ইসরায়েলের সামরিক হামলার পরিণতি নিয়ে আলোচনা করতে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা আইএইএর পরিচালনা পরিষদ আজ একটি জরুরি বৈঠকে বসছে। অস্ট্রিয়ার ভিয়েনায় সংস্থাটির সদর দপ্তরে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে ইরানের অনুরোধে। ইরানের এই অনুরোধে সমর্থন জানিয়েছে রাশিয়া, চীন এবং ভেনিজুয়েলাও। আইএইএর এই উচ্চপর্যায়ের বৈঠক এমন এক সময় অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যখন মধ্যপ্রাচ্যে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা চলছে এবং তেহরানের দুটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনায় সরাসরি হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল।
সূত্র জানায়, ইরান শুরুতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে একটি নিন্দা প্রস্তাব উত্থাপন করতে চাইলেও তা সংখ্যাগরিষ্ঠ সমর্থন পাবে না বুঝতে পেরে এখন একটি সাধারণ বিবৃতি দিতেই আগ্রহী, যেখানে ইসরায়েলের সামরিক কার্যক্রমের নিন্দা থাকবে। ইরান জোর দিয়ে বলছে, আন্তর্জাতিক মহল এবং আইএইএর পরিচালনা পরিষদ যেন ইসরায়েলের এই হামলার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়, কারণ এটি আন্তর্জাতিক আইন ও পারমাণবিক চুক্তির সরাসরি লঙ্ঘন।
ইসরায়েলের বোমা হামলায় ইরানের নাতাঞ্জ ও ফোর্দো পারমাণবিক স্থাপনা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আইএইএর সাবেক উপ-পরিচালক ও পারমাণবিক নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ ওলি হেইনোনেন জানিয়েছেন, এই হামলার পর তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচির প্রকৃত অবস্থা সম্পর্কে এখনো পরিষ্কারভাবে জানা যাচ্ছে না। তবে তার মতে, নাতাঞ্জে যে পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা পুনরুদ্ধারে অন্তত কয়েক বছর সময় লাগবে। একইভাবে, ফোর্দো স্থাপনাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়েছে।
এনপিটি (নন-প্রোলিফারেশন ট্রিটি) চুক্তির আওতায় কোনো দেশের পারমাণবিক স্থাপনায় সামরিক হামলা গ্রহণযোগ্য নয় বলে ইরান দাবি করেছে। কিন্তু বর্তমান বৈশ্বিক কূটনৈতিক বাস্তবতায়, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো নিন্দা প্রস্তাব পাশ হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। তবুও, এই বৈঠক আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় তৈরি করতে পারে, যেখানে পারমাণবিক নিরাপত্তা, আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা এবং জাতিসংঘ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর নিরপেক্ষ ভূমিকা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে।