ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার সঙ্গে মাদক চোরাচালানের সরাসরি যোগসূত্রের চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে ভারতের জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ। তাদের দাবি, হামলার অর্থ যোগানের উদ্দেশ্যে গুজরাটের মুন্দ্রা বন্দর হয়ে মাদকের একটি বিশাল চালান ভারতে প্রবেশের চেষ্টা হয়েছিল। গোয়েন্দাদের মতে, পুরো ষড়যন্ত্রের নেপথ্যে ছিল পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই।
কলকাতার আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সুপ্রিমকোর্টে জমা দেওয়া একটি হলফনামায় এনআইএ জানিয়েছে, পাকিস্তানের মদতপুষ্ট জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বা মাদক-সন্ত্রাস চালানোর মাধ্যমে জম্মু-কাশ্মীর এবং পাঞ্জাবে অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছে। সম্প্রতি মুন্দ্রা বন্দরে উদ্ধার হওয়া ২১ হাজার কোটি টাকার মাদক (প্রায় তিন হাজার কেজি হেরোইন) এই ষড়যন্ত্রের প্রমাণ হিসেবে উঠে এসেছে।
এনআইএ জানিয়েছে, ইরানি মধ্যস্থতাকারীদের সহায়তায় আফগানিস্তান থেকে উৎপন্ন মাদক পারস্য উপসাগর পেরিয়ে ভারতের পশ্চিম উপকূলে প্রবেশ করানোর পরিকল্পনা করে আইএসআই। ট্যালকম পাউডারের আড়ালে এই বিপুল পরিমাণ হেরোইন ঢোকানোর চেষ্টা হয়। দিল্লির নেব সরাই ও আলিপুরের গুদামে মাদক মজুতের ছক ছিল। তবে শেষ মুহূর্তে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের তৎপরতায় সেই চক্রান্ত ভেস্তে যায়।
এ ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া কবীর তালোয়ার সুপ্রিমকোর্টে জামিনের আবেদন করলেও অতিরিক্ত সলিসিটার জেনারেল ঐশ্বর্য ভাটি তার তীব্র বিরোধিতা করেন। আদালতে তিনি বলেন, “আইএসআই এই পদ্ধতি আগেও ব্যবহার করেছে, মাদক ব্যবসার মাধ্যমে জঙ্গি সংগঠনগুলোর অর্থ জোগান দেয় তারা।”
এনআইএর দাবি, আগে শুধু পাঞ্জাবে মাদক ঢোকানো হলেও বর্তমানে গুজরাটসহ পশ্চিম ভারতের উপকূলীয় অঞ্চলকেও ব্যবহার করছে পাকিস্তানি গুপ্তচর সংস্থা।
পেহেলগাম হামলার পরপরই এনআইএ ঘটনাস্থলে তদন্ত শুরু করে। এখন এনআইএর সন্ত্রাসদমন শাখার শীর্ষ কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে বিশেষ দল হামলার প্রত্যক্ষদর্শী, নিহতদের পরিবার এবং ঘটনাস্থলের সবরকম তথ্য সংগ্রহে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। ২৬ এপ্রিল তিনজন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা কর্মকর্তা পশ্চিমবঙ্গের বেহালায় নিহত সমীর গুহের বাড়িতে গিয়ে তার পরিবার সদস্যদের সঙ্গেও কথা বলেন।