ইরান পারমাণবিক অস্ত্রকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ হিসেবে বিবেচনা করে—এমন মন্তব্য করেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রধান আলোচক আব্বাস আরাকচি। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান আলোচনার প্রেক্ষাপটে শনিবার টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে তিনি বলেন, “যদি বিষয়টি পারমাণবিক অস্ত্রের হয়, তবে হ্যাঁ, আমরাও এই ধরণের অস্ত্রকে অগ্রহণযোগ্য বলে মনে করি। আমরা এই বিষয়ে তাদের সঙ্গে একমত।” তার এই বক্তব্য ইরানের দীর্ঘদিনের অবস্থানের পুনরাবৃত্তি, যেখানে দেশটি বারবার দাবি করে এসেছে যে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হচ্ছে।
এদিকে পশ্চিমা বিশ্ব, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরে সন্দেহ করে আসছে যে, ইরান তার প্রতিদ্বন্দ্বী ইসরাইলের বিরুদ্ধে পরোক্ষভাবে পারমাণবিক সক্ষমতা অর্জনের চেষ্টা করছে। যদিও ইরান বরাবরই তা অস্বীকার করেছে। ২০১৮ সালে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পুরনো পারমাণবিক চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করার পর থেকে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়। তবে সম্প্রতি উভয় পক্ষ পাঁচ দফা আলোচনা সম্পন্ন করেছে একটি নতুন চুক্তির লক্ষ্যে।
যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচিকে চুক্তিবিরোধী হিসেবে দাবি করে তা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে। কিন্তু তেহরান তা প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, এটি আন্তর্জাতিক চুক্তির অধীনে তাদের বৈধ অধিকার। অন্যদিকে, ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, আলোচনায় অগ্রগতি হচ্ছে এবং তিনি চান প্রথমে একটি সমঝোতায় পৌঁছাতে।
এছাড়া ইসরাইলের সামরিক হুমকির প্রেক্ষিতে ট্রাম্প জানিয়েছেন, তিনি নেতানিয়াহুকে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা না চালাতে সতর্ক করেছিলেন, কারণ এই মুহূর্তে সেটি ‘উপযুক্ত’ সময় নয়। তবে তিনি জানান, ভবিষ্যতে এ ধরনের যেকোনো হামলা হলে সেটির নেতৃত্ব দেবে ইসরাইল, যুক্তরাষ্ট্র নয়।
সাম্প্রতিক উত্তেজনার মধ্যে ইসরাইল বারবার সামরিক পদক্ষেপের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে, বিশেষ করে গত বছর ইরানের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনার পর। এই প্রেক্ষাপটে পারমাণবিক ইস্যুতে ইরানের স্পষ্ট অবস্থান এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্ভাব্য সমঝোতার পথ খোলার ইঙ্গিত আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে নতুন মোড় আনতে পারে।