২২ এপ্রিল থেকে ২ মে পর্যন্ত ভারতজুড়ে ৬৪টি ঘৃণামূলক বক্তব্যের ঘটনা ঘটেছে, যা নথিভুক্ত করেছে ইন্ডিয়া হেট ল্যাব (আইএইচএল)। এসব ঘটনার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঘৃণামূলক বক্তব্য রেকর্ড করা হয়েছে মহারাষ্ট্রে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই বক্তব্যগুলোর মধ্যে অধিকাংশই মুসলমানদের বিরুদ্ধে এবং হিন্দু জাতীয়তাবাদী সংগঠনগুলোর নেতৃত্বে এসেছে। এসব সংগঠনগুলোর মধ্যে রয়েছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি), বজরং দল, হিন্দু রাষ্ট্র সেনা এবং অন্যান্য উগ্র হিন্দু গোষ্ঠী।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, এই গোষ্ঠীগুলো কাশ্মীর ট্র্যাজেডিকে এক ধরনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে, যাতে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা বাড়ানো যায় এবং সহিংসতা ও সামাজিক বর্জনের আহ্বান জানানো যায়। বিশেষ করে মুসলমানদের বিরুদ্ধে ঘৃণা ও ভয় দেখানো এবং তাদেরকে বিভিন্ন অমানবিক ভাষায় অপমানিত করা হচ্ছে।
ঘৃণামূলক বক্তব্যের ঘটনাগুলো বিভিন্ন রাজ্যে ঘটেছে, যার মধ্যে মহারাষ্ট্র সর্বাধিক ১৭টি ঘটনা রেকর্ড করেছে। এছাড়া, উত্তর প্রদেশে ১৩টি, উত্তরাখণ্ডে ৬টি, হরিয়ানায় ৬টি, রাজস্থানে ৫টি, মধ্য প্রদেশে ৫টি, হিমাচল প্রদেশে ৫টি, বিহারে ৪টি এবং ছত্তিশগড়ে ২টি ঘটনা ঘটেছে।
এই প্রতিবেদন অনুযায়ী, ঘৃণামূলক বক্তব্যের মধ্যে মুসলমানদের ‘সবুজ সাপ’, ‘পাগল কুকুর’ এবং ‘কিদে’ (পোকামাকড়) বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এসব বক্তব্য প্রায়ই সমাবেশে উত্থাপন করা হয়েছে, যেখানে বক্তারা মুসলমানদের ওপর সহিংসতার আহ্বান জানিয়েছেন এবং তাদের এলাকায় থেকে বহিষ্কারের হুমকি দিয়েছেন।
এছাড়া, সশস্ত্র হওয়ার আহ্বান জানিয়ে কিছু বক্তা বলেছিলেন যে, মুসলমানদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। হরিয়ানায় মুসলিম বিক্রেতাদের ওপর হামলা, কাশ্মীরি শাল বিক্রেতাদের ওপর আক্রমণ, উত্তরাখণ্ডে বিজেপি নেতার হুমকি এবং উত্তর প্রদেশে এক মুসলিম ব্যক্তির ওপর নৃশংস হামলার মতো ঘটনাগুলি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
গবেষকরা আরও জানান, এসব ঘৃণামূলক বক্তব্যের বেশিরভাগ ঘটনাই সামাজিক মাধ্যমের মাধ্যমে লাইভ-স্ট্রিম বা রেকর্ড করা হয়েছে, যা পরবর্তীতে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, ইউটিউব বা এক্সের মতো প্ল্যাটফর্মে আপলোড করা হয়। এর ফলে, এসব বক্তব্য লাখ লাখ মানুষের কাছে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছে এবং ঘৃণা ও সহিংসতার পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে।