৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, তেল আবিব : সম্প্রতি হামাসের হাতে বন্দি থাকা এক ইসরায়েলি নাগরিক মুক্তি পেলেও তিনি জানতেন না যে, তার স্ত্রী ও দুই কন্যা ইসরায়েলের সাম্প্রতিক সংঘর্ষে নিহত হয়েছে। পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে এই হৃদয়বিদারক তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে, যা বিশ্বব্যাপী ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে।
মুক্তি পাওয়া ইসরায়েলি বন্দি জানতেন না তার স্ত্রী ও কন্যারা নিহত
ব্রিটেনে বসবাসরত তার পরিবারের সদস্যরা সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “আমরা জানতাম এই খবর তাকে জানানো অত্যন্ত কঠিন হবে। সে চার মাস বন্দিদশায় ছিল, প্রাণে বেঁচে ফিরেছে, কিন্তু তার পরিবারের সবচেয়ে প্রিয় মানুষগুলোকে হারিয়েছে।”
তারা আরও বলেন, “সে যখন বন্দি ছিল, তখন তার মনে আশা ছিল যে মুক্তির পর পরিবারের কাছে ফিরে যাবে। কিন্তু এখন তার জীবনের সবচেয়ে বড় শূন্যতার মুখোমুখি হতে হচ্ছে।”
প্রায় চার মাস হামাসের হাতে বন্দি থাকার পর, সম্প্রতি মুক্তি পাওয়া ওই ইসরায়েলি নাগরিককে পরিবারের সঙ্গে পুনর্মিলিত করা হয়। তবে যখন তিনি জানতে পারেন যে তার স্ত্রী ও কন্যারা আর বেঁচে নেই, তখন তিনি প্রচণ্ড মানসিক ধাক্কা খান।
অপহরণের ঘটনা ও সংঘর্ষের পটভূম
গত বছরের অক্টোবরে, ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ শুরুর পর হামাস শতাধিক ইসরায়েলি নাগরিককে বন্দি করে গাজায় নিয়ে যায়। এই ব্যক্তি ও তার পরিবারও সেই দিন হামলার শিকার হয়। বন্দি থাকা অবস্থায় তিনি জানতেন না যে তার পরিবারের সদস্যরা ইসরায়েলি সামরিক অভিযানে প্রাণ হারিয়েছেন।
ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ জানায়, হামাসের হাতে বন্দি থাকা বেশ কয়েকজন নাগরিককে মুক্ত করার জন্য চলমান আলোচনা ও সামরিক অভিযানের মাধ্যমে চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে। তবে যুদ্ধবিরতির অনুপস্থিতি এবং ক্রমবর্ধমান সংঘর্ষ পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে।
পরিবারের শোক এবং বিশ্ব প্রতিক্রিয়া
পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, “আমরা তার মুক্তির জন্য কৃতজ্ঞ, কিন্তু একইসঙ্গে হৃদয়বিদারক যে, সে ফিরে এসে তার স্ত্রী ও কন্যাদের হারানোর দুঃসংবাদ পেল। এটা আমাদের জন্য এক বিভীষিকাময় সময়।”
এদিকে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বন্দি বিনিময় ও মানবিক সহায়তা বৃদ্ধির জন্য আহ্বান জানাচ্ছে।
- জাতিসংঘ বলেছে, “দুই পক্ষের উচিত অবিলম্বে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়া এবং নিরপরাধ নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা।”
- যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন মানবিক সহায়তা পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছে, বিশেষত যেসব পরিবার যুদ্ধের কারণে তাদের প্রিয়জনদের হারিয়েছে।
- ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ ও হামাস বলেছে যে তারা আরো বন্দি মুক্তি দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা চালিয়ে যাবে, তবে ইসরায়েলি সামরিক অভিযান বন্ধ না হলে এটি কঠিন হয়ে পড়বে।
গাজা ও ইসরায়েলের ভবিষ্যৎ পরিস্থিতি
যুদ্ধবিরতি ছাড়াই ক্রমাগত সংঘর্ষ পরিস্থিতি আরও খারাপ করছে। বন্দিদের মুক্তির চেষ্টা ও মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করা এই মুহূর্তে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অন্যতম অগ্রাধিকার।
ইসরায়েলি নাগরিকের মুক্তির ঘটনা যেমন স্বস্তির খবর, তেমনই তার পরিবারের মৃত্যু এক হৃদয়বিদারক দুঃখগাঁথা, যা গাজা সংঘাতের নির্মম বাস্তবতাকে আরও গভীরভাবে তুলে ধরছে।
🔴 গাজার সংকট ও বিশ্ব রাজনীতির আরও আপডেট পেতে চোখ রাখুন Bangla.fm-এ!