পাকিস্তানের সঙ্গে সাম্প্রতিক সংঘাত ও তার প্রতিক্রিয়া ঘিরে ভারতের রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র বিতর্ক শুরু হয়েছে। বিষয়টি কেন্দ্র করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে প্রকাশ্যে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেছেন কংগ্রেস নেতা এবং লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী।
রাহুল গান্ধী বৃহস্পতিবার (২৩ মে) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স (পূর্বতন টুইটার)-এ এক পোস্টে প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে লেখেন:
“মোদিজি, ফাঁকা বুলি বন্ধ করুন। শুধু বলুন— কেন আপনি পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদের প্রতিশ্রুতিতে ভরসা করলেন? কেন ট্রাম্পের কথায় মাথা নত করে ভারতের স্বার্থ বিসর্জন দিলেন? কেন আপনার ‘রক্ত’ কেবল ক্যামেরার সামনেই গরম হয়? আপনি দেশের গৌরব বিসর্জন দিয়েছেন।”
রাহুলের এই মন্তব্যের পেছনে রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর আগের এক বক্তব্য, যেখানে মোদি বলেন,
“আমার শরীরে রক্ত নয়, শিরায় সিঁদুর টগবগ করে ফুটছে।”
এ বক্তব্যকে ‘ড্রামাটিক’ এবং ‘প্রতিক্রিয়াশীল’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে বিরোধীরা প্রশ্ন তুলছেন, প্রধানমন্ত্রী বাস্তব পদক্ষেপের চেয়ে প্রচারেই বেশি মনোযোগ দিচ্ছেন।
রাহুল গান্ধী দাবি করেছেন, সাম্প্রতিক ‘অপারেশন সিন্ধু’র সময় পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘর্ষ বন্ধ করে দিয়ে মোদি সরকার ভারতের সম্মান ক্ষুণ্ণ করেছে। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, কেন সরকার পাকিস্তানের কথায় সন্ত্রাসবাদ বন্ধের প্রতিশ্রুতি মেনে নিয়েছে, এবং কেন কাশ্মিরের পেহেলগামে হামলার পর ‘মাত্র ২২ মিনিটে প্রতিশোধ নেওয়া’র দাবি দিয়ে বিষয়টিকে হালকাভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
এদিকে, কংগ্রেসের আরেক জ্যেষ্ঠ নেতা জয়রাম রমেশ প্রধানমন্ত্রীকে আক্রমণ করে বলেন,
“মোদি শুধু ফিল্মি ভাষায় কথা বলেন, বাস্তব পদক্ষেপে তার সরকার দুর্বল।”
তিনি দাবি করেন, মোদির বক্তব্যে রাজনৈতিক নাটকীয়তা থাকলেও বাস্তবে তা ভারতের কৌশলগত অবস্থানকে দুর্বল করে তুলছে।
এই বিতর্কের ফলে নির্বাচনী রাজনীতির আবহে ভারতজুড়ে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। মোদি সরকারের ‘কঠোর জাতীয়তাবাদী’ অবস্থান নিয়ে বিরোধীরা প্রশ্ন তুললেও, সরকারপক্ষের দাবি— প্রধানমন্ত্রী কূটনৈতিক ও সামরিক দুই দিক থেকেই ভারসাম্য রক্ষা করছেন।