঙ্গ করে, গোপনে গিয়ে নৌকার বিরুদ্ধে ভোট দেয় তাকে কিভাবে নিরস্ত করা যাবে।
গাজীপুরে যে ঘটনাটি ঘটেছে এরকম ঘটনা যদি বরিশালেও ঘটে তাহলে অবাক হবার কিছু থাকবে না। কিন্তু রাজনীতির হিসেব-নিকেশে ধারণা করা হচ্ছে যে বরিশালে গাজীপুরের চেয়েও বেশি আওয়ামী লীগ বিভক্ত এবং সেখানে এই বিভক্তির প্রভাব পড়বে নির্বাচনে।
আর অন্যদিকে আওয়ামী লীগ সভাপতি নির্বাচনের ব্যাপারে কঠোর বার্তা দিয়েছেন। তিনি বলে দিয়েছেন, কোনো অবস্থাতেই নির্বাচনে কোনো ধরনের পক্ষপাত করা হবে না এবং এই ধরনের পক্ষপাত এর জন্য যদি কেউ চেষ্টাও করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কাজেই গাজীপুরের মতো বরিশালেও যে নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে সেটা বলাই বাহুল্য। এরকম একটি নির্বাচনের পর সেখানে না কি ফলাফল হয় সেটাই দেখার বিষয়।