হিমালয়ের কোলঘেঁষা বিতর্কিত অঞ্চল তিব্বত নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপের জবাবে পাল্টা ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে চীন। সোমবার চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তিব্বত ইস্যুতে ‘অযাচিত হস্তক্ষেপ ও খারাপ আচরণ’-এর অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক কর্মকর্তার ওপর এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
এই সিদ্ধান্ত এমন এক সময়ে এলো, যখন কয়েক সপ্তাহ আগে ওয়াশিংটন তিব্বতে বিদেশিদের প্রবেশাধিকারের বিষয়ে চীনা নীতিনির্ধারকদের বিরুদ্ধে বাড়তি ভিসা বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল। যুক্তরাষ্ট্র অভিযোগ করেছিল, চীনা কর্তৃপক্ষ মার্কিন কূটনীতিক, সাংবাদিক ও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের তিব্বতে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না এবং এটি এক ধরণের তথ্য গোপনের চেষ্টা।
এ বিষয়ে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লিন জিয়ান বলেন, তিব্বত সম্পূর্ণভাবে চীনের অভ্যন্তরীণ বিষয় এবং এতে বিদেশি হস্তক্ষেপ চীনের সার্বভৌমত্ব ও আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের শামিল। তিনি জানান, চীন তথাকথিত মানবাধিকার, ধর্ম বা সংস্কৃতির অজুহাতে তিব্বতের বিষয়ে কোনো বিদেশি শক্তির হস্তক্ষেপ বরদাশত করবে না।
চীন দাবি করছে, তিব্বত উন্মুক্ত একটি অঞ্চল, যেখানে বিদেশি পর্যটক, ব্যবসায়ী ও কূটনীতিকরা নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে অনুমতির ভিত্তিতে ভ্রমণ করতে পারেন। তবে এই “উন্মুক্ততা” কতটা বাস্তব, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন পশ্চিমা দেশ।
১৯৫০ সাল থেকে তিব্বত অঞ্চলটি চীনের দখলে। অঞ্চলটি নিয়ে চীন ও ভারতের মধ্যে বহুদিন ধরেই উত্তেজনা বিরাজ করছে। দুই দেশের মধ্যে এই ভূখণ্ড নিয়ে একাধিকবার রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষও হয়েছে। এর মধ্যে সর্বশেষ সহিংস সংঘাত ছিল গত বছর, যাতে উভয় পক্ষের বহু সেনা হতাহত হয়।
চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের এই পাল্টাপাল্টি নিষেধাজ্ঞা কূটনৈতিক সম্পর্কে নতুন করে উত্তেজনার ইঙ্গিত দিচ্ছে, যার প্রভাব পড়তে পারে ভারত-চীন সীমান্ত পরিস্থিতিতেও।