ভারত সম্প্রতি বাংলাদেশকে দেওয়া ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা হঠাৎ বাতিল করে দেয়। ৮ এপ্রিল নেওয়া এ সিদ্ধান্তের পর মাত্র এক সপ্তাহ পার হতে না হতেই বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে স্থলবন্দর দিয়ে ভারতের সুতা আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এই প্রেক্ষাপটেই ভারতীয় দৈনিক টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, দিল্লি বাংলাদেশের সঙ্গে কোনো ধরনের বাণিজ্যিক সংঘাতে যেতে চায় না। এমনকি ঢাকার সিদ্ধান্তের পাল্টা কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার সম্ভাবনাও কম—এমনটাই উঠে এসেছে তাদের প্রতিবেদনে।
টাইমস অব ইন্ডিয়া ভারতের সরকারি সূত্রের বরাতে আরও জানায়, বাংলাদেশের ওপর ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিলের পেছনে রাজনৈতিক কোনো কারণ নেই, বরং ভারতের অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দর ও স্থলবন্দরের চাপ কমাতেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যদিও দেশটির অন্যান্য কিছু সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হয়েছিল, বাংলাদেশের একজন উপদেষ্টার ‘সেভেন সিস্টার্স’ বিষয়ে মন্তব্যের প্রতিক্রিয়াতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল হলেও নেপাল ও ভুটানে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানি এর প্রভাব থেকে মুক্ত থাকবে বলে আশ্বস্ত করেছে ভারত সরকার। তারা দাবি করেছে, বাংলাদেশ সরকারই মার্চ মাসে তিনটি বন্দর বন্ধ করে এবং স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানি নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়। যদিও সুতা আমদানির বিষয়ে নির্দেশনা আনুষ্ঠানিকভাবে জারি করা হয় এপ্রিলের দ্বিতীয় সপ্তাহে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমটি আরও দাবি করেছে, গত জানুয়ারিতে বেনাপোল কাস্টমসে বাংলাদেশ যে বাড়তি সতর্কতার ব্যবস্থা নিয়েছিল, তাতেও দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যে ব্যাঘাত ঘটে। একইসঙ্গে প্রতিবেদনে অভিযোগ করা হয়েছে, বাংলাদেশ ভারতের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে পাকিস্তানের সঙ্গে সরাসরি বাণিজ্য শুরু করেছে। এর প্রমাণ হিসেবে তারা উল্লেখ করেছে, ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তান ট্রেডিং কর্পোরেশনের মাধ্যমে বাংলাদেশে ৫০ হাজার টন চাল আমদানির বিষয়টি।
এই পুরো বিষয়টিকে ঘিরে ভারত-বাংলাদেশ বাণিজ্য সম্পর্ক কিছুটা উত্তেজনার মধ্যে থাকলেও ভারতের পক্ষ থেকে শান্তিপূর্ণ অবস্থান গ্রহণের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। তবে পরিস্থিতি কী মোড় নেয়, তা নির্ভর করবে ভবিষ্যতের কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক পদক্ষেপগুলোর ওপর।