রাষ্ট্রপতি জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত করা
সংসদ নির্বাচনের দিন দুটি আলাদা ব্যালট পেপারে
রাষ্ট্রপতি ও সংসদ সদস্য পদে দুটি ভোট প্রদান করা।
৮ ফেব্রুয়ারি শনিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে রাষ্ট্র সংস্কার ফোরামের উদ্যোগে একদিনে ৩০০ আসনে নির্বাচন নয় এই স্লোগানে নির্বাচন সংস্কার বিশ্লেষন শিরোনামে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
রাষ্ট্র সংস্কার ফোরামের প্রধান সমন্বয়কারী নুরুল কাদের সোহেলের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন ডাকসুর সাবেক ভিপি ও নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। আরো বক্তব্য রাখেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল আমিনুল করিম (অবঃ), সাবেক প্রতিমন্ত্রী গোলাম সারোয়ার মিলন, নিরাপদ সড়ক চাই’র চেয়ারম্যান ও চলচ্চিত্র অভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চন, লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোঃ নাজিম উদ্দীন (অবঃ) সুপ্রিম কোর্ট বার এসোসিয়েশনের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি এ বি এম ওয়ালিউর রহমান খান।
আলোচনা সভায় বক্তারা নির্বাচন সংস্কার কমিশনের রিপোর্টের বিভিন্ন ধারা, সুষ্ঠ নির্বানের পথে বাধা উল্লেখ করে বেশকিছু দাবি উত্থাপন করেন। সেগুলো মধ্যে-
১। রাষ্ট্রপতি ৫জন বিভিন্ন পেশার সমন্বয়ে সার্চ কমিটি গঠন
২। সম্পূর্ণ স্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠনে সরকারের হস্তক্ষেপ মুক্ত রাখার লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন সচিব নির্বাচন কমিশন বিভাগ হতে পদোন্নতির মাধ্যমে নিয়োগ হবেন বা কমিশন নিয়োগ।
৩। জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জেলা রিটানিং অফিসার এবং উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সহকারি রিটার্নিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নির্বাচন থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত রাখা।
৪। তফসিল ঘোষণা হলে নির্বাচনকালীন সময়ে জেলার ক্ষেত্রে একমাত্র জেলা প্রশাসক ব্যতিত বাকী সকল কর্মকর্তাগণ জেলা নিবাচন কর্মকর্তার অধিনভুক্ত এবং উপজেলার ক্ষেত্রে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ব্যতীত উপজেলার সকল কর্মকর্তাগণ উপজেলা অফিসারের অধীনস্থ হবেন।
৫। নির্বাচনের স্বার্থে জেলা নির্বাচন অফিসার জেলার অধিনভুক্ত যে কোন উপজেলার যেকোনো কর্মকর্তাকে বদলি করতে পারবেন।
৬। নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করবেন এমন কোন কর্মকর্তা তিন বছর কোন উপজেলায় কর্মরত থাকলে তাকে অবশ্যই অন্য কোন উপজেলায় বদলি করবেন। তবে পারিবারিক বিশেষ কারণে প্রয়োজন সাপেক্ষে জেলা প্রশাসক চাইলে পরবর্তীতে তাকে ঐ উপজেলার পুনঃ বদলি করতে পারবেন।
৭। জেলা ও উপজেলা নির্বাচন অফিসার ম্যাজেস্ট্রি ক্ষমতা প্রাপ্ত হবেন।
৮। নির্বাচন দায়িত্বে অবহেলা বা অনিয়মের কারণে প্রিজাইডিং, সহকারী প্রিজাইডিং যে কোন সরকারী কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে যে কোন শাস্তি প্রদানের ক্ষেত্রে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ক্ষমতা প্রাপ্ত হবেন। নির্বাচনে অংশ গ্রহণকারী কোন ভুক্তভোগী প্রার্থী জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার বিচারে সন্তুষ্ট না হলে আদালতের সরণাপন্ন হতে পারবেন।
০৯। নির্বাচন দায়িত্ব অবহেলা বা অনিয়মের ক্ষেত্রে কর্মকর্তা কর্মচারীদের শাস্তির নীতিমালা তৈরী করতে হবে।
নির্বাচনে প্রার্থীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা:
সংসদ সদস্য প্রার্থীর শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতক/ দাওরায়ে হাদিস পাশ থাকতে হবে। উপজেলা চেয়ারম্যানের ক্ষেত্রে অবশ্যই শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতক/ দাওরায়ে হাদিস পাশ থাকতে হবে। ভাইস চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন চেয়ারম্যানদের ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতা উচ্চ মাধ্যমিক করা যেতে পারে।
রাজনৈতিক দলগুলোর সংস্কারঃ
(যেহেতু রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচন কমিশন নিবন্ধিত। তাই সকল রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্বাচন কমিশন আইনগত হস্তক্ষেপ করার অধিকার রাখে)
১। রাজনৈতিক দলগুলোতে নির্বাচন কমিশনের সরাসরি তত্ত্বাবধানে কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির প্রতিটি পদে ডেলিকেট ভোটারদের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচন করা।
২। রাজনৈতিক দলগুলোর কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন থেকে একটি নির্বাচন পরিচালনা কমিটি করে দেওয়া।এই কমিটি রাজনৈতিক দলটির গঠনতন্ত্র মোতাবেক ডেলিকেট নির্বাচন করে ভোটের ব্যবস্থা করবে।
পোষ্টার নিষিদ্ধকরণের দাবীঃ
১। শীতকালীন সময়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ায় পোষ্টার ঝুলিয়ে রাখার পর কয়েক ঘন্টার কুয়াশায় ভিজে মাটিতে পড়ে যায়।
২। প্রভাবশালী প্রার্থীদের সমর্থকগণ নিরীহ প্রার্থীদের পোষ্টার ছিড়ে ফেললেও নির্বাচন পরবর্তী ভয়ে নিরীহ প্রার্থীগণ প্রতিবাদ করতে পারেন না। এভাবেও বৈষম্যের স্বীকার হতে হয়।
৩। লক্ষ লক্ষ্য পোস্টার মাটিতে রাস্তায় পড়ে থাকায় পরিবেশ ও নষ্ট হয়।
৪। অনেক প্রার্থীরা সরকারিভাবে নিষিদ্ধ থাকার পরও পোস্টারে পলিথিন ব্যবহার করেন যা পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।
৫। কোটি কোটি ডলারের কাগজ কিনতে হয় বিদেশ থেকে । যার ফলে রাষ্ট্রের ডলার সংকট হয়।
৬। কাগজের ব্যাপক চাহিদার ফলে শিক্ষা ক্ষেত্রে খাতা এবং বইয়ের দাম বেড়ে যায়।
৭। উন্নত দেশগুলোতে নির্বাচনে এরকম পোস্টারের প্রচলন নেই।
ধন্যবাদান্তে
স্বপন সাহা
নির্বাহী সমন্বয়কারী
মোবাইল: ০১৭১৩০৪৩৮২০