পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনির সম্প্রতি একাধিক কারণে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে এসেছেন। সাধারণত তিনি প্রকাশ্যে মন্তব্য না করলেও, সম্প্রতি কাশ্মীর বিষয়ে তাঁর কিছু বক্তব্য শুধু পাকিস্তান নয়, ভারতের অভ্যন্তরেও ব্যাপক প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে।
গত ২২ এপ্রিল ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে একটি সশস্ত্র হামলায় ২৬ জন প্রাণ হারান। এই ঘটনার কয়েক দিন আগেই জেনারেল মুনির ইসলামাবাদে এক বৈঠকে কাশ্মীর নিয়ে বক্তব্য দেন, যেখানে তিনি বলেন, “আমরা প্রতিটি ক্ষেত্রে হিন্দুদের থেকে আলাদা,” এবং কাশ্মীরকে “পাকিস্তানের জীবনসঞ্চারণী শিরা” হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেন, পাকিস্তান কাশ্মীরিদের স্বাধীনতা সংগ্রাম থেকে কখনোই সরে আসবে না।
এই বক্তব্য সরাসরি হামলার সঙ্গে সংযুক্ত নয়, তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, তাঁর মন্তব্যের সময়কাল, ভাষার তীব্রতা এবং ধর্মীয় বিভাজনমূলক উপস্থাপন পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তুলেছে। জনস হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক বিশ্লেষক জশুয়া টি হোয়াইট বলেন, “মুনিরের বক্তব্য পাকিস্তানের ঐতিহাসিক অবস্থানের সঙ্গে মিল থাকলেও, হিন্দু-মুসলিম পার্থক্য যেভাবে তিনি টেনেছেন, তা বিশেষভাবে উসকানিমূলক।”
এটাই প্রথম নয়। এ বছরের শুরুতে কাশ্মীর সংহতি দিবসেও তিনি বলেন, “কাশ্মীরের জন্য পাকিস্তান তিনটি যুদ্ধ করেছে। যদি দরকার পড়ে, আরও দশটি যুদ্ধ করবে।”
এমন বক্তব্যের জেরেই এখন ভারতের নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা পেহেলগামের হামলার পেছনে পাকিস্তানি প্রভাবের ইঙ্গিত দিচ্ছেন, যদিও কোনো প্রমাণ এখনো সামনে আসেনি। তবু ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সন্দেহ ও অবিশ্বাস আরও গভীর হয়েছে।
পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে সেনাবাহিনীর ভূমিকা দীর্ঘদিন ধরেই প্রশ্নবিদ্ধ। সরকারের গঠন ও পতনে এদের প্রভাব রয়েছে বলেও অনেকে অভিযোগ করে থাকেন। এই প্রেক্ষাপটে আসিম মুনিরের এমন আগ্রাসী ও আদর্শিক বক্তব্য শুধু দ্বিপক্ষীয় উত্তেজনা নয়, গোটা অঞ্চলের স্থিতিশীলতা নিয়েও নতুন করে শঙ্কা তৈরি করেছে।