বিএনপির মাঠ নেতাদের নির্বাচনের প্রস্তুতি গ্রহণের নির্দেশ দিলেন তারেক জিয়া
সদরুল আইন, নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
বিএনপির মাঠ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি শুরু করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
লন্ডন থেকে পাঠানো এক বার্তায় সেখানে অবস্থানরত বিএনপির পলাতক নেতা তারেক জিয়া জেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দকে নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।
এ নিয়ে দলের মধ্যে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। দলের কোন কেন্দ্রীয় নেতা এই সম্পর্কে কিছু জানে না। কিন্তু প্রত্যেকটি জেলায় সংশ্লিষ্ট নেতাদের কাছে তারেক জিয়া খুদে বার্তা পাঠিয়ে বলেছেন, নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করতে হবে এবং আগামী জুনের মধ্যে তার কাছে সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকা তৈরি করে পাঠাতে হবে।
এছাড়াও তারেক জিয়া নিয়ন্ত্রিত একটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে নির্বাচনের ব্যাপারে মাঠ জরিপ করা হচ্ছে। এ ধরনের পদক্ষেপগুলোর ফলে বিএনপির মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে। তাহলে কি নির্দলীয়, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বাইরে গিয়ে বিএনপি নির্বাচন করবে?
এই প্রশ্নের উত্তরের ব্যাপারে বিএনপিতে অবশ্য ভিন্ন ধরনের বক্তব্য পাওয়া যাচ্ছে। বিএনপির একজন নেতা বলেছেন আমরা কখনো বলিনি যে আমরা নির্বাচনে যাব না আমরা নির্বাচনে যাব এবং নির্বাচনের জন্য আমরা প্রস্তুত।
তিনি বলেন, আমরা যেহেতু নির্দলীয়, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলন করছি এবং আমরা জানি যে এ দাবি অর্জন করা সম্ভব। তাই আমাদের যে নির্বাচন প্রস্তুতি- সেই প্রস্তুতির অংশ হিসেবেই আমরা প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করছি। নির্বাচনের প্রস্তুতি আন্দোলন পাশাপাশি চলবে।
সুস্পষ্ট হয়ে গেছে যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চায় বিএনপি অংশগ্রহণ করুক এবং বর্তমান সরকারের অধীনেই নির্বাচন করুন। আর সেই নির্বাচনের যদি বিএনপি অংশগ্রহণ না করে, নির্বাচনে যদি বাধা দেয়- তাহলে সেটি মার্কিন নতুন ভিসা নীতির পরিপন্থী হবে এবং এর ফলে বিএনপি নেতৃবৃন্দ মার্কিন ভিসা বঞ্চিত হতে পারেন।
বিএনপির এ নিয়ে তিক্ত অভিজ্ঞতা রয়েছে। এর আগেও বিএনপির একাধিক নেতা মার্কিন ভিসা বঞ্চিত হয়েছিলেন নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য, জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার জন্য। আর তাই এবার বিএনপি নতুন করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরাগভাজন হতে চায় না।
গত শুক্রবার এবং আজকে বিএনপির বিভিন্ন জেলা নেতার কাছে একটি খুদে বার্তা পাঠানো পাঠানো হয়েছে লন্ডন থেকে। খুঁদে বার্তায় বলা হয়েছে, আপনার এলাকায় বিএনপিতে যারা জনপ্রিয় নেতা আছেন, যারা আগামী নির্বাচনে প্রার্থী হলে বিজয়ী হতে পারবেন, এলাকায় যাদের প্রভাব রয়েছে এবং দলের জন্য যারা গত ১৬ বছর ধরে কাজ করেছেন- তাদের তালিকা অবিলম্বে পাঠাতে হবে।
ক্ষুদে বার্তাও এটাও বলা হয়েছে, ৩০ শে জুনের মধ্যে এই তালিকা যেন পৌঁছে- সেটা নিশ্চিত করতে হবে। তবে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ সম্পর্কে কিছুই জানেন না।
বিএনপির অনেক সিদ্ধান্তই গ্রহণ করা হয়- যেখানে দলের শীর্ষ নেতারা কিছু জানেন না। তারেক জিয়া একাই সিদ্ধান্ত নেন। এটিও এরকম একটি সিদ্ধান্ত। তবে এই সিদ্ধান্ত সস্পষ্টভাবে জানিয়ে দেয় যে, আগামী নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করছে। আর সেই অংশগ্রহণের প্রক্রিয়া কি হবে সেটি বোঝা যাবে আরো কিছুদিন পর।