কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিরীহ পর্যটকের প্রাণহানির ঘটনায় চরম উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে। এই হামলার দায় স্বীকার করেছে ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ)’, যা পাকিস্তানভিত্তিক নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বার একটি শাখা হিসেবে পরিচিত। ধারণা করা হচ্ছে, এই সংগঠনের পেছনে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই এর প্রত্যক্ষ মদদ রয়েছে।
এ হামলার পরপরই ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী কাশ্মীরজুড়ে তৎপরতা শুরু করে। শুক্রবার সকালে কাশ্মীরের বান্দিপাড়ায় সংঘটিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয় লস্কর-ই-তৈয়বার শীর্ষ কমান্ডার আলতাফ লাল্লি। তিনি ছিলেন ভারতের মোস্ট ওয়ান্টেড তালিকাভুক্ত জঙ্গিদের একজন এবং টিআরএফ-এর সঙ্গেও ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত ছিলেন বলে জানিয়েছে জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ।
এদিকে পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর হামলার ঘটনায় সরাসরি জড়িত থাকার অভিযোগে দুই অভিযুক্ত—আদিল হুসেন ঠোকের ও আসিফ শেখ—এর বাড়িঘর ধ্বংস করে দিয়েছে ভারতের নিরাপত্তা বাহিনী। ঠোকেরের বাড়ি ছিল অনন্তনাগে, আর আসিফের বাড়ি পুলওয়ামাতে। ভারতীয় বাহিনীর দাবি, এ দুজনই হামলার পরিকল্পনায় জড়িত ছিল এবং তারাই লস্করের সন্ত্রাসীদের পথ দেখিয়ে এনেছিল।
হামলার পর প্রকাশিত চারজন হামলাকারীর ছবির মধ্যে এই দুজনের ছবি স্পষ্টভাবে শনাক্ত করা যায়। পুলিশ জানিয়েছে, বাকি দুইজন পাকিস্তানের নাগরিক, যারা এখনও পলাতক। তাদের অবস্থান বা তথ্য দিতে পারলে ২০ লাখ রুপি পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণাও দিয়েছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ।
টাইমস অফ ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৮ সালে আদিল ও আসিফ আটারি সীমান্ত পেরিয়ে পাকিস্তানে প্রবেশ করে এবং সেখানেই লস্করের পক্ষ থেকে জঙ্গি প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে। দীর্ঘ প্রস্তুতির পর তারা ২০২৪ সালে আবার ফিরে আসে কাশ্মীরে এবং সরাসরি এই হামলায় অংশ নেয়।
এই ঘটনার প্রেক্ষাপটে দক্ষিণ এশিয়ার দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে উত্তেজনার পারদ ঊর্ধ্বমুখী, যা আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।