সিলেট প্রতিনিধি:
সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওর—দেশের অন্যতম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত পর্যটন কেন্দ্র—এখন পরিবেশগত সংকটের মুখে। হিজল-করচ গাছসহ হাওরের জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়েছে অনিয়ন্ত্রিত পর্যটন এবং হাউসবোট চলাচলের কারণে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভরা বর্ষায় টাঙ্গুয়ার হাওর নিজের সৌন্দর্যের চূড়ায় পৌঁছায়। মেঘালয়ের পাহাড়ঘেঁষা স্বচ্ছ পানি, নীল আকাশ আর সাদা মেঘের মুগ্ধতা দেখতে দেশের নানা প্রান্ত থেকে পর্যটকরা এখানে ছুটে আসেন। অনেকেই বিলাসবহুল হাউসবোট ও ইঞ্জিনচালিত নৌকা নিয়ে হাওরে ঘুরে বেড়ান। কেউ হিজল-করচ বনের ভেতর দিয়ে নৌকা চালান, কেউ আবার ওয়াচ টাওয়ার থেকে পানিতে ঝাঁপ দেন, অনেকে উচ্চ শব্দে গানও বাজান—ফলে প্রাকৃতিক পরিবেশে মারাত্মক বিঘ্ন ঘটে।
জীববৈচিত্র্য রক্ষায় গত ২১ জুন সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসন ১৩ দফা নির্দেশনা জারি করে। এর ৫ নম্বর নির্দেশনায় স্পষ্টভাবে বলা হয়, গাছকাটা, ডাল ভাঙা ও বনজ সম্পদ সংগ্রহ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এরপরও এসব নির্দেশনা উপেক্ষা করে অনেক পর্যটক হিজল-করচ গাছে উঠে ছবি তোলেন ও গানের তালে গাছের ডাল ভেঙে ফেলেন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে জেলা প্রশাসন ২২ জুন রাতে হাওরের ওয়াচ টাওয়ার ও সংরক্ষিত এলাকায় হাউসবোট প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। কিন্তু তা উপেক্ষা করে এখনও হাউসবোট মালিকরা হাওরের গভীরে পর্যটক নিয়ে চলাচল করছেন।
সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, “হাওরের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সংরক্ষিত এলাকায় হাউসবোট প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। নিয়ম লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”