ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীদের দমন করতে মোতায়েন মার্কিন বিমানবাহী রণতরী ‘ইউএসএস হ্যারি এস ট্রুম্যান’-এ ভয়াবহ এক দুর্ঘটনায় ৬৭ মিলিয়ন ডলারের একটি অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান লােহিত সাগরে ডুবে গেছে।
ঘটনাটি ঘটে সোমবার, যখন এফ/এ-১৮ই মডেলের যুদ্ধবিমানটি হ্যাঙ্গার বে-তে টো ট্র্যাক্টর দিয়ে সরানো হচ্ছিল। হঠাৎই ট্র্যাক্টরটির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বিমানটিসহ উল্টে পড়ে সমুদ্রে। নৌবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, বিমানে থাকা বা আশেপাশে থাকা কর্মীরা তাৎক্ষণিকভাবে নিরাপদ দূরত্বে সরে যান, ফলে বড় ধরণের হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। তবে একজন নাবিক সামান্য আহত হয়েছেন।
মার্কিন নৌবাহিনী নিশ্চিত করেছে, সব নাবিক নিরাপদে রয়েছেন, এবং এই দুর্ঘটনা সত্ত্বেও ইউএসএস ট্রুম্যান ও তাতে থাকা অন্যান্য বিমান এখনও মধ্যপ্রাচ্যে তাদের নিয়মিত কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
তবে এই দুর্ঘটনা শুধু বিচ্ছিন্ন একটি ঘটনা নয়। ছয় মাসের মধ্যেই এটি ইউএসএস ট্রুম্যানের সঙ্গে সম্পৃক্ত দ্বিতীয় এফ/এ-১৮ যুদ্ধবিমান হারানোর ঘটনা। এর আগেরবার, ইউএসএস গেটিসবার্গ নামক গাইডেড মিসাইল ক্রুজার থেকে ভুলক্রমে গুলি চালিয়ে ধ্বংস হয়ে যায় একটি যুদ্ধবিমান। সেই ঘটনায় দুই পাইলট প্রাণে বেঁচে গেলেও বিমানটি পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
লােহিত সাগরে মার্কিন যুদ্ধজাহাজ ও হুথি বিদ্রোহীদের সংঘাতে উত্তেজনা এখন তুঙ্গে। মার্চ থেকে যুক্তরাষ্ট্র হুথিদের ওপর একের পর এক বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। হুথিদের হামলার কারণে এই অঞ্চল দিয়ে জাহাজ চলাচল মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে।
এই ঘটনার তদন্ত চলছে। তবে প্রশ্ন উঠছে—মার্কিন নৌবাহিনীর অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও তদারকির মান নিয়ে। কোটি কোটি ডলারের যুদ্ধবিমান যদি হঠাৎ করেই সমুদ্রে ডুবে যায়, তাহলে যুদ্ধক্ষেত্রে এর ওপর কতটা নির্ভর করা যাবে?
এই দুর্ঘটনা শুধু একটি যুদ্ধবিমানের ক্ষতি নয়—এটি মার্কিন সামরিক ব্যয়ের অপচয়, নিরাপত্তা ত্রুটি এবং মধ্যপ্রাচ্যের উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানকেও প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলছে।
আপনি কী মনে করেন, এটি নিছক দুর্ঘটনা, নাকি এর পেছনে আরও গভীর ব্যর্থতা লুকিয়ে আছে? মন্তব্যে মতামত দিন।