রাজশাহীতে বিএনপির দুগ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে, যার ফলে অন্তত চারজন আহত হয়েছে। শুক্রবার (০৭ মার্চ) রাত ১০টার দিকে নগরীর রেলগেট এলাকায় এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের সময় রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা এক সংবাদকর্মীর মোটরসাইকেলসহ দুটি বাইকে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।
ঘটনায় আহত চারজনের মধ্যে গোয়েন্দা পুলিশের এক সদস্যসহ তিনজন সাধারণ নাগরিক রয়েছেন। আহতদের মধ্যে আপন, লামিয়া, লাবলী এবং মহানগর বিশেষ শাখা (সিটিএসবি) এর সদস্য মো. তোফাজ্জল হোসেনের নাম জানা গেছে। আহতদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডা. শংকর কুমার বিশ্বাস আহতদের তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, “মারামারির ঘটনায় ৪ জনকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে, এবং তাদের চিকিৎসা চলছে।”
ঘটনার পটভূমি:
এই সংঘর্ষের ঘটনাটি বৃহস্পতিবার (০৬ মার্চ) রাতে ঘটে, যখন বিএনপির মহিলা দলের নেত্রী লাভলী, যুবলীগ নেতা সাব্বির বাবুকে ধরিয়ে দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে, শুক্রবার সন্ধ্যায় মহিলা দলের নেত্রী লাভলীর বাড়িতে বিএনপির একটি পক্ষ ভাঙচুর চালায়। এই ঘটনার জেরে নগরীর দড়িখড়বোনা এলাকায় লাভলী গ্রুপ এবং নগরীর ১৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির নেতা মিলু, কালাম, ও যুবদল নেতা জীবন গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়।
উল্লেখ্য, উভয় পক্ষের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের সময় শালবাগান পর্যন্ত পাল্টাপাল্টি ধাওয়া চলতে থাকে। সংঘর্ষে ইটপাটকেলের আঘাতে সিটি এসবির এক সদস্যসহ চারজন আহত হয়েছেন।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিক্রিয়া:
এ ঘটনার পর, সেনাবাহিনী এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পুলিশ এবং সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলসহ আশেপাশের এলাকায় অবস্থান নিয়েছে এবং পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখার চেষ্টা করছে।
লাভলীর অভিযোগ:
এ বিষয়ে শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টায় যুব মহিলা দল নেত্রী লাভলী এক জরুরি সংবাদ সম্মেলন করেন, যেখানে তিনি বলেন, “ছাত্র-জনতার ওপর হামলাকারী আওয়ামী লীগের দুই নেতা মুস্তাক ও তার ভাই সাব্বিরকে ধরতে গত বৃহস্পতিবার রাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান চালায়। আমি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহায়তা করি। এ ঘটনার পর ১৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির নেতা মিলু, কালাম ও জীবনের নেতৃত্বে একটি গ্রুপ এসে আমার বাসায় ভাঙচুর চালায়। তারা বিএনপি করলেও আওয়ামী লীগকে প্রতিষ্ঠা করার কাজ করছে, তাই তারা হামলা চালিয়েছে।”
পুলিশের প্রতিক্রিয়া:
রাজশাহী মেট্রপলিটন পুলিশের মুখপাত্র এবং অতিরিক্ত উপকমিশনার সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, “রাতে দুগ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। সংঘর্ষ চলাকালে দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় সিটিএসবির এক কর্মকর্তা আহত হয়েছেন। পরে সেনাবাহিনী এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আশেপাশের এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা মোতায়েন রয়েছে।”
এ ঘটনার পর, রাজশাহীতে উত্তেজনা বিরাজ করছে, এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা আরও গভীর হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।