পাকিস্তান এক উচ্চপর্যায়ের কূটনৈতিক প্রতিনিধিদল জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের (ইউএনএসসি) সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করে ভারতের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয়ার শান্তি ও স্থিতিশীলতার ওপর যেসব হুমকি সৃষ্টি হয়েছে, তা তুলে ধরেছে। নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদরদপ্তরে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে প্রতিনিধিদলে ছিলেন তিনজন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী, দুইজন সাবেক পররাষ্ট্র সচিব, দুইজন সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত ও একজন বর্তমান মন্ত্রী। পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে জানানো হয়, প্রতিনিধিদলটি ভারতের সাম্প্রতিক আগ্রাসী পদক্ষেপ, উসকানিমূলক বক্তব্য এবং ইন্দাস পানি চুক্তি একতরফাভাবে স্থগিত করার বিষয়টি বিস্তারিতভাবে ইউএনএসসি সদস্যদের সামনে উপস্থাপন করে।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো-জারদারি বৈঠকে বলেন, ভারতের শহর লক্ষ্য করে হামলা ও আন্তর্জাতিক পানি চুক্তি লঙ্ঘন এই অঞ্চলের শান্তির জন্য মারাত্মক হুমকি। তিনি ভারত সরকারের পাকিস্তানবিরোধী অভিযোগকে ভিত্তিহীন ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আখ্যা দেন। পাকিস্তান শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের পক্ষে অবস্থান নেওয়ার পাশাপাশি পুরোনো দ্বন্দ্ব ও বিরোধগুলোর শান্তিপূর্ণ সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহায়তা কামনা করে।
প্রতিনিধিদলটি চীনের জাতিসংঘ দূত ফু কংয়ের সঙ্গেও পৃথক বৈঠক করেছে। সেখানে বিলাওয়াল চীনের দীর্ঘস্থায়ী সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং কাশ্মীর ইস্যুতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবনা অনুসারে চীনের সক্রিয় ভূমিকার আহ্বান জানান। তার ভাষায়, “ভারতের একতরফা পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক আইন ও চুক্তি লঙ্ঘনের শামিল। এখনই সময় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করে।”
প্রতিনিধিদলটি জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস, সাধারণ পরিষদের সভাপতি এবং নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচটি স্থায়ী সদস্য রাষ্ট্রের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও বৈঠক করবে। একইসঙ্গে ওআইসি (ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থা) রাষ্ট্রদূতদের এক যৌথ অধিবেশনেও তাদের বক্তব্য তুলে ধরা হবে।
বিলাওয়াল ভুট্টো জোর দিয়ে বলেন, পাকিস্তান মর্যাদা, ন্যায়বিচার ও আন্তর্জাতিক নীতিমালার ভিত্তিতে শান্তি ও সংলাপের পক্ষপাতী। একই সঙ্গে সন্ত্রাসবাদ ও আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান ধরে রাখার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি। ভারতের আগ্রাসন ও একতরফা কার্যক্রমের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক জনমত গড়ে তুলতেই পাকিস্তানের এই কূটনৈতিক তৎপরতা পরিচালিত হচ্ছে।