মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে শুরু হয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় হালাল পণ্যের প্রদর্শনী ‘মিহাস ফেয়ার’। বুধবার থেকে শুরু হওয়া এই চার দিনের মেলায় অংশ নিয়েছে বাংলাদেশের শীর্ষ খাদ্যপণ্য উৎপাদনকারী ও রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান প্রাণ গ্রুপ।
কুয়ালালামপুর ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড এক্সিবিশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত এ মেলায় প্রাণ গ্রুপের কর্মকর্তারা জানান, মালয়েশিয়া ছাড়াও আসিয়ান অঞ্চলে রপ্তানি বাড়ানোই তাদের মূল লক্ষ্য। গত অর্থবছরে প্রতিষ্ঠানটি মালয়েশিয়ায় প্রায় ৩০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের খাদ্যপণ্য রপ্তানি করেছে।
হালাল পণ্যের বৈশ্বিক বাজার বর্তমানে প্রায় ৩ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের কাছাকাছি। বিশ্বের ২০০ কোটিরও বেশি মুসলিম জনগোষ্ঠীর কারণে এ বাজার দ্রুত সম্প্রসারিত হচ্ছে। শুধু মালয়েশিয়া বা মধ্যপ্রাচ্য নয়, ইউরোপ, আমেরিকা ও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশেও এখন হালাল ফুডের বিশাল বাজার গড়ে উঠেছে।
২০০৪ সাল থেকে প্রতিবছর আয়োজন করা হচ্ছে মিহাস ফেয়ার। এবারের আসরে ৯০টি দেশ থেকে ২ হাজার ৩শ’ বুথের মাধ্যমে অংশ নিচ্ছে বিভিন্ন কোম্পানি। ২০২৪ সালের মেলায় তাৎক্ষণিকভাবে ৪ বিলিয়ন ডলারের বেশি ব্যবসায়িক চুক্তি হয়েছিল। প্রতিবছর প্রায় ৪০ হাজার দর্শনার্থী এ মেলা পরিদর্শন করে।
প্রাণ কর্মকর্তারা জানান, এবারের মেলায় তাদের প্রধান লক্ষ্য আসিয়ান, দক্ষিণ এশিয়া ও ইউরোপে ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য অংশীদারিত্ব গড়ে তোলা এবং প্রায় ২ মিলিয়ন ডলার সমমূল্যের সরাসরি রপ্তানি আদেশ পাওয়া।
প্রাণ এবার দুইটি স্টলের মাধ্যমে ৫ শতাধিক পণ্য প্রদর্শন করছে। এর মধ্যে রয়েছে— জুস ও ড্রিংকস, কালিনারি, বিস্কুট ও বেকারি, কনফেকশনারি। নতুন পণ্যের মধ্যে বিশেষভাবে প্রদর্শিত হচ্ছে কোরিয়ান নুডলস, বিভিন্ন বিস্কুট ও বাসিল সিড ড্রিংকস। হালাল বাজারে প্রবেশের জন্য প্রাণের রয়েছে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত জাকিম হালাল সার্টিফিকেশন।
মালয়েশিয়া ছাড়াও ইন্দোনেশিয়া ও ব্রুনাইকে হালাল পণ্যের সম্ভাবনাময় বাজার হিসেবে দেখছে প্রতিষ্ঠানটি। এছাড়া প্রাণ নিয়মিত অংশ নেয় সংযুক্ত আরব আমিরাতের গালফ ফুড ফেয়ার, জার্মানির আনুগা এবং ফ্রান্সের সিয়াল ফেয়ারসহ বিশ্বের খ্যাতনামা খাদ্য প্রদর্শনীতে।
বর্তমানে বিশ্বের ১৪৮টি দেশে প্রাণের পণ্য রপ্তানি হচ্ছে। এর মধ্যে ভারত, মালয়েশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য উল্লেখযোগ্য। গত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রতিষ্ঠানটি প্রায় ৩১৫ মিলিয়ন ডলারের খাদ্যপণ্য রপ্তানি করেছে।